বরিশালে কমছে সংক্রমণ, নগরীর অবস্থা বিপরীত
হেলাল উদ্দিন, বরিশাল
🕐 ৯:২৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৭, ২০২০
বরিশাল জেলায় কমতে শুরু করেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এ মাসের শুরুর দিকে জেলায় যে হারে সংক্রমণ শুরু হয়েছিল তাতে বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল জেলার বাসিন্দাসহ চিকিৎসকরাও। কিন্তু শেষ এক সপ্তাহে পাল্টাতে শুরু করে চিত্রপট। সপ্তাহের ব্যবধানে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসে ৫৯ জনে। ২০ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত জেলায় করোনা সংক্রমিত হয় ২০৩ জন। অপরদিকে ১৩ থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয় ২৬২ জন।
এ বিষয়ে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন বলেন, আসলে অল্প দিনের পরিসংখ্যানে কম বেশি মূল্যায়ন করা সমীচিত নয়। তারপরও দুই সপ্তাহের একটি পরিসংখ্যান আমলে নেওয়ার মতো। এটা অবশ্যই ইতিবাচক ও আশার সঞ্চার করে। আশা করি এ ধারা অব্যাহত থাকবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকে মনে করতে পারেন নমুনা কম পরীক্ষা হচ্ছে বলে আক্রান্তের সংখ্যা কম হচ্ছে। এ ধরনের ধারণা মোটেও সঠিক নয়। উপরন্তু আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত জেলায় মোট ১৩৩৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের মধ্য থেকে ২৫৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আর জেলায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
তবে বিপরীত চিত্র বরিশাল মহানগরী এলাকায়। ২০ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত জেলায় ২০৩ জন আক্রান্ত হলেও এর মধ্যে ১৪২ জনই নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সে হিসাবে এক সপ্তাহের মোট আক্রান্তের প্রায় ৭০ ভাগই সিটি এলাকার বাসিন্দা। বাকি ৩০ ভাগ জেলার ১০টি উপজেলার।
এছাড়া ১৩ থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত জেলায় ২৬২ জন আক্রান্ত হলেও এর মধ্যে ২১৭ জনই নগরীর বাসিন্দা। যা ওই সপ্তাহে মোট আক্রান্তের মধ্যে ৮২ ভাগই রয়েছেন সিটি এলাকার। নগরীতে আক্রান্তের এমন তীব্রতার পর ও রেড জোন ঘোষিত ২৭টি ওয়ার্ড লকডাউন করতে সক্ষম হয়নি সিটি মেয়রসহ প্রশাসনের দায়িত্বরতরা।
দুদিন আগে মাইকিং করে পরীক্ষা মূলকভাবে নগরীর ২টি ওয়ার্ড লকডাউনের ঘোষণা দিলেও রাতেই আবার তা স্থগিত ঘোষণা করে বিসিসি কর্তৃপক্ষ। কারণ হিসাবে তারা বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় রেড জোন ঘোষিত এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেনি। তাই তার আগে লকডাউন করার কোনো সুযোগ নেই বলেই ক্ষ্যান্ত রয়েছেন তারা।
লকডাউন প্রশ্নে সিটি এলাকায় সম্পূর্ণ দায়িত্ব বর্তায় করপোরেশনের ওপর। প্রশাসন তাদের সহযোগিতা করবে মাত্র। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই নমুনা সংগ্রহ বন্ধ করে দেয় করপোরেশন। চারজনের ৩ জন টেকনোলজিস্ট করোনা আক্রান্ত হওয়ায় বন্ধ করতে হয় তাদের নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম। কিস্তু আক্রান্ত ওই ৩ জনের কোয়ারিন্টাইন মেয়াদ শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে দুজনের রিপোর্ট নেগিটিভও এসেছে। কিন্তু তারপরও নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করেননি তারা।
করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মতিউর রহমান বলেন, যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা এখন করোনামুক্ত হলেও ভয়ে আর কাজ করতে চাচ্ছে না। যেহেতু তারা চুক্তি ভিত্তিক ছিল তাই তাদের উপর জোর খাটানোও যায় না। তাই বিকল্প চিন্তা করছি। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি নমুনা সংগ্রহ কাজ শুরু করতে পারব। এছাড়া বর্তমানে কিটের সংকট রয়েছে বলেও জানান তিনি।