ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চা কর, চাকর

মোস্তাফিজুল হক
🕐 ৩:২৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২১

চা কর, চাকর

আবুলের বাবা নেই। বড়লোক মামার বাড়িতে থেকেই লেখাপড়াটা চালিয়ে নিচ্ছে। তাছাড়া মামাতো ভাইবোনও কানাডায় পাড়ি জমিয়েছে। তাই মামা-মামি নিঃসঙ্গতা কাটাতেই আবুলকে সংসারে ঠাঁই দিয়েছেন। তারা দুজনেই পেনশনার। তবে মামা এখনো সন্ধ্যায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেন। এটা তার নেশা। টানা বত্রিশ বছর এ পেশায় ছিলেন। তাই এটা এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সুতরাং চাইলেই এ অভ্যাস ত্যাগ করা যায় না।

আবুলকে সাধারণভাবে হাবাগোবাই মনে হয়। তবে সে এক বুদ্ধিমান অলস। একদিন বিকেলে বাসায় কাজের লোক নেই। মামাও বাইরে। মামির শরীরও কিছুটা দুর্বল। বয়স হলে যা হয়। মামি বলেন, ‘আবুল, আমার চা কর।’

অলস আবুল জবাবে বলল, ‘ছি ছি, মামি! কী বললেন এটা? আপনি না আমাকে নিজের ছেলের মতো মনে করেন? তবে আজ যে এ কথা বলছেন?’
মামি বললেন, ‘কী বললাম আবার?’

‘ওই যে, বললেন চাকর! ভাগ্নে কি কখনো চাকর হয়?’ এবার মামি বললেন, ‘ধুত্তরি ছাই! চাকর পেলি কই?’

গরমে রান্নাঘরে ঢুকে অলস আবুলের চা করতে ইচ্ছে করছে না। এবারো কথা ঘুরিয়ে ফেলল সে। বলল, ‘কী কন মামি? না হয় আমি চাকর, কিন্তু ডাঙায় আবার কৈ পেলাম কোথায়?’ এবারের কথায় মামি বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘থাকগে আমি নিজেই বানাই। আর যা তো দেখি, কাপ নিয়ে আয়!’ আবুল মহাফাঁপড়ে পড়ে গেল।
একবার আলমিরা থেকে কাপ বের করতে গিয়ে বেশ দামি একটা টি-পট ভেঙে ফেলেছিল। সেই ভয় থেকে এবার বলল, ‘মামি, কাপের আশা একদম মিছে। মামা আমাকে খেলতে মানা করেছেন। তিনি বলেছেন আমার জন্য নাকি পড়াশোনাটাই জরুরি।’ মামি কথা না বাড়িয়ে নিজেই সব করলেন। তারপর এককাপ চা এনে আবুলকে বললেন, ‘এই নে ধর! চা পিয়ে তুই ঘিলুটিলু বাড়া!’

এবারো আবুল তার হাবলামি প্রমাণ করতে বলল, ‘মামি, কার ঘিলুটা চাপাই আমি। তা পথটা দেখাবে কারা?’ মামি মুচকি হেসে মনে মনে বললেন, হদ্দ হাবা! সবকিছুই উল্টো বোঝে!

শেখহাটি, শেরপুর

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper