নাব্য পেল মোংলা বন্দর
আবুল হাসান, মোংলা
🕐 ৯:১১ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০২০
নাব্য ফিরে পেল মোংলা বন্দর ও আশপাশের নৌ-পথ। আউটাবারে (বহিঃনোঙ্গর) ড্রেজিং কাজ শেষ হওয়ায় নতুন চ্যানেল দিয়ে বড় জাহাজ চলাচল করছে। প্রথমবারের মতো বন্দরে আসতে শুরু করেছে নয় দশমিক পাঁচ থেকে ১০ মিটার গভীর পণ্যবাহী জাহাজও। এতে জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি রাজস্ব আয় বাড়বে বলে আশা করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ড্রেজিংয়ের জন্য ৭১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হলেও মেয়াদের আগেই ৭০০ কোটি টাকার মধ্যে এই কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, ভৌগোলিক কারণে সম্ভাবনাময় হলেও গভীরতা কম থাকায় মোংলা বন্দরের জেটিতে বড় জাহাজ ভিড়তে পারত না। ১০ মিটারের গভীর জাহাজগুলো হ্যান্ডলিংয়ের জন্য গভীর সাগরে নোঙ্গর করত। এতে সম্ভাবনাময় এ বন্দরটি গুরুত্ব হারাচ্ছিল। তাই বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে ২০১৭ সালে আউটবার (বহিঃনোঙ্গর) খননের কাজের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী একাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় হংকং রিভার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন করপোরেশনকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান খোলা কাগজকে জানান, ড্রেজিংয়ের জন্য ৭১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হলেও ৭০০ কোটি টাকার মধ্যে এই কাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া বিশাল এই কর্মযজ্ঞ আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও মেয়াদের আগেই ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এই কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। সম্প্রতি শেষ হয়েছে পোস্ট ড্রেজিং সার্ভেও। এতে বন্দর কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট বলেও জানান চেয়ারম্যান।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সিভিল ও হাইড্রোলিক বিভাগের সহকারী প্রধান প্রকৌশলী মো. বজলুর রহমান বলেন, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবরে খনন শুরু করে এই দুটি প্রতিষ্ঠান। সমুদ্র খননের এ কাজে ব্যবহার করা হয় চীনের তৈরি বিশে^র অন্যতম কাটার সাকশান ড্রেজার। যা দিয়ে একসঙ্গে ৪০ ইঞ্চি মাটি খনন করা সম্ভব। এছাড়া মাঝারি আকারের আরও দুটি হোপার ড্রেজার ব্যবহার করা হয়। তিনি আরও জানান, কাজের সুবিধার জন্য খনন এলাকাকে দুটি ভাগে ভাগ করে গভীর সাগর ও দুবলার চরের দক্ষিণে কম গভীর এলাকায় ড্রেজিংয়ের মাটি ফেলা হয়।
চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন করপোরেশনের প্রকল্প ম্যানেজার লি গুয়াংচি জানান, সমুদ্রের মাঝে ড্রেজিং করা খুবই চ্যালেজিং ছিল। কিন্তু আমাদের কর্মদক্ষতা, উন্নতমানের যন্ত্রাংশ এবং মোংলাবন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় আমরা কাজটি সম্পন্ন করতে পেরেছি। দুই বছরের কম সময় ১১ কিলোমিটার এলাকার ১১৯ দশমিক ১১ লাখ ঘনমিটার মাটি খনন করা হয় বলেও জানান লি গুয়াংচি।