ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মেডিকেলে চান্স পেলেও টাকার অভাবে পড়াশোনা অনিশ্চিত বকরের

মনসুর আলম খোকন, সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি
🕐 ৬:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৪, ২০২১

মেডিকেলে চান্স পেলেও টাকার অভাবে পড়াশোনা অনিশ্চিত বকরের

টাকার অভাবে পাবনার সাঁথিয়ার আবু বকরের মেডিকেল কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সে এ বছর পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে। আবু বকর উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের হতদরিদ্র আবু সাইদের ছেলে। আবু সাইদ পেশায় একজন কাঠুরে। কাঠের খড়ি বিক্রি করে তিনি কোনোমতে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার তিন ছেলে। বড় ছেলে ওমর আলী সাঁথিয়া সরকারি কলেজে স্নাতক ফাইনাল পরীক্ষার্থী। দ্বিতীয় ছেলে আবু বকর ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস-এ ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তৃতীয় ছেলে আব্দুল্লাহ স্থানীয় নাড়িয়াগদাই হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। চরম দারিদ্রতা ও টানাটানির সংসার হওয়া সত্ত্বেও নিজে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ছেলেদের পড়াশোনা চলমান রেখেছেন আবু সাইদ।

কাজ করতে গিয়ে সম্প্রতি তার বামহাত আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে আগের মতো আর দু’হাতে কাজ করতে পারছেন না। কোনো জমিজমা নেই। মাত্র তিন শতক জায়গার ওপর ১০ হাতের একটি ছাপড়া ঘরে পরিবারের পাঁচ সদস্যের বসবাস।

গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (অব.) প্রধান শিক্ষক আ. লতিফ বলেন, ছোটবেলা থেকে আবু বকর খুবই ভদ্র, বিনয়ী ও মেধাবী ছাত্র। পিইসি ও জেএসসিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

আবু বকর জানায়, আর্থিক দীনতার কারণে প্রাইভেট পড়িয়ে তাকে লেখাপড়ার খরচ চালাতে হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই মনের মধ্যে একটা স্বপ্ন লুকিয়ে ছিল ডাক্তার হবার। এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার পর স্বপ্নটা আরও বেগবান হয়। এইচএসসি ভর্তি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় ঢাকার কয়েকটি কলেজে চয়েস দেই। এতে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে ভর্তির সুযোগ পাই। কলেজে আমি শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের কাছ থেকে অনেক উৎসাহ ও সহযোগিতা পেয়েছি।

আবু বকরের বাবা জানান, ছেলে ডাক্তারি পড়ার চান্স পাওয়ায় খুবই খুশি হয়েছি। এদিকে ছেলের ডাক্তারি পড়ার খরচ চালনো তার পক্ষে সম্ভব নয় ভেবে বড়ই দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা বা সহৃদয় বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন এই হতদরিদ্র বাবা।

আবু বকরের মা হাফেজা খাতুন ভাঙা বেড়ার আধো আড়ালে দাঁড়িয়ে আবেগতাড়িত গলায় বলেন, “সাংবাদিক বাবারা, খবরের কাগজে বড় বড় অক্ষরে আমার অভাবের সংসারের কথা লেইহেন। আমি ছাওয়ালডাক দাকতার বানাব্যের চাই। এই কতাডা যিনি শেকের বিটি মা জননী শেখ হাসিনা দেকপ্যার পারে।”। তার বিশ্বাস খবরটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে এলেই তার সন্তানের লেখাপড়ার জন্য আর চিন্তা করতে হবে না।

 
Electronic Paper