ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

সোলায়মান পিন্টু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
🕐 ৩:৫৮ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২০

সূর্যমুখী ফুলের চাষ রবিশষ্যের চাষাবাদে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আর এই শষ্য চাষে কৃষকদের আগ্রহী করতে সরকারি রাজস্ব খাত থেকে কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রনোদনা দিচ্ছে। প্রনোদনা দেওয়ায় এবং স্বচ্ছলতা অর্জনের জন্য সূর্যমুখী চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কৃষকদের। তাছাড়া উপকূলীয় এ অঞ্চলের মাটির গুনাগুন, অবহাওয়া ও জলবায়ু সূর্যমুখী চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় ফি বছরের চেয়ে ফলন ভালো হওয়ার আশা করছে কৃষি অফিস। আর লাভজনক হওয়ায় কৃষকের কাছে এখন এটি জনপ্রিয় শষ্য হয়ে উঠছে।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সূর্যমুখী স্থানীয় ভাবে উচ্চ মূল্যের ফসল হিসেবে পরিচিত। ভোজ্য তেলের মধ্যে সূর্যমুখী শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তাই সূর্যমুখীর চাষ কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করতে সরকার কৃষককে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করছে। সাধারণত জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারির শুরুতে সূর্যমুখীর চাষ হয়ে থাকে। মার্চ এপ্রিলের মধ্যে ফসল কাটার উপযোগী হয়। উৎপাদিত ফসল ন্যায্যমূল্যে কৃষকের কাছ থেকে ক্রয়ের জন্য কৃষি বিপনন অধিদফতর সহায়তা দিচ্ছে।

কৃষি অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, এবছর উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমি সূর্যমুখী চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। কিন্তু চাষ হয়েছে প্রায় ৮০ হেক্টর। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কম বেশী সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। এরমধ্যে নীলগঞ্জ, টিয়াখালী, লতাচাপলি ও কুয়াকাটায় সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে। উপজেলায় এবছর অন্তত: প্রায় ৩০০ কৃষক সূর্যমুখীর চাষাবাদ করেছে। এটির চাষাবাদে পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি প্রস্তুত, বীজ রোপন, সার প্রয়োগ, আন্ত:পরিচর্যা, সেচ ও বালাইনাশক প্রয়োগে হেক্টর প্রতি খরচ পড়ে ৩৫ হাজার টাকা। এতে হেক্টর প্রতি ৪১ মণ ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ১লাখ ১২ হাজার টাকা।

নীলগঞ্জ ইউনিয়নের চাষি গোলাম সরোয়ার বলেন, এবছর এক বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। জমি প্রস্তুত করতে খরচ হয়েছে ১৫০০ টাকা। সেচ খরচ ৬০০ টাকা। আগাছা নিধন, নিরানী ও বেড তৈরী করতে খরচ হয়েছে ২৪০০ টাকা। বালাইনাশক প্রয়োগ করতে ২০০ টাকাসহ মোট চার হাজার ৭০০ টাকা খরচ হয়েছিল। ৩-৪ দিন আগে ফসল কেটেছি। স্থানীয় বাজারে প্রতিমন সূর্যমুখী’র দানা বিক্রী হয় ২৭০০ টাকা। আমি যে পরিমান ফসল পেয়েছি তাতে ভালই লাভ হবে। তবে এর পেছনে কৃষি বিভাগের অবদান রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, সূর্যমুখী একটি উচ্চমূল্যের তেল ফসল। এটি ভোজ্য তেল হিসেবে শরীরের জন্য খুব উপকারী। এ অঞ্চলের মাটির মাঝারি ধরনের লবনাক্ততা, আবহাওয়া ও জলবায়ু সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য উপযোগী। তাই কৃষককে সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী করার জন্য সরকার প্রনোদনা দিচ্ছে। এবছর অন্তত: ৩০০ কৃষক সূর্যমুখীর চাষাবাদ করেছে। আর কৃষকের উৎপাদিত এসব ফসল মাঠ পর্যায় থেকে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারে সেজন্য কৃষি অধিদফতর বিভিন্ন তেল কোম্পানীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

 

 
Electronic Paper