ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ক্ষতির মুখে পালপাড়ার মৃৎশিল্প

সুনান বিন মাহাবুব, পটুয়াখালী
🕐 ১:১৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১১, ২০২১

ক্ষতির মুখে পালপাড়ার মৃৎশিল্প

ঐতিহ্যকে ধারণ করে পৈত্রিক পেশাকে টিকিয়ে রেখেছেন পটুয়াখালী জেলার মৃৎশিল্পী পরিবার। এ জেলায় মৃৎশিল্পের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত পাল ও কুমার বংশের লোকেরা। বংশ পরম্পরায় তারা এই পেশায় এসেছে। বছরের ফাল্গুন, চৈত্র, বৈশাখ, জৈষ্ঠ এই চার মাস তারা মৃৎশিল্পের কাজ করে পুরোদমে। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মদনপুরা বিলবিলাস, কনকদিয়া, বগা ও রাজনাগর এলাকায় শতাধিক পরিবার এবং পটুয়াখালী সদর উপজেলার কিছু বাসিন্দা এই পেশার সাথে জড়িত।

প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ মৃৎশিল্পীদের পালপাড়ায় আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। বিভিন্ন রকম বাহারি তৈজসপত্র তৈরি হতে থাকে পালপাড়ায়। কিন্তু এবার তা হচ্ছে না। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমন রোধে সরকারের নির্দেশনায় বাংলা নববর্ষের সকল অনুষ্ঠানে জনসমাগম বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ফলে সবার মনে পহেলা বৈশাখের গান গুঞ্জরিত হলেও পালপাড়ার চিত্র ভিন্ন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পহেলা বৈশাখের বাজারে বিক্রির জন্য মৃৎশিল্পের পসরা সাজিয়ে সময় পার করছেন পটুয়াখালীর মৃৎশিল্পীরা। কিন্তু এই মৃৎশিল্প বাজারে বিক্রি করা নিয়ে সংশয় তাদের মনে। পটুয়াখালী নিউমার্কেট এবং বাউফল উপজেলার পালপাড়ায় প্রতিবছর পহেলা বৈশাখের সময় কারিগরদের দম ফেলার সময় হতো না। এবার তাদের হাতে কোন কাজ নেই, বিক্রি হচ্ছে না মৃৎশিল্প। খুচরা এবং পাইকারী ক্রেতাদের কাছেও তৈজসপত্র বিক্রি করতে পারছে না লকডাউনে সকল দোকান বন্ধ তাই।

বাউফল উপজেলার পালপাড়া এলাকায় দেখা যায় মৃৎশিল্পীরা মাটির সরা, হাঁড়ি, মাটির কলসি, ছোট খেলনা, ফুলদানি, সানকি ইত্যাদি তৈরি করেছেন। তৈরি এসকল মৃৎশিল্প বিক্রি করা হয় পাইকারী অথবা পাশ্ববর্তী দোকানে। সারা বছর এসকল মৃৎশিল্পীদের তৈরি পণ্যের ব্যবসা কম হয়। ব্যবসা হয় পহেলা বৈশাখের দিন এবং পটুয়াখালীর বৈশাখী মেলায়। কিন্তু করোনার কারণে এই বছর পহেলা বৈশাখ উদযাপনে নিষেধাজ্ঞা জারিতে চিন্তিত হয়ে পরেছেন তারা।

পটুয়াখালী সদর উপজেলার কয়েকজন মৃৎশিল্পী জানান, পহেলা বৈশাখে বিক্রির জন্য মাটির তৈজসপত্র তৈরি করা হচ্ছে গত দুই মাস আগে থেকেই। তবে যে সময়টায় এই ব্যস্ততায় দিন কাটে তাদের ঠিক তখনই করোনা মহামারি সবকিছু পাল্টে দিয়েছে। বৈশাখী মেলাও কোথাও হবে না এবার। ফলে আর্থিকভাবে বড় ধরনের ক্ষতিতে পড়েছেন তারা।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, বাউফল উপজেলার পালপাড়া এবং পটুয়াখালী সদর উপজেলার মৃৎশিল্পীদের আর্থিক ক্ষতি পোষাতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৈশাখী মেলা না হওয়ায় ব্যবসা কিছুটা কম হবে তাদের। তবে এসকল মৃৎশিল্পীদের সহযোগীতা করা হবে বলে জানান তারা।

 

 
Electronic Paper