ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভোলায় জোয়ারের চাপে বাঁধে ভাঙন, দুর্ভোগ

ছোটন সাহা, ভোলা
🕐 ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২০

বাঁধ ভাঙার পর গত চার দিন ধরে পানিতে ভাসছি, ঠিকমত রান্নাও হচ্ছে না, খেতেও পারছি না। আমাদের ত্রাণের দরকার নেই। টেকসই বাঁধ হলেই হবে। তাহলে আমরা এলাকায় বসবাস করতে পারবো।

এ কথা গুলোই বলছিলেন ইলিশা ইউনিয়নের মুরাদসফিল্লা গ্রামের গৃহবধূ তাসনুর বেগম। তিনি বলেন, পরিবারের ৫ সদস্য নিয়ে পানির মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। জোয়ার বেশি হলে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে হয়।

পানিবন্দি রোকেয়া ও মনোয়ারা বলেন, ঘরে রান্না নেই, জোয়ারের পানিতে সব নিয়া গেছে। পরিবার-পরিজন নিয়া কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। একটা বেড়ি বাঁধ হলে আমাদের এভাবে কষ্টে থাকতে হবে না। বন্যাদুর্গত এলাকার তাসনুর, মনোয়ারা ও রোকেয়া বেগমের মত অনেকের দাবি টেকসই বাঁধ নির্মাণের।

তারা বলেন, বাঁধ নির্মাণ হলেই জোয়ারের পানির হাত থেকে রক্ষা পাবে মুরাসসফিউল্লা, রামদাসপুর কান্দি, সোনাডগি, পূর্ব চর ইলিশা ও সাজিকান্দি গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষ।

চারদিনেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ভোলার বন্যাদুর্গতরা। পানিবন্দি হয়ে কষ্টে দিন কাটছে তাদের। কিছুতেই দুর্ভোগ কাটছে না তাদের।

ভাঙা বাঁধ মেরামত কাজ শেষ না হওয়ায় প্রতিদিনই পানিতে ভাসছে তাদের ঘরবাড়ি। অনেকে ঘর-ভিটা ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু স্থানে। 

বেশিরভাগ মানুষের ঘরে চুলো জ্বলছে না। এদিকে বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

ইলিশা ইউনিয়নের বন্যাদুর্গত এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বাঁধ ভাঙা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট। জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা। পানিবন্দি হয়ে এভাবেই দুর্ভোগে দিন কাটছে ভোলা সদরের ইলিশা ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের মানুষের। পানির মধ্যেই কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা।

জোয়ারের চাপে ভেঙে যাওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি মেরামত না হওয়ায় ৪ দিন ধরে এমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বন্যাদুর্গত মানুষ।

বেশিরভাগ মানুষের ঘরে চুলো জ্বলছে না, পরিবার-পরিজন নিয়ে পানিতেই বসবাস তাদের। তবে দুর্গতদের জন্য ত্রাণ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

ভোলা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, হঠাৎ করেই বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ইলিশা ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি। আমরা ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ২০ টন চাল ও ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দি মানুষের এসব ত্রাণ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ মেরামতের কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু জোয়ারের পানি বার বার আসা যাওয়ার কারণে কাজ কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে। তবে আমরা আশা করছি আগামী ২/১ দিনের মধ্যে বাঁধ মেরামতের কাজ শেষ হবে।

এদিকে টেকসই বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে নদীর তীরবর্তী মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের দাবি স্থানীয় এলাকাবাসীর।

 
Electronic Paper