বিদ্যুৎ সংযোগে আ.লীগ নেতার চাঁদাবাজি
বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
🕐 ৯:৫০ অপরাহ্ণ, মে ১৯, ২০১৯
বরগুনার বেতাগীতে পল্লীবিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার নামে গ্রাহকের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে লোকমান হোসেন নামে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। বিভিন্ন সময় তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া কথা বলে এবং দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কিস্তিতে ২২৬টি পরিবারের কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা করে নিয়েছেন উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. লোকমান হোসেন। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত তিনি ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।
এদিকে বছর তিনেক আগে বিদ্যুতের পিলার ও লাইন দিলেও এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ না পেয়ে গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। কারিগর পাড়ার দরবেশ বাড়ির জাকির হোসেন জানান, তাদের দুটি মিটারের জন্য ৩৫ হাজার টাকা নিয়েছে লোকমান। কিন্তু অদ্যবধি বিদ্যুৎ সংযোগ তো পাইনি বরং এক পিলার থেকে অন্য পিলারের দূরত্ব ২০০-৩০০ ফুটের কথা থাকলেও ৫০০ ফুটের দূরত্বে দেয়া হয়েছে পিলার। যা ভবিষ্যতে ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
আব্দুল মান্নান নকিব, আব্দুল আজিজ, মৌজালী বেপারী, আব্দুস ছালাম, আব্দুর রহিম, মো. নাসির, সরেজিত কারিকরসহ অনেক গ্রাহক জানান, আগে তো পাঁচ হাজার থেকে সাত হাজার টাকা নিয়েছে। এখন আবার মিটারের জন্য ১২০০ এবং গাছের ডাল কাটার জন্য ৩০০ টাকা করে চাইতেছে। আমাদের এলাকাটি হতদরিদ্র এলাকা হওয়ায় প্রভাশালী আওয়ামী লীগ নেতা লোকমানের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেও পারি না। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।
তবে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি লোকমান হোসেন অভিযোগের কথা অস্বীকার করে বলেন, এ অভিযোগ সস্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তবে এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আমি নেতৃত্ব দিচ্ছি।
এ ব্যাপারে বরগুনা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির নির্বাহী প্রকৌশলী দিলিপ কুমার সিকদার বলেন, অফিস থেকে কোনো প্রকার টাকা পয়সা গ্রহণ করা হয় না। পল্লীবিদ্যুতের এ সংযোগ সম্পূর্ণ বিনা পয়সায়। কোনো প্রতারক যদি গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা আদায় করে সেজন্য আমরা আগেই গ্রাহকদের সচেতন করার জন্য মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করেছি।
জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. সাইদুর রহমান বলেন, গ্রাহক প্রতি ৪০০ টাকা ফেরতযোগ্য জমানত এবং সদস্য ফি ৫০ টাকার বাইরে কোনো প্রকার টাকার লেনদেন না করার জন্য আমরা আগেই মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করে দিয়েছি।
জেলাপরিষদ সভায়ও বিবিচিনিতে বিদ্যুত সংযোগের নামে এক শ্রেণীর টাউট বাটপারের বিরুদ্ধে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সভায় জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ গ্রাহকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, টাকা নেওয়ার অভিযোগ পেলে তাকে বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দিবেন।