ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিদেশ বিভ্রাট

শিমুল শাহিন
🕐 ৭:৩০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২০

বড় চাচা সুযোগ পেলেই খোঁচা মারতে ছাড়েন না! এমন কোনও বিষয় নেই যেটা নিয়ে তিনি চাপাবাজি সহকারে খোঁচা মারেননি! পড়াশোনা থেকে শুরু করে খেলাধুলা এমনকি মারামারি বিষয়েও খোঁচা মারেন যখন তখন! এই তো সেদিন পাশের গ্রামের সঙ্গে ফুটবল খেলায় হেরে বাসায় ফিরছিলাম মন খারাপ করে। রাস্তায় চাচার সঙ্গে দেখা পুরো দলের। আমাদের মন খারাপ দেখে উনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোদের মন খারাপ কেন?’

চিমসে মুখে উত্তর দিলাম, ‘বাদলপুরের সঙ্গে ফুটবল ম্যাচ ছিল, হেরে গেছি তাই!’ 

ভেবেছিলাম মন খারাপের কারণ শুনে চাচা অন্তত আমাদের সান্ত¡নাসূচক কিছু বলবেন, কিন্তু তা নয়! আমার কথা শুনেই তিনি অট্টহাসি দিয়ে দু’কথা শুনিয়ে দিয়ে বললেন, ‘কী যে ফালতু খেলিস তোরা! জানিস, আমাদের সময় আমি এতই ভালো খেলতাম আশপাশের দু’চারটা জেলার লোকজন হায়ার করে আমাকে নিয়ে যেত খেলানোর জন্য!’

একদিন ম্যাথ পরীক্ষায় শূন্য পেয়ে বাসায় ফিরছি মন খারাপ করে, তখনও সব শুনে তিনি বললেন, ‘তোর তো দেখছি মাথাভর্তি গোবর! জানিস, আমি কখনো ক্লাসে সেকেন্ড হইনি!’

বড় চাচাকে পারতপক্ষেই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি! কিন্তু কথায় আছে যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়। ঠিক এমনটাই হয়ে আসছে সবসময়! আজকেও চাচাত ভাই সুমনকে চুপিচুপি ডাকতে এসে চাচার সামনেই পড়লাম! বাসায় ঢুকতেই দেখলাম বড় চাচা মোটা ফ্রেমের চশমাটা চোখে দিয়ে পেপার পড়ছেন! চলে আসব যখন ভাবছি ঠিক তখনই চাচার চোখে চোখ পড়ল। বাধ্য হয়ে ভেতরে ঢুকে বললাম, ‘চাচা, কী করেন?’ হাতের পেপারটা টেবিলে রেখে বললেন, ‘পেপার দেখছিলাম রে!’

সুমনকে ইশারায় ডেকে ওর জন্য অপেক্ষা করছিলাম! পাশের চেয়ারটা টেনে চাচার রেখে দেওয়া পেপারটায় চোখ বোলাতে লাগলাম! চাচার খোঁচা হজমের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই বসেছি! আমি জানি, চাচা যে কোনও মুহূর্তে কিছু না কিছু নিয়ে খোঁচা মারবেনই! হঠাৎ পেপারে একটা নিউজে চোখ পড়তেই একটা মোক্ষম সুযোগ পেয়ে গেলাম চাচাকে উল্টো খোঁচা মারার! চিন্তা করে দেখলাম চাচা রোজ আমাকে খোঁচা মারে, আজ না হয় আমিই সুযোগটা নিই! বললাম, ‘চাচা, দেখেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে এসেছেন!’
‘হুম পড়লাম এই মাত্র!’

চাচার কথা শেষ না হতেই বললাম, ‘দেখেছেন চাচা, বাংলাদেশে পড়ালেখা করেও একজন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী, আর একজন ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে গেছেন! অথচ আপনি ব্যর্থ, জীবনে কী এমন করলেন?’

আমার কথা শুনে চাচা স্তম্ভিত হয়ে গেছেন! এমন খোঁচা শুনবেন তা তিনি কখনও কল্পনা করেননি! চাচার মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছি আর প্রত্যুত্তরের অপেক্ষা করছি! চাচা শেষমেষ আমতা আমতা করে বললেন, ‘আরে গাধা, আমিও সফল হতে পারতাম, যদি তাদের মতো বিদেশে পড়ালেখার সুযোগ পেতাম!’

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper