কারণ, আমার গার্লফ্রেন্ডের খোঁজ যেখানে নিজেই জানি না, তারা আমার জিএফকে খুঁজে বের করে ফেলেছে। বাহ্! দীর্ঘদিন ধরে বন্ধুমহলের ধারণা, আমার নিশ্চয়ই গার্লফ্রেন্ড আছে, না হলে এত রোমান্টিক প্রেমাণুকাব্য আসে কোত্থেকে? আমি তাদের যতই বোঝাই আমার কোনো জিএফ-টিএফ নেই। আর প্রেমাণুকাব্য-টাব্য এসব কিছু না, আমার গোবর ভর্তি মস্তিষ্কের উর্বর কল্পনা ছাড়া। কিন্তু তারা নাছোড়বান্দা, আমার কথা মানতে নারাজ। তাদের ভাষ্য, ছ্যাঁকা খাওয়া ছাড়া যেমন কবিতা লেখা যায় না, তেমনি প্রেমে পড়া ছাড়া প্রেমাণুকাব্য লেখা যায় না। তাই আমার অজান্তে তাদের গোয়েন্দাগিরি চলতে থাকল। মোবাইল ফোন রেখে যখন ওয়াশরুমে গেছি তখন তারা আমার মোবাইল চেক করে জিএফ নামে সেভ করা একটা নম্বর বের করে ফেলেছে। আমি তাদের যতই বোঝাই এটা আমার কোনো গার্লফ্রেন্ডের নম্বর না। আমার কোনো জিএফ প্রজাতির কিছু নেই। আমার মতো আবুল মার্কা ছেলের দিকে এ প্রজাতির কোনো সদস্য ফিরেও তাকায় না। তারা ততই অবুঝ, নাছোড়বান্দা। অবশেষে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিল এই নম্বরে কল দিবে। আমার তখন আর কিছুই করার ছিল না, চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া। তারা কল দিল। রিং হচ্ছে, লাউডস্পিকারে শুনছে সবাই। রিসিভ হলো, সবার মাঝে টানটান উত্তেজনা। ওপাশ থেকে বয়স্ক কণ্ঠের একজন বলে উঠল, অ্যালো, ওয়া অনে হন? (হ্যালো, আপনি কে?) এ কথা শুনে আমার বন্ধুরা তো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে লাইন কেটে দিল। তারা আশা করেছিল কোনো সুকণ্ঠী ললনার মিষ্টি কণ্ঠ। তার পরিবর্তে একজন বয়স্ক লোকের আঞ্চলিক ভাষার কথা শুনে সবাই স্তব্ধ। আমাকে জব্দ করার যে পরিকল্পনা তারা করেছিল। উল্টা তারাই জব্দ হয়ে গেল। এভাবে তাদের আশায় গুড়েবালি দেখে আমার মায়া হলো। আমি আমার বন্ধুদের বোঝালাম, সব জিএফ মানে গার্লফ্রেন্ড না। তোদের কাছে জিএফ মানে গার্লফ্রেন্ড আর আমার কাছে জিএফ মানে গ্রান্ডফাদার (দাদা)। জিএফ নামে সেভ করা নম্বরটা আমার দাদার!

সাধনপুর (মোকামীপাড়া), বাঁশখালী, চট্টগ্রাম