সরগরম ইলিশঘাট
এস আই মুকুল, চরফ্যাশন (ভোলা)
🕐 ১২:১৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ০১, ২০১৮
ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শেষ হয়েছে। ২২ দিন পরে ভোলার বাজারে ইলিশ উঠতে শুরু করেছে। জেলেদের জালে ধরা পড়া ৬০ ভাগ মাছের পেটে এখন ডিম নেই। আর মাছের আকার গড়ে ৭০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের। জেলেদের মধ্যে কিছুটা হলেও এখন দেখা দিয়েছে খুশির আমেজ। সরগরম হয়ে উঠেছে মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার তীরবর্তী মাছের আড়তগুলো।
গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া নিষেধাজ্ঞা ২৮ অক্টোবর মধ্যরাতে শেষ হয়। এ ২২ দিনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা আমান্য করে নদীতে ইলিশ আহরণের দায়ে ভোলার সাত উপজেলার ৪১৮ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- ও ২৩০ জেলের কাছ থেকে ৬ লাখ ৯১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া তিন টন ইলিশ জব্দ করাসহ পাঁচ লাখ ৯১ হাজার মিটার জাল আটক করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
সামরাজ এলাকার জেলে রফিক বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার পরও নদীতে মাছ ধরা পড়ায় খুব ভালো লাগছে। সকালে তিন ঝুড়ি মাছ আড়তে বিক্রি করেছি।’
ঢালচরের জেলে কামাল জানান, অবরোধের কারণে এত দিন নদীতে মাছ ধরতে পারিনি। তাই আমরা অনেক হতাশার মধ্যে ছিলাম। অনেক ঋণ হয়েছে। আশা করি এবার মাছ বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারব।
মনপুরার তালতলা স্লুইসঘাটের আড়তদার ইউসুফ জানান, জেলেরা ২২ দিন অলস সময় কাটাত। এখন বসে থাকার সময় নেই। কারণ ইলিশ ধরা পড়ায় মৎস্যজীবীদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে।
নতুন বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন কাজী বলেন, সরকারের ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম জেলায় কঠোরভাবে পালন হওয়ায় সব ধরনের ইলিশ আমদানি বন্ধ ছিল। তাই দীর্ঘ বিরতির পর ইলিশ শিকার শুরু হওয়ায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। পাশাপাশি পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় তাদের লাভও ভালো হচ্ছে।
জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘টানা ২২ দিন বন্ধ থাকার পর জেলেরা এখন মাছ ধরায় ব্যস্ত। জালেও প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। ঘাটগুলোতে শত শত কেজি মাছ আসতে শুরু করেছে। আর অনেক দিন পর ইলিশের বাজার শুরু হওয়ায় পর্যাপ্ত চাহিদা রয়েছে।’
চরফ্যাশন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার বলেন, ‘জাটকা ধরা বন্ধ ও মৎস্য প্রজননের সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকলে ইলিশ আমাদের জাতীয় উন্নয়নে আরও ভূমিকা রাখবে।’
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আহসান হাসিব খান বলেন, ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। একে রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।
সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে এর উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি করা সম্ভব। এ বছর সবার প্রচেষ্টায় ইলিশ রক্ষা করা গেছে।’ ফলে আগামী দিনে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।