বদহজম
আলম তালুকদার
🕐 ৮:২০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০২০
এক দিনমজুর দিন আনে দিন খায়। খাইটা খাইটা জীবন যায়। এক হাটের দিনে সারাদিন কাজ করে যা টাকা পেয়েছে তাই দিয়ে বাজার করে বাড়ি ফিরছে। বেলা ডুবেছে অনেক আগে। চাঁদনি রাত। মনের আনন্দে গান গায় আর বাড়ির পানে যায়। নিজ গ্রামে ঢুকতেই একটা বেশ বড় বন। বনের পাশ দিয়েই রাস্তা। তো বনে মাখা রাস্তায় এলে তার জলাঞ্জলির বেগ। তো চাল-ডালের ছোট পোটলাটা পেছনে রেখে বনের দিকে মুখ করে জল ছেড়ে দিয়েছে। মুখে একটা বিড়ি।
বিড়ি টানে আর ভারমুক্ত হয়। এর মধ্যে এক চোরা পেছন হতে তার পোটলা নিয়ে ভাগলপুর। কাজ শেষে পেছন ফিরে দেখে তার সর্বনাশ হয়া গেছে। জলত্যাগে গিয়ে সে সব হারাইছে। বাড়িতে যাবে কী নিয়ে? এ বাজার না নিলে তো রান্নাই হবে না!
নিজেকে নিজেই গালাগালি করে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়িতে গিয়ে হাউমাউ করে কান্না শুরু করে। চেয়ারম্যান সাব তার সব কথা শুনে বলে, বুঝলাম। তোর সব চুরি হয়া গেছে। এখন তরে কিছু চাল-ডাল দিতে হবে। তা দিমুনে। কিন্তু আমারে একটা কথা ক’ তো শুনি। তুই হলি কামলার কামলা, তোর আবার মুতন লাগে ক্যান? তাই তো? সমাজে অবস্থানগতভাবে সবারই সব সময় মুতিতে নাই, কুতিতে নাই। কোনো কিছু চাইতেও নাই, পাইতেও নাই!
একটা জোকস আইছে হে!
কয়েক মদারু মদ খাচ্ছে। আড্ডা বেশ জমেছে। একজন বলছে- বল তো, এ দুনিয়ায় আচানক জিনিস কোনটা? একজন বলছে, আচানক জিনিস হইল, রাত বারোটার পর বার হতে মদ গিলে বাসায় তালা খোলার শব্দ কেমতে আমার বউ টের পায়! হালার এইডাই হইল আচানক জিনিস। আরেকজন বলে, দূর ব্যাটা, আমি কই আচানক কোনটা। মদ পান করে রাস্তায় হাঁটার সময়, আমার পা রাস্তার মাঝখানে না গিয়ে হালায় কেমতে ড্রেনের মধ্যে হান্দায় হারাজীবনে এইডাই বুঝবার ভি পারলাম না।
এইডাই বড় আচানক কারবার! তো প্রশ্নকারী এবার বলছে, দূর বেটা তোদেরটা আচানক জিনিস নহে। আচানক জিনিস দ্যাখ, আমার হাতে দেখ। এই যে আমার হাতে শিঙ্গাড়া। কী দেখতাছস? এই দিক দিয়াও বন্ধ, ওইদিক দিয়াও বন্ধ। তিনদিক দিয়াই কইলাম বন্ধ। আমার প্রশ্ন হইল, তিনদিক দিয়া বন্ধ থাকবার পরেও এই শিঙ্গাড়ার মধ্যে আলুটা ঢুকিল কেমতে? এইডাই হইল দুনিয়ার আচানক জিনিস! হে হে হে।
আমারও মনে হয় সবাই সব জায়গায় যেমন ঢুকতে পারে না, তেমনি আবার অনেকেই ঢুকিতে পারে, এবং ঢুকিয়া অনেক কাম আকাম করিয়া গন্ধ বাহির করিয়া নিজেকে জাহির করিতে লজ্জাবোধ করে না! অন্যেরা যে তা বুঝিতে পারে, তাহা তিনি না বুঝিবার ভান করিতে থাকেন। আমার মনে হয় এমন চরিত্রের মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়িতেছে। এবং বাড়িতেই থাকিবে। তবে বদহজমের জোকটা ছেড়ে দিই। পেটের মধ্যে পুটুর করিতেছে।
এক চিড়িয়া, চিড়িয়াখানায় গিয়ে বান্দরের খাঁচার সামনে গিয়ে একটা বড় সাইজের কলা ছুঁড়ে দিয়েছে। তো বান্দর সেটা খপ করে ধরেছে। লোকটি হঠাৎ দেখতে পেল, বান্দরটি প্রথমে কলাটি পরখ করে ছিলতে থাকে। ছিলা শেষে, সে তার পাছা দিয়ে পুস করে আবার বের করে পুরো কলাটা ভক্ষণ করল। লোকটি বিস্মিত হয়ে কেয়ারটেকারকে ঘটনা বিস্তারিত পেশ করল।
তিনি এসে বান্দরকে সনাক্ত করে বললেন, এর একটা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট আছে। গত সপ্তাহে একজন কয়েকটা কদবেল দিয়েছিল, এ বান্দর যেমন পাইছে তেমন খাইছে। খাওয়ার পর শুরু হল ঝামেলা। বদহজম! সাতদিন পরে পাছা ফেটে সেই কদবেল বের হইল। এরপর হতে ওর স্বভাব গেল বদলাইয়া। এখন যা পায় তাই খাওয়ার আগে মাপ দিয়া তারপরে খায়। এই হল ওর পাছার ইতিহাস।
বদহজম হওয়ার নাতিদীর্ঘ ইতিহাস। ও খাবার আগেই সতর্ক, আগে মাপ তারপরে ভাব। তো সমাজের অনেকজনেই মাপ পরিমাপ না করেই খায়, কিন্তু হজম করতে পারে না! সবার সবকিছু সহ্য হয় না। সবকিছু হজমও হয় না। অনেকের ইয়ার্কি ফাজলামি সহ্য হয় না। রম্যরসও সবাই হজম করিতে পারে না!
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228