ভালোবাসার ফলাফল
হামীম রায়হান
🕐 ৬:২৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০
হঠাৎ করে সেন্টু ভাইয়ের মাথায় কবি হওয়ার ভূত চাপে। যেনতেন ভূত নয়, একেবারে ইবলিশ শয়তান। কবি তার হওয়া চাই-ই চাই! কিন্তু কোনোভাবেই কবিতার লাইন মাথা থেকে বের হয় না। ভাই তবুও দমার পাত্র নন। সেদিন বইমেলায় গিয়ে আমরা অনেক খুঁজেও ‘কবি হওয়ার সহজ উপায়’ ধরনের কোনো বই পেলাম না। হতাশ হয়ে ভাই একটা বই কিনলেন। নাম- ‘একশ একটি প্রেমপত্র’।
ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘এ বই কেনার কারণ কী?’
‘এবার কবি হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায়টা ধরব। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, কবি হতে হলে প্রেম করতে হবে। দাগা খেতে হবে। তবেই মনের বিরহে কবিতা রচিত হবে!’
‘প্রেমের চেষ্টা তো এ পর্যন্ত কম করেননি। কোনোটাতে সফল তো দূরের কথা, মুখে বলতে পর্যন্ত পারলেন না!’
‘কবি বলেছেন- একবার না পারিলে দেখ শতবার।’
মনোবল দেখে বুঝলাম, এবার একটা কিছু হবেই!
এরপর বেশ অনেকদিন ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়নি। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা, তাই ব্যস্তই ছিলাম। একদিন দেখি ভাই খুব তড়িঘড়ি করে বাসায় এলেন! ঘটনা কী জিজ্ঞেস করতেই করুণ কাহিনী শোনালেন।
‘কবি হওয়ার আশায় ও-পাড়ার দুজন মেয়েকে একসঙ্গে প্রেমপত্র দিই। দুজনই প্রস্তাবে রাজি হয়। সময় করে সকাল, বিকাল তাদের সঙ্গে দেখা করি। নানা ধরনের উপহার নিয়ে যাই। ভালো যাচ্ছিল সব। কবিতাও লিখছিলাম ভালো। হঠাৎ সেদিন একজনকে নিয়ে রাজভোজনে গেলাম খেতে। খাওয়ার পর দেখি দ্বিতীয়জন হাজির। এভাবে হাতেনাতে ধরা খেয়ে যাব ভাবিনি। এদিকে মেয়েগুলো হুমকি দিচ্ছে তাদের এক লাখ টাকা চাই। না হলে ইভটিজিংয়ের মামলা দেবে। এদিকে সকাল-সন্ধ্যা পাওনাদারের দৌড়ানি তো আছেই!’
‘এত পাওনাদার এল কোত্থেকে!’
‘মেয়েগুলোকে যে দামি দামি গিফট দিতাম তা কারো কাছ থেকে ধার করেই দিতাম। আমার কি আয় রোজগার আছে? বাবা শুনলে ঘর থেকে বের করে দেবেন!’
‘তাহলে ভালোই হবে। সন্ন্যাসীর মতো ঘুরে ঘুরে ভাবের কবিতা লিখবেন!’
‘রাখ তোর কবিতা। বিপদ থেকে কীভাবে বাঁচব তা-ই বল! আর কবি হতে চাইব না!’
‘আপাতত পাওনাদারদের বোঝান। সময় নিন। মেয়েগুলোকে নিয়ে আমি ভেবে বিকালে জানাব। এখন বাড়ি যান।’
সেন্টু ভাইয়ের চোখে যেন আশার আলো ঝলক দিল। যেতে যেতে গুনগুন করে গান ধরলেন- ভালোবাসা মোরে ভিখারি করেছে, তোমারে করেছে রানি...!
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228