দেশীয় থেরাপি
রাসেল খান
🕐 ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০২১
স্ত্রীর ঘ্যানঘ্যানানিতে প্রতিদিন ঘুম ভাঙে মফিজের। এ নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। খুব উপভোগ করে সে। উপভোগ না করেই বা কী করবে! একটু এদিক-ওদিক হলেই তার স্ত্রী পুরো বাড়ি মাথায় তুলে নাচানাচি শুরু করে।
শুধু তাই নয়, মাথায় যে পরিমাণ চুল আছে তারও শেষ রক্ষা হবে না মফিজের। এককথায় স্ত্রীর আদর্শ স্বামী হিসেবে যা করণীয়, তার শতভাগই পালনের চেষ্টা করে সে। ঘরের ভিতর স্ত্রীর হুকুম মেনে চললেও বাইরে সেই ভাব থাকে। মনে হয় তার মতো সাহসী পুরুষ আর দুটো নেই। স্ত্রীকে কীভাবে স্বামীর বাধ্য করতে হয়, সবই তার জানা আছে।
সেদিন তাদের গ্রামে পুরুষ নির্যাতন থেকে রক্ষার জন্য এক জরুরি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় মফিজকে তার মূল্যবান বক্তব্য রাখতে বলা হয়। মফিজ গলার আওয়াজ বাড়িয়ে বলল, স্ত্রী হলো স্বামীর অনুগত দাসী। তার সকল স্বাধীনতা স্বামীর হাতে। এর ব্যত্যয় ঘটলে প্রত্যেক স্বামীর উচিত, তাকে দেশীয় থেরাপি প্রয়োগ করা। মফিজের দেশীয় থেরাপির কথা বুঝতে কারও কষ্ট হয় না। এমন সাহসী ভাষণের কথা শুনে উপস্থিত সবাই জোড়ে হাততালি দিল। সবার সিদ্ধান্তে এলাকায় পুরুষ নির্যাতন কমিটির সভাপতি করা হয় তাকে। পদটি পেয়ে ম?ফিজ খুব খুশি। মনে মনে নিজেকে সেরা পুরুষের ঘোষণা দেয়।
সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার খবর মুহূর্তেই ঝড়ের বেগে পৌঁছে তার স্ত্রীর কানে। সে রেগেমেগে আগুন। মফিজের বাড়ি ফেরার অপেক্ষা মাত্র। মফিজ গলায় ফুলের মালা জড়িয়ে খুশিমনে বাড়িতে পৌঁছে। স্ত্রীও তাকে ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে। কিন্তু স্ত্রীর এমন সম্ভাষণে মফিজ অবাক। নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছে না। সূর্য কী আজ পশ্চিমে উঠল নাকি! নাকি দিনদুপুরে স্বপ্ন দেখছে। পরীক্ষা করার জন্য নিজের গায়ে নিজেই চিমটি কাটে। কিন্তু নাহ। সত্যিই তো সব ঠিক আছে।
মফিজ তখন স্ত্রীকে নরম গলায় বলল, তুমি আমার ঘরের লক্ষ্মী। আমি সভাপতি হওয়ায় তুমি খুব খুশি হয়েছ। আগে জানলে বাজারের বিখ্যাত মিষ্টি নিয়ে আসতাম...। কথা বলা শেষ না হতেই তার স্ত্রী কোমরে আঁচল বেঁধে উল্টো তাকেই দেশীয় থেরাপি শুরু করে। একটানা ধুপধাপ শব্দ হলো। মফিজের আর কিছু মনে নেই। হঠাৎ জ্ঞান ফিরেই নিজেকে হাসপাতালের বেডে আবিষ্কার করে।
ভূয়াপুর, টাঙ্গাইল
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228