ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মশার পরিবার

শাকিব হুসাইন
🕐 ৩:৩৭ অপরাহ্ণ, জুন ২৯, ২০২১

মশার পরিবার

আমি তো ভাই দুষ্টু মশা। মানুষের ভিড়ে যাই। রক্তের গন্ধে মনটা ভরে হুলটা সঙ্গে বসাই। ক্লাস ওয়ানে পড়ি আমি ঘোরাই গাড়ির চাকা। এই বয়সে আমি তো ভাই দুষ্টুমিতে পাকা।

বলব এবার তোমাদের আমি পরিবার নিয়ে। কেমন করে থাকি সবাই শান্তি সুখ দিয়ে। আমার বাবা বদমেজাজি একটুও সময় নেয় না। মানুষ দেখলে বাবা আমার হয়ে যায় হায়েনা। মানুষ দেখলে আমার বাবার নাকটা ভীষণ ঘোরে। রক্তের বন্যা বয়ে দেবে মানুষের দোরে। মা আমার অনেক ভালো দিনের বেলায় খায়। রাত্রিবেলা নাক ডেকে সোফাতে ঘুমায়। একটু দেরি করলে বাবা-মা তো রেগে যায়। বাবা তখন বাধ্য হয়ে হাত-পা টিপে দেয়। ভাই তো আমার রোমান্টিক গালে মারে চুম। রাত্রিবেলা যুবতী মেয়েদের হারাম করে ঘুম। সারাদিন রাস্তার ধারে বসে থাকে ভাই। হাজার মেয়েকে প্রপোজ করে একটাও পাত্তা দেয় নাই। তাই তো এখন ভাইয়া আমার হয়েছে দেবদাস।

মনে মনে প্ল্যান করেছে যাবে বনবাস। বোনটা আমার শান্ত খুব মেকআপ করে রোজ। তাই তো আজ ওই পাড়ার টেনা মশা বোনের করে খোঁজ। বোনটি আমার স্কুল গেলে হাজার ছেলে পিছু ধরে। টেনা মশা প্রতিদিনে বোনকে আমার প্রপোজ করে। একদিন আমি টেনাকে দিলাম একটা হুল। টেনা মশা বাসায় গিয়ে কেঁদে হুলস্থুল। দাদুর বয়স হয়েছে অনেক খায় না আর বেশি। রক্ত খেতে গেলে দাদুর কাঁপে হাঁটুর পেশি। আমি তো ভাই বুড়োর পিছে সারাদিন লাগি। আমার ভয়ে দাদু একদিন গিয়েছিল ভাগি। দূষিত রক্ত খেয়ে দাদি শুয়ে মরণ শয্যায়। কোনোদিন ভাই পটল তুলবে একথাটা বলা দায়। এত কম বয়সে দাদি আমার চলে যাবে ভাই। এই ভয়েতে কালকে রাতে কেউ তো ঘুমায় নাই। আমার চাচা শান্ত অনেক ছিল তার সুনাম।

টেনির সাথে পালিয়ে গেল আজকে তার দুর্নাম। প্রতিদিন চাচাকে দেখতাম টেনির বাসার সামনে। ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত ভাবছ তোমরা কেমনে? দাদুর কাছে বায়না ধরে নিয়েছিল হুন্ডা। টেনির জন্য চাচা আমার হয়েছে গুণ্ডা। আমার মামা বড় বিজ্ঞানী আমি তার ভক্ত। রিসার্চ করে মামা আমার মানুষের রক্ত। একদিন এক কাণ্ড ঘটাল আমি তো চমকে চকতো। লোভ সামলাতে না পেরে খেল মণখানেক রক্ত। আমার মামি বদমেজাজি মামাকে দেয় গাল। বিজ্ঞানী হয়ে সংসারে এ কী হাল। যেগুলো রক্ত আনে মামি সেগুলো রক্ত মামা রিসার্চ করে বটে।

তাই মামি প্রতিদিনই মামার ওপর চটে। আমার নানু এই বয়সে জোয়ান আছে ভাই। মেয়েদের পিছু ঘোরে রোজ বলে টাটা গুড বাই। এই নিয়ে তো নানির সাথে ঝগড়া করে রোজ। গালের মাঝে দেয় বসিয়ে হাজার ভোল্টের ডোজ। মেঝ মামা বলদ আমার রক্ত খায় না বেশি। এই বয়সে মেঝ মামার কাঁপে হাতের পেশি। ইচ্ছা ছিল ছোট মামা হবে বড় নায়ক। নায়ক থেকে কেমনে জানি হয়ে গেল গায়ক। আমার খালা রূপচর্চায় সারাদিন থাকে পার্লারের কাছে। তাই তো আজ হাজার জোয়ান ঘোরে খালার পিছে। এই রকম এক পরিবার নিয়ে কাটাই সুখের রেশ। স্বাধীনভাবে রক্ত চুষে সুখে আছি বেশ।

শিক্ষার্থী, দিনাজপুর সরকারি কলেজ

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper