আলুর দোষ
হাফিজ উদ্দীন আহমদ
🕐 ৩:৫২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০২০
: আলুর দোষ নাকি খারাপ? এটা মানে নাকি মেয়েদের সঙ্গে ফস্টিনস্টি করা? তোমার নাকি আলুর দোষ ছিল?
এতগুলো প্রশ্ন একসঙ্গে করে ব্যাঘ্র দৃষ্টিতে তাকাল আইরিন।
: কে বলেছে এসব?
: তোমার বন্ধু আসিফ।
: আরে, ওটা আমার বন্ধু হলো কবে? এটা একটা জেলাসি। তোমাকে নিয়ে সুখে আছি তো তাই ও দেখতে পারে না। আমার নামে বদনাম করে। আসল ব্যাপারটা শুনলে...
: কী আসল ব্যাপার?
: ব্যাপারটা হচ্ছে, হোস্টেলে থাকতে মাঝে মাঝে দু’তিনজন মিলে রান্না করে খেতাম রুমে। আমি আলু ভাজতে গেলেই আলুটা পুড়িয়ে ফেলতাম তো প্রতিদিন তাই ওরা বলত, আমার আলুতে দোষ মানে আলুর দোষ আছে। ওটা খারাপ কিছু না।
বউকে আর দ্বিতীয় কথা বলার সুযোগ না দিয়ে পরিবেশটা সামলাতে তড়িৎ গতিতে বের হয়ে গেল রফিক, ব্যাগ হাতে। ভাগ্যিস লাভলী আর কণাদের সঙ্গে লাইন মারার কথা তিন্নি জেনে ফেলেনি।
আগে বাজার আনলেই বাচ্চারা ঝাঁপিয়ে পড়ত- ‘আব্বু, কী এনেছ’ বলে। আজকেও ঝাঁপিয়ে পড়তে চেয়েছিল।
: যা, ভাগ!
ওদের তাড়িয়ে দিল রফিক।
: বাহ্ বাজার থেকেই মেজাজ ফর্টিনাইন করে ফিরেছ?
তিন্নি বিস্মিত হলো। তারপর হাতের দিকে নজর দিয়েই বলল, সে কী! কিছুই আনোনি? ব্যাগ তো খালিই মনে হচ্ছে!
: কে বলেছে খালি? চোখ থাকলে দেখতে!
: চোখ নেই মানে? এ চোখ দেখেই তো কত বড় কবিতা লিখে মন ভেজাতে গিয়েছিলে!
জোঁকের মুখে চুন পড়ল যেন এবার। রফিক ফাউল করে ফুটবল খেলোয়াড় রেফারির সামনে যেমনি আমতা আমতা করে তেমনি করে বলল, বলছিলাম কি বাজার এনেছি। মানিব্যাগও ফাঁকা করেছি। কিন্তু ব্যাগটাকে গর্ভবতী মানে ফোলাতে পারিনি।
: জানি ওটা পারবে না। পারো খালি আমার সঙ্গে।
বলতে বলতে সে ব্যাগটাকে উপুড় করল। ভিতর থেকে কতগুলো জিনিস আবর্জনার মতো ঝরে পড়ল। রফিক বুক ফুলিয়ে গর্বের সঙ্গে বলল, বাজারে সব আইটেম সেঞ্চুরি-ডাবল সেঞ্চুরি মারার জন্য যে হারে দামের ছক্কা পেটাচ্ছে তাতে আমার কিছু কলিগ জিরো রানে আউট হয়ে খালি হাতে বাজার থেকে ফিরেছে কিন্তু আমি আউট হইনি। দু’চার রান করে তবে ফিরেছি। এ দেখো দু’হালি মাছ (৮টা কুঁচে মাছ বের করল), এক হালি কাঁচা মরিচ, এক হালি পেঁয়াজ পাতা আর এক হালি আলু।
: আমি জানি তোমার আলুর দোষ ছিল, এখনো আছে। এক হালি আলু কেউ কেনে নাকি জীবনে? তোমার হাতে পড়ে জীবনটা আমার আলু ভর্তা হয়ে গেছে!
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228