ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নদীভাঙনে বদলাচ্ছে গলাচিপার মানচিত্র

গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
🕐 ৯:৪৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০১৮

বঙ্গোপসাগর ঘেঁষা পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলা। একটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে উপজেলাটি গঠিত। লোহালিয়া, রামনাবাদ, আগুনমুখা, বুড়াগৌরাঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদীবেষ্টিত এ উপজেলা।

পৌরসভা ছাড়া সবকটি ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী শত শত গ্রামের হাজার হাজার পরিবার লোহালিয়া, রামনাবাদ, আগুনমুখা, বুড়াগৌরাঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদীর অব্যাহত ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে হাজার হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি, আবাদি জমি, গাছপালা, রাস্তাঘাট, দোকানপাট, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ ও মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
ভাঙন আতঙ্কে অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে। গৃহহারা পরিবারের লোকজন তাদের সহায়-সম্বল হারিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অধিকাংশ মানুষ জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকায়। ভয়ঙ্কররূপী নদীগুলোর ভাঙনে দেশের মানচিত্র থেকে হারাতে বসেছে গলাচিপা উপজেলা।
সরেজমিন দেখা গেছে, লোহালিয়া নদীর ভাঙনের কবলে পড়ছে উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের উত্তরে কলাগাছিয়া লঞ্চঘাট থেকে দক্ষিণে সোনামুদ্দি সিকদার বাড়ি পর্যন্ত তিন কিলোমিটার; আমখোলা ইউনিয়নের উত্তরে শ্যাকাঠীর খাল থেকে দক্ষিণে চিংগুরিয়া পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার এবং উত্তরে আমখোলা বাজার থেকে দক্ষিণে সূহরী বাজার পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার। রামনাবাদ নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের উত্তরে গজালিয়া পুরাতন লঞ্চঘাট থেকে দক্ষিণে গজালিয়ার খাল পর্যন্ত এক কিলোমিটার; ডাকুয়া ইউনিয়নের উত্তরে গজালিয়ার খাল থেকে হোগলবুনিয়া, আটখালী ও ডাকুয়া গ্রামসহ দক্ষিণে ফুলখালী স্লুইসগেট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার; গোলখালী ইউনিয়নের পূর্বে চরহরিদেবপুর থেকে পশ্চিমে হরিদেবপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার, উত্তরে গোলখালীর খেয়াঘাট থেকে দক্ষিণে নলুয়াবাগীর খাল পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার এবং উত্তরে নলুয়াবাগী নসুখাঁর বাড়ি থেকে দক্ষিণে জব্বার সিকদার বাড়ি পর্যন্ত দুই কিলোমিটার; গলাচিপা সদর ইউনিয়নের উত্তরে চরখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে দক্ষিণে আগুনমুখা নদীর মোহনা পর্যন্ত চার কিলোমিটার।
আগুনমুখা নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে গলাচিপা সদর ইউনিয়নের পশ্চিমে রামনাবাদ নদীর মোহনা থেকে পূর্বে বোয়ালিয়া স্লুইসগেট পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার; পানপট্টি ইউনিয়নের পশ্চিমে বোয়ালিয়া স্লুইসগেট থেকে পূর্বে পানপট্টি লঞ্চঘাট পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার। বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের দক্ষিণে পানপট্টি লঞ্চঘাট তেকে উত্তরে সন্নিরবান হয়ে যোগীর হাওলা ট্রলারঘাট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার; রতনদী তালতলী ইউনিয়নের দক্ষিণে যোগীর হাওলা ট্রলারঘাট থেকে বদনাতলী খেয়াঘাট হয়ে উত্তরে উলানিয়া বাজারের স্লুইসগেট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার; ডাকুয়া ইউনিয়নের দক্ষিণে উলানিয়া বাজারের স্লুইসগেট থেকে উত্তরে গজালিয়ার খাল পর্যন্ত এক কিলোমিটার; চিকনিকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণে গজালিয়ার খাল থেকে উত্তরে দয়াময়ী কালীমন্দির পর্যন্ত তিন কিলোমিটার; বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণে রনুয়ার বাজার থেকে উত্তরে পশ্চিম আলীপুরা বাজার পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার; চরকাজল ইউনিয়নের উত্তরে চরশিবা লঞ্চঘাট থেকে দক্ষিণে দক্ষিণ চরকাজলের জিনতলা বাজার পর্যন্ত সাত কিলোমিটার; চরবিশ্বাস ইউনিয়নের দক্ষিণে আমগাছিয়া লঞ্চঘাট থেকে উত্তরে আশ্রায়ণ প্রকল্প পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার।
তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙণের কবলে পড়েছে উপজেলা চরবিশ্বাস ইউনিয়নের দক্ষিণে ঘাসির চরের বনাঞ্চল থেকে উত্তরে পূর্ব চরবিশ্বাসের বেড়িবাঁধ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এবং দক্ষিণে চরবাংলা খেয়াঘাট থেকে উত্তরে উত্তরবাংলা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার। এ বিষয়ে পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানান, নদীগুলোর ভাঙন প্রতিরোধে বিপিসি (ব্লক) তৈরি করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সমস্ত এলাকার ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 
Electronic Paper