ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মনপুরা-তজুমদ্দিনে ২৫ বছর সি ট্রাক বন্ধ

ঝুঁকি নিয়ে মেঘনা পাড়ি

এস আই মুকুল, চরফ্যাশন (ভোলা)
🕐 ৯:২২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৩, ২০১৯

ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরা এবং তজুমদ্দিন উপজেলার সঙ্গে নৌপথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম সিট্রাকটি দীর্ঘ ২৫ ধরে বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন সিট্রাকটি বন্ধ থাকায় যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল মেঘনা নদী পাড়ি দিচ্ছেন। সিট্রাকটি বন্ধ থাকার কারণে এপার-ওপারের যাত্রীদের চরম দূর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। মানুষ বাধ্য হয়ে ইঞ্জিন চালিত ছোট ট্রলারে করে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিতে বাধ্য হচ্ছেন। মানুষের নিত্যদিনের এহেন দূর্ভোগের চিত্র লাগবে প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন সাধারণ মানুষ।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, মেঘনায় ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঞ্জারজোন ঘোষণা করে সরকার। এসময় মেঘনায় বেক্রসিং সনদধারী নৌযান ব্যতিত সকল প্রকার নৌযান চলাচলের নিষেধাজ্ঞা জারী রয়েছে।

ভোলা বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারি পরিচালক (বন্দরকর্মকর্তা) কামরুজ্জামান জানান, বেক্রসিং সনদ ব্যতিত সকল প্রকার নৌযান চলাচলে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মেঘনায় নিরাপদ নৌযান চলাচলে ইতিমধ্যে ট্রাকফোর্স গঠন করা হয়েছে। দ্রুত মেঘনায় চলাচলকারী অনিরাপদ নৌযানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

যাত্রীরা জানান, জীবনের প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে তারা ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট ট্রলারে যাতায়াত করছে।

এদিকে, ব্যস্ত এ নৌরুটে প্রতিদিনই ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকার মালামাল আসে তজুমদ্দিনসহ অন্যান্য উপজেলা থেকে। অনেক ব্যবসায়ী ভয়ে মালামাল আনতে পারছেন না।

আবার যারা ঝুঁকি নিয়ে মালামাল ছোট ট্রলারে করে আনার সাহস করছেন তাদের বেশীরভাগ মালামালই ঢেউয়ের ছিটকে পড়ে ভিজে যায়। ফলে তাদের লাভের চেয়ে লোকসানের মাত্রাই বেশী হচ্ছে। এতে করে ব্যবসায়ীদের মাঝেও ক্ষোভের কমতি নেই। তবে যাত্রীরা এ ধরনের র্দূভোগ থেকে চিরস্থায়ী পরিত্রান চায়। এছাড়া প্রতিদিন কালবৈশাখী ঝড়ের আতঙ্ক বিরাজ করছে যাত্রীদের মাঝে।

প্রতিদিনই আকাশটা কালো মেঘে ছেঁয়ে গিয়ে প্রচন্ড গতিতে দমকা হাওয়া বয়ে যায়। আর ওই সময়ে যাত্রীবাহী ছোট ট্রলার যদি মেঘনা নদীর মাঝে চলমান থাকে তাহলে নৌদূর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে।

মনপুরা সরকারি হাজিরহাট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন জানান, জেলার সঙ্গে নৌপথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম সিট্রাক বন্ধ রেখে টেন্ডারে পাওয়া সিট্রাক কর্তৃপক্ষ ট্রলারে যাত্রী পারাপার করছে। এ দ্বীপের মানুষ বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনিরাপদ ছোট ছোট মাছ ধরার ট্রলারের মেঘনা পাড়ি দিচ্ছে।

ভোলা বিআইডব্লিউটিএর পরিদর্শক নাছিম জানান, লোকবল সংকটের কারণে মেঘনা থেকে অনিরাপদ নৌযান বন্ধ করা যাচ্ছেনা। তারপরও সংশ্লিষ্ট উপজেলার প্রশাসনকে অভিযান পরিচালনার জন্য বলা হয়েছে।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিসির সহকারি জেনারেল ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ জানান, মনপুরা- তজুমুদ্দিন রুটে যাত্রীবাহী সিট্রাক এসটি শহীদ শেখ কামাল যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য বন্ধ রয়েছে। দ্রুত এ রুটে যাতায়াত করবে যাত্রীবাহী সিট্রাকটি।

মনপুরা উপজেলার নির্বাহী অফিসার বশির আহমেদ জানান, মেঘনায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনিরাপদ নৌযানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতিমধ্যেই আমরা অনিরাপদে চলাচল নৌযান আটক করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। দ্রুত সিট্রাকটি চালুর জন্য চেষ্ঠা করে যাচ্ছি।

 
Electronic Paper