মামার রচনা
আবুল কালাম আজাদ
🕐 ১:১৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২০
সূচনা : মা-এর ইংরেজি মাদার। মা+মা=মামা। মামা-এর ইংরেজি হওয়া উচিত ছিল মাদারমাদার। আজকাল অনেকে মাকে মম ডাকে। সেহেতু মামার ইংরেজি মম+মম=মমমম-ও হতে পারত। তা না হয়ে মামার ইংরেজি হয়েছে আঙ্কেল।
ওদিকে চাচার ইংরেজিও আঙ্কেল। তাই যাতে প্যাঁচ না লাগে সেই জন্য মামার আঙ্কেলের আগে ম্যাটার্নাল লাগানো হয়েছে। বর্ণনা : ভাগ্নে-ভাগ্নির কাছে মামা মানেই সবচেয়ে প্রিয় মানুষ। আকাশের চাঁদ-তারা কিংবা সাগর তলের নূড়ি-পাথর সবই মামার কাছে আব্দার করা যায়। বাড়িতে মামা আসা মানে ঈদের আনন্দ। মামা আসা মানে আম, জাম, লিচু, কলা, কাঁঠাল, দই-মিষ্টি সব আসা।
তার সাথে আছে পুকুরের মাছ, পালের হাঁস-মুরগি, ডিম, খাঁটি গরুর দুধ আরও কত্ত কিছু। মামাবাড়ি যাওয়ার মতো আনন্দের আর কিছু নেই। মামা বাড়ি গেলে ভগ্নে-ভাগ্নিরা হয় বন্ধনহীন খোদার খাসি। ইচ্ছা মতো ছুটোছুটি, লুটোপুটি। ভাগ্নেরা অবশ্য আরও একটু বেশি কিছু পায়।
মামার সাথে হাটেবাজারে, মেলায় ঘুরে বেড়াতে পারে। মামা-ভাগ্নের এই সম্পর্কের জন্যই বলা হয়-মামা-ভাগ্নে যেখানে, আপদ নাই সেখানে। মামা বাড়িতে যে আব্দার খাটে অন্য কোথাও তা খাটে না। তাই পরিচিত একটা প্রবাদ-মামা বাড়ির আব্দার।
আমাদের দেশে একটা কথা খুবই প্রচলিত যে, মামা না থাকলে চাকরি হয় না। এ থেকেই বোঝা যায়, মামা কতটা দিতে পারে। মামার ক্ষেত্রেও বড় মামা, ছোট মামা আছে। কিন্তু বড় চাচার সম্পর্কে যেমন ভয় মিশে থাকে বড় মামার ক্ষেত্রে তা নয়।
মায়ের ছোট ভাই হোক, আর বড় ভাই হোক, মামা শুধুই মামা। সবার সঙ্গে সমান আহলাদ খাটে। পরীক্ষায় ডাব্বা কাত করার পর বাবা যদি লাঠি নিয়ে আসে, আর ঠিক সেই মুহূর্তে যদি মামা এসে হাজি হয় তাহলে কোনো চিন্তা নাই। মামা রক্ষা করবেই।
এসব কারণে মামা ডাকটা আমাদের কাছে এতটা প্রিয় হয়ে গেছে যে, পাড়ার মুদি দোকানদার, ফুচকাওয়ালা, রিকশাওয়ালা, ঝালমুড়িওয়ালা সবাইকে আমরা মনের আনন্দে মামা ডাকি। তারাও আমাদের মুখে মামা ডাক শুনে খুবই খুশি হয়।
উপসংহার : সবশেষে বলতে চাই, যার মামা নাই তার মতো পোড়া কপাল আর কারও নাই। জীবনকে মধুময় করতে হলে অন্তত একটা মামা থাকতেই হবেÑ কানা, খোঁড়া হলেও সমস্যা নেই। এ জন্যই বল হয়Ñ নাই মামার চেয়ে কানামামা ভালো।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228