স্লুইস গেট গলার কাঁটা
ইউসুফ আলী সেন্টু, বাউফল (পটুয়াখালী)
🕐 ৩:৪৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮
পটুয়াখালী বাউফলে ১৪টি ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাস ও জলাবদ্ধতা নিরসনে ১ লাখ ৫৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল ও জানমাল রক্ষায় উপজেলার ছয়টি খরাস্রোতে খালের মুখে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পটুয়াখালী জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত স্লুইচ গেটগুলো এখন অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। অপরিকল্পিত হওয়ায় শৌলা স্লুইচগেটটি বন্ধ রয়েছে। অথচ জলাবদ্ধতা নিরসনের নামে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে এসব স্লুইচগেট এখন কৃষকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা যায়, বাউফল উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ১ লাখ ৫৫ হাজার হেক্টর জমির আমন,আউশ ও রবিফসল ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করতে নওমালার মৈশাদী খাল, বগা ইউনিয়নের বখা নওমালা খালের মুখ, হাজিরহাট খালের মুখ, ছোনখোলা খালের মুখ , শৈলা খালের মুখ এবং কাশিপুর খালের মুখ ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস এবং জোয়ারের পানি নিরসনকল্পে ১৯৯০ সালে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ড এ স্লুইচগেটগুলো নির্মাণ করেন। এসব স্লুইচগেট অপারেট করার জন্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন চাবি অপারেটর থাকার কথা অথচ ওই চাবি এলাকার মাতব্বরের কাছে থাকে। এদিকে, বগা ইউনিয়নের বঘা খালের স্লুইচগেটটির চাবি এলাকার মাতব্বদের উৎকোচ দিয়ে কৃষকদের জরুরি অবস্থায় উঠানামা করাতে হচ্ছে বলে কৃষক আব্দুল মিয়াসহ একাধিক কৃষকের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালী জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এ স্লুইট গেটগুলোর বেহাল অবস্থায় হয়েছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে কৃষকের আউশ, আমন ও রবি ফসল। আশানুরূপ ফসল ফলাতে না পারায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপজেলার হাজার হাজার কৃষক।
উপজেলার নওমালা, আদাবাড়িয়া, বগা ও দাসপাড়া এ চারটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওলাদার, শাহজাদা হাওলাদার, সামসুল হক ফকির, এএনএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ১৫-২০বছর আগে পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ড ফসলি জমি থেকে পানি অপসারণের জন্য স্লুইচগেটগুলো নির্মাণ করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষের তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এ স্লুইচগেটগুলোর আস্তরণ উঠে পাথর ও খোয়া বের হয়ে গেছে। কপাটগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পানি উঠা-নামা করতে না পারায় পলি পড়ে ভরাট হয়ে গছে খরাস্রোতে খালগুলো। বগা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, তার ইউনিয়নের স্লইচগেটটি দিয়ে পানি অপসারণ হচ্ছে না। এ কারণে খালের দুইটি মুখ পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান বলেন, জনবল না থাকায় স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের হাতে স্লুইচগেটেরে চাবি দেওয়া হয়। তারা পানি যথাসময়ে ব্যবহার করবে তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্লুইচগেটের ভগ্নদশার চিত্র তুলে ধরে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।