ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চাকরিতে বাধা ছিল ১৫ লাখ টাকা

মো. সাইদুর রহমান, দুমকি (পটুয়াখালী)
🕐 ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৩, ২০২১

চাকরিতে বাধা ছিল ১৫ লাখ টাকা

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) উপাচার্যসহ সাতজনকে আইনি নোটিস দেওয়া হয়েছে। নোটিসে সদ্যবিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদের মেয়াদকালে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন পদে লোকবল নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। গত ৩০ মে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন আইনি নোটিসটি দিয়েছেন। এতে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ১৫ জুন সকাল ১০টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে জানাতে বলা হয়েছে। না হলে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করা হবে।

নোটিসপ্রাপ্তরা হলেন- শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ, পবিপ্রবির উপাচার্য স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত, রেজিস্ট্রার মো. কামরুল ইসলাম ও পবিপ্রবির কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মনিরুজ্জামান, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহীন হোসেন এবং কৃষিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নওরোজ জাহান লিপি।

এদের মধ্যে অধ্যাপক মনিরুজ্জামান ও নওরোজ জাহান লিপি সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী এবং লিপি অভিযুক্ত উপাচার্য হারুন-অর-রশীদের কথিত মেয়ে। অধ্যাপক মনিরুজ্জামানের ছোট ভাই এবং নওরোজ জাহান লিপির দেবর মো. কামরুজ্জামান এবং শাহীন হোসেনের বড় বোন নাজমুন নাহারকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নিয়োগ দুটি বাতিলের দাবি করা হয় নোটিসে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পবিপ্রবির একাধিক সূত্রে জানা যায়, অর্থের বিনিময়ে ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অনুষদের তিনটি বিভাগে নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনজনকেই তিনটি বিভাগে ঘুরেফিরে অংশগ্রহণকারী দেখানো হয়েছে।

পবিপ্রবির উপাচার্য স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত লিগ্যাল নোটিস পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা আইন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।’

লিগ্যাল নোটিসে আরও বলা হয়, পবিপ্রবির ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রভাষক পদে চাকরিপ্রার্থী ছিলেন কুষ্টিয়ার দেবাশীষ মণ্ডল। বাছাই পরীক্ষায় তিনি সেরা হওয়ার পরও অধ্যাপক মনিরুজ্জামান ও নওরোজ জাহান লিপি এবং শাহীন হোসেন দেবাশীষের কাছে ১০ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন। সাক্ষাৎকার বোর্ড অনুষ্ঠানের আগ মুহূর্তে তার কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। বাড়তি পাঁচ লাখ টাকাসহ মোট ১৫ লাখ টাকা সংগ্রহ করতে না পারায় ওই চক্রটি রফিক উদ্দিন নামে আরেকজন নতুন প্রার্থীর কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে তাকে ওই পদে চাকরি দেন। মৌখিক পরীক্ষা শেষে দেবাশীষ জানতে পারেন তিনি অকৃতকার্য হয়েছেন। ২০১৮ সালের ১৪ মে কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়িতে ফিরে আত্মহত্যা করেন দেবাশীষ।

অধ্যাপক মনিরুজ্জামান ও নওরোজ জাহান লিপি এবং শাহীন হোসেন দণ্ডবিধি ৩০৬ ধারায় অপরাধ করেছেন বলে নোটিসে দাবি করা হয়। নোটিসে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন নিয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়মকানুন অনুসরণ করা হয় কিনা তা পর্যবেক্ষণ করেছে কিনা।

উল্লেখ্য, দেবাশীষ মণ্ডলের সিজিপিএ ছিল ৩.৮২। আর নিয়োগপ্রাপ্ত রফিক উদ্দিনের সিজিপিএ ৩.৬৪, যা দেবাশীষের চেয়ে কম।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত অধ্যাপক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আইনি নোটিস দেখেছি। আমি কোনো নিয়োগ বোর্ডের সঙ্গেই জড়িত নই। কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’

 
Electronic Paper