গঙ্গাস্নানের মধ্যদিয়ে শেষ হলো রাস উৎসব
সোলায়মান পিন্টু,কলাপাড়া
🕐 ৬:৪৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ০৮, ২০২২

পূণ্যস্নানের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে রাস উৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা। মঙ্গলবার ভোর ০৫ টা ৩০ মিনিটে পূর্ব আকাশে সূর্য উকি দেয়ার সাথে সাথে জাগতিক সকল পাপ মোচনের আশায় পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতের নোনা জলে গাঁ ভাসিয়েছে হাজারো হিন্দুর্ধমালম্বীরা।
স্নানের আগে সৈকতে মোমবাতী, আগরবাতি, বেল পাতা,ফুল, ধান, দুব্বা, হরতকী, ডাব, কলা, তেল ও সিঁদুর সমুদ্রের জলে অর্পন করে সনাতনী নারীরা। এ সময় উলুধ্বনি ও মন্ত্রোপাঠে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো সৈকত।
এছাড়া মাথান্যাড়াসহ প্রায়শ্চিত্ত ও পন্ডিদান করেন অনেক মানতকারীরা। পরে ১৭ জোড়া যুগল প্রতিমা দর্শন করেন পূন্য লাভের আশায় গঙ্গা স্নানে আসা সনাতনীরা। এর আগে রাতভর কুয়াকাটার রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে পূজার্চনা, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও মহানাম কীর্তনে মেতে ওঠেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কুয়াকাটায় রাসলীলা শেষ হলেও কলাপাড়া পৌর শহরের শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমে এ রাস মেলা চলবে আরও ০৫ দিন। এই উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে বাহারী সব জিনিস নিয়ে পশরা সাজিয়ে বসেছে মেলা নির্ভর ব্যবসায়ীরা।
এদিকে রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত আগত পূন্যার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় সচেষ্ট রয়েছে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা।
সনাতন ধর্ম মতে, দাপর যুগে কংশ রাজাকে বস করে রাধা কৃষ্ণের প্রেম থেকেই শুরু এই রাসলীলার। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে প্রায় ২০০ বছর ধরে এ উৎসব উদযাপন হয়ে আসছে।
বেতাগী থেকে পূণ্যস্নান দিতে আসা কাজল ব্যানার্জী বলেন, রাসলীলা উদযাপন করতে পরিবার পরিজন নিয়ে সৈকতে এসেছি। রাতভর পূজা অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় সঙ্গীতানুষ্ঠান শেষে সকালে পূণ্যস্নান সম্পন্ন করে এখন বাড়ির পথে রযনা দিয়েছি।
গৌতম সাহা জানান, সব অশুভ শক্তি ও করোনা থেকে মুক্তির আশায় বিশেষ প্রার্থনা করেছি।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির কলাপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ মূখার্জী বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদাায়িক সম্প্রীতির দেশ। এই দেশে সব ধর্মের লোক মিলে একটি সুন্দর সাংস্কৃতিক পরিবেশ গড়ে তুলেছে। যার প্রতিফলন এই রাস উৎসব। কুয়াকাটা সৈকতে আজ শুধু হিন্দু ধর্মের লোকেরাই আসেনি এখানে বিভিন্ন ধর্মের লোক এসেছে এই রাস উৎসব উপভোগ করতে। যা আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের ওসি হাসনাইন পারভেজ জানান, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই রাস উৎসব সম্পন্ন হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সৈকত এলাকায় ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল অব্যহত রয়েছে। আগত পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্ব পূর্ণ এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিলো।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শংকর চন্দ্র বৈদ্য জানান, পূণ্যার্থীদের সুপেয় পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ব্যবস্থা, পূণ্যস্নান শেষে ড্রেস চেইঞ্জ করার জন্য অস্থায়ী গোসল খানা, নলকুপ বসানোসহ তিনদিন ব্যাপী নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ছিল। নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে সুন্দর ও সুষ্ঠভাবে গঙ্গাস্নাস সম্পন্ন হয়েছে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
