ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি কমলা দীঘি

ইউসুফ আলম সেন্টু, বাউফল (পটুয়াখালী)
🕐 ১২:১৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২০

বাউফল উপজেলার ঐতিহাসিক পুরার্কীতিগুলো প্রায় ধ্বংসের পথে। এখানকার উল্লেখযোগ্য কীর্তি হচ্ছে, চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের রাজধানী কচুয়া, কমলারানীর দীঘি, ঘষেটি বিবির মসজিদ, তমিরুদ্দিন আউলিয়ার মাজার, কালিশুরীতে সৈয়দ আরেফিনের মাজার ও আদিযুগের মেলা, মদনপুররা গ্রামের ঢোল সমুদ্র দীঘি, কাছিপাড়া কানাই বলাই পুকুর, বগাতে ভারতবর্ষের সুপ্রাচীন চাউলের গোলা এবং বিলবিলাসে শেরে বাংলার পূর্বপুরুষের মাজার।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এই সকল কীর্তি যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কার এবং সংরক্ষণের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মহলের উদ্যোগ নেই। এমনকি নাম ফলকও দেওয়া হয়নি।

ইতোমধ্যে কোন কোন স্থানে এবং স্থাপত্য নির্দশনের অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার অভিপ্রায়। দু’চারটি যা আছে তা আবার বিলুপ্ত হওয়ার উপক্রম।

বৃহত্তর বরিশাল, ফরিদপুর ও খুলনা জেলার অংশবিশেষ নিয়ে ছিল চন্দ্রদ্বীপ রাজ্য। চতুর্দশ শতকে চন্দ্রদ্বীপ ছিল বাকলা নামে পরিচিত। আর বাকলার রাজধানী বাউফলের কালাইয়া বন্দরের অদূরে কচুয়া নামক স্থানে ছিল। কালের বিবর্তনে ও তেঁতুলিয়ার করাল গ্রাসে রাজধানী কচুয়ার কোন চিহ্ন নেই।

জানা যায়, বাকলার রাজধানী থেকে দনুজমর্দনদেব, তার পুত্র রমা বলব, তৎপুত্র কৃষ্ণ বলবের পর পর্যায়ক্রমে হরি বলব, জয়দেব এবং তার কন্যা কমলা রানী এরা ৪০০ বছর চন্দ্রদ্বীপ রাজ্য শাসন করে গেছেন। রাজা জয়দেবের মৃত্যুর পর কন্যা কমলা রানী ১৪৯০ সালে সিংহাসনে বসেন। ওই সময় গৌরের সুলতান ছিলেন আলাউদ্দিন হোসেন শাহ।

কথিত আছে, ৪০০ বছর যারা চন্দ্রদ্বীপ রাজ্য শাসন করেছেন তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন কমলা রানী। শুধু তাই নয় রাজকুমারী কমলাই ছিলেন প্রথম ও শেষ মহিলা যিনি রাজ্য শাসন করে চন্দ্রদ্বীপ তথা মধ্য যুগের বাংলার ইতিহাসে নারী সমাজের ক্ষমতায়নে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন। নারী হয়ে ওই যুগে রাজ্য শাসন করা ছিল অকল্পনীয়। কমলা নেই আছে শুধু কালের সাক্ষী হয়ে চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের স্মৃতি চিহ্ন কমলা রানীর দীঘি।

কথিত আছে, কমলার নামেই দীঘির নামকরণ করা হয়েছে। ওই দীঘিতে ডুবেই কমলা মৃত্যুবরণ করেন। দীঘিতে ডুবে কমলার মৃত্যু হওয়ার কারণে ইংরেজ লেখকেরা বাউফলকে বউ-ফল নামে অভিহিত করেন। স্ত্রী কমলার নামেই দীঘির নামকরণ করা হয়।

 
Electronic Paper