ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পিরোজপুরে মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

আরিফ মোস্তফা, পিরোজপুর 
🕐 ৮:১৯ অপরাহ্ণ, মে ২৬, ২০২২

পিরোজপুরে মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

পিরোজপুর সদর উপজেলার শিকদারমল্লিক ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রুহুল আমিন শেখ ও কদমতলা ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য নাদিম খানের হাত বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনার মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীরা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে পিরোজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পিরোজপুর সদর উপজেলা শিকদারমল্লিক ইউনিয়ের ৯ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউপি সদস্য ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো: রুহুল আমীন শেখ। এ সময় তার পাশেই বিচ্ছিন্ন হাত নিয়ে উপিস্থত ছিলেন কদমতলা ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য নাদিম খান।

লিখিত বক্তব্যে মো: রুহুল আমীন শেখ জানান, গত ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর সকালে তিনি নিজ বাড়ি হতে পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কাজের জন্য রওনা দিলে পথিমধ্যে কদমতলা ইউনিয়নের পিরোজপুর-নাজিরপুর সড়কের ঝনঝনিয়া এলাকায় এলে কিছু সন্ত্রাসীরা তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তাকে জোড়পূর্বক ধরে পোরগোলা গ্রামের একটি বাগানের নিয়ে গিয়ে সন্ত্রাসী ফারুক শেখ,সন্ত্রাসী গোলাম রব্বানী পিন্টু ও এস এম বায়জিদ হোসেন ও তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র ও লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তাকে দুই পা পঙ্গু করে দেয় এবং মারধর করে। পরে তাকে মৃত ভেবে সন্ত্রাসীরা পোরগোলার একটি বাগানে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। পরে এ ঘটনায় পিরোজপুর সদর থানায় মামলা দিতে চাইলেও অজ্ঞাত করেন সদর থানায় মামলা না নিলে আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালতের আদেশে থানায় মামলা গ্রহণ করে।

এছাড়া ২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারী কদমতলা ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য নাদিম খান পিরোজপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে যোগ দিয়ে পিরোজপুর থেকে কদমতলা ইউনিয়নে নিজ বাড়িতে যাওয়ার সময় সিহাব শেখ, সন্ত্রাসী ফারুক শেখ ও এস এম বায়জিদ হোসেনরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নাদিম খানের দেহ থেকে হাত বিচ্ছিন্ন করে। এ ঘটনায় হামলাকারী সন্ত্রাসীদের নাম উল্লেখ করে পিরোজপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

লিখিত বক্তব্য মো: রুহুল আমীন শেখ আরো জানান, তাদের উপর হামলার মামলা হলেও অভিযুক্ত আসামীরা বীরদর্পে এলাকা ঘুড়ে বেরাচ্ছে। এ দুইটি মামলার গ্রেপ্তারী পরোয়ানা নিয়ে আসামী এস এম বায়জিদ প্রকাশ্যে পুলিশের সাথে পিরোজপুর সদরের বিভিন্ন এলাকায় এক সাথে সভা- সমাবেশ যোগদান করছে। মামলার বাদী সহ স্বাক্ষীদের মামলা তুলে নিতে দিচ্ছে হামলা ও নানা রকমের হুমকি।

কদমতলা ইউনিয়ন যুলীগের সদস্য নাদিম খান বলেন “হামলার শিকার হয়ে অঙ্গ হারিয়ে বিচারের দাবীতে মামলা দিয়ে আমার এখন আসামীদের সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে এক প্রকার পলাতক অবস্থায় আছি স্বাক্ষীদের নিয়ে। আসামীদের নামে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা থাকলেও পুলিশ অজ্ঞাত কারণে তাদের গ্রেপ্তার করছে না। তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিরোজপুর সদর থানার ওসি আসামী গ্রেপ্তারের এ বিষয়ে কোন প্রকার পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দুই মামলার বাদী কামরুল শেখ, ও তামান্না তমা, শিকদার মল্লিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. শহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার। অভিযোগের বিষয়ে পিরোজপুর সদর থানার ওসি আ. জা. মো: মাসুদুজ্জামান জানান, উক্ত মামলায় আসামীর প্রাথমিক সংশ্লিষ্ট না থাকায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না।

এ প্রসঙ্গে পিরোজপুর সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এস এম বায়েজিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনা যখন ঘটে তখন তিনি ঢাকায় ছিলেন। তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে এই মামলায় তাকে ও তার চাচা কদমতলা ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান শেখ সিহাব কে আসামি করা হয়।

কদমতলার ঘটনায় যিনি আঘাতপ্রাপ্ত, তিনি বা তার পরিবারের কেউ মামলা দায়ের করেননি। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পরাজিত হানিফ খান প্রতিশোধ নেয়ার উদ্দেশ্যে তার স্ত্রীকে দিয়ে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় উদ্দশ্যে প্রণোদিত ভাবে আমাকে (বায়েজিদ) ও আমার চাচা কে জড়িত করার জন্য হানিফ খান তার স্ত্রীকে দিয়ে এই মামলা করান। এরপর তিনি বলেন, আমি আইনের আশ্রয় নিয়ে হাইর্কোট থেকে জামিন পেয়েছি। জামিন পাওয়ার পরর্বতীতে আমার বিরুদ্ধে আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়নি। তদন্তে কোন সত্যতা পেয়ে চার্জশিট দাখিল করা হয়নি।

 

 
Electronic Paper