ঝড় আতঙ্ক বাড়ছে উপকূলে
ভোলা প্রতিনিধি
🕐 ৩:৪৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৯, ২০১৮
উপকূলের দুর্বিসহ একটি দিন ২৯ এপ্রিল। ১৯৯১ সালের এদিনে দেশের উপকূলের ওপর দিয়ে আঘাত হানে প্রলয়ঙ্কারী ঝড়। এতে দেশের অন্য অঞ্চলের মতো দ্বীপ জেলা ভোলাতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এদিন জেলার কুকরী-মুকরী, ঢালচর ও চর পাতিলাসহ নিচু এলাকায় ৪-৫ ফুট জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল। সে দিনের কথা মনে করে আজো আতকে ওঠেন উপকূলের মানুষ। কারো ফসল নষ্ট হয়েছে কারো গবাদি পশু-পাখি কারো বা বসতঘর। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন ছিলেন দিশেহারা। আকাশে কালো মেঘ বা মেঘের গর্জন শুনলেই ভয়ে কেঁপে ওঠেন তারা।
ভোলা সুশীল সমাজের সদস্য সচিব নজরুল হক অনু জানান, সেদিন সারাদিন ঝড়ো বাতাস আর বৃষ্টি হলেও রাত ১২টার পর শুরু হয় তুমুল ঝড়। এতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। উপকূলের মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসেন। তবে ওই ঝড়ে মনপুরার চর নিজাম এলাকায় ৬৫ জন মানুষকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।’
ভোলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ বেতারের প্রতিনিধি এম হাবিবুর রহমান জানান, ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তবে তা অন্য জেলার তুলানায় কম। তখন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের জন্য ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়েছিল।
প্রবীণ সাংবাদিক এমএ তাহের বলেন, ‘ঝড়ে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ভোলাতেও কিছুটা হয়েছিল। তবে কারো প্রাণহানি ঘটেনি। সেই ঝড়ের কথা মনে করে আজো ভয় কেঁদে ওঠে উপকূলের মানুষ।
উপকূলবাসী জানায়, জেলার মোট বাসিন্দা প্রায় ১৮ লাখ। সে হিসাবে জেলায় সাইক্লোন শেল্টার রয়েছে ৫৭৯টি। এর মধ্যে চরফ্যাশন উপজেলায় ১৫০, বোরহানউদ্দিন ১০২, ভোলা সদরে ৭৫, দৌলদখানে ৪৯, মনপুরা ৬৩, লালমোহনে ৮৭ ও তজুমদ্দিনে ৫৩। এসব সাইক্লোন শেল্টার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া জেলার সাত উপজেলায় মোট ৫১টি মাটির কিল্লা রয়েছে। তবে এসব কিল্লার মধ্যে অধিকাংশ ব্যবহার অনুপযোগী তাই এসবের সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভোলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির উপপরিচালক সাহাবুদ্দিন জানান, এপ্রিল-মে ও অক্টোবর-নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় বা কালবৈশাখীর সময়। আমরা প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছি। আমাদের ১০ হাজার ২০০ সিসিপি কর্মী প্রস্তুত আছে, তারা এলাকা ঘুরে যথাসময়ে সতর্কা বার্তা পৌঁছে দেয়। তবে আমাদের আরো কিছু আধুনিকায়ন দরকার।