ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শীতের নানান গীত

আলম তালুকদার
🕐 ৯:০৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ০৬, ২০২০

আমাদের ছয় ঋতুর প্রধান ঋতু শীত। শীতের প্রতিশব্দ খুব বেশি নেই। কোনো এলাকায় জাড়, ঠাণ্ডা টেলকা, ডাইয়া, শৈত্য বা হিম বলা হয়ে থাকে। ‘শীত পায় ভীত তায়’। চরণটি আমাদের কাছে খুব পরিচিত।

শীতের নানান প্রকারভেদ দেখা যায়। তাপমাত্রার সঙ্গে এর খুব বৈরিতা। শীতের স্বভাব হলো তাপমাত্রা কমিয়ে রাখা। যত কম তত কর্মক্ষম। যত মাইনাস তত ইতিহাস। শীতের মধ্যে আবার জোয়ান শীত বুড়া শীতও আছে। ছোকরা ছুকরিও আছে। এটা স্বভাবের ওপর নির্ভরশীল। শীত তাড়ানোর মোক্ষম অস্ত্র শারীরিক পরিশ্রম। যত বস্ত্র তত শীত। শীতে মানুষকে ঘরমুখী করে। গরম কাপড়ের নিচে ডাকে। অনেকে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করে থাকে। শীতে মানুষকে অলসও বানায়। এই রে জোকস আইসা গেছে!

তীব্র কনকনে শীত, মানে হাড় কাঁপাইন্যা ঠাণ্ডা যারে কয় আর কি। রাত দুইটার সময় এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে ফোন কইরা কয়, বন্ধু সখা আমার বড়ই বিপদে আছি। তাড়াতাড়ি আমার বাসায় আয়। দুই-তিনবার সে এই শীতে যেতে পারবে না বলে না করেছে। কিন্তু কাতর অনুরোধে সে একসময় শীতার্ত অবস্থায় খুব কষ্ট করে বন্ধুর বাসায় গিয়ে দেখে দরজা খোলাই আছে। তো সে ভেতরে ঢুকে বন্ধুর বেডরুমে গেল।

দেখে বন্ধুটি লেপের নিচে চুপটি করে শুয়ে আছে। তাকে দেখে সে বলল, সমস্যা খুব বেশি জটিল নয়, তুই যাওয়ার সময় টিভিটা আর ঘরের লাইটটা অফ করে যা বন্ধু, শীতের মধ্যে আর লেপের নিচ থেকে বের হতে মন চায় না! তো বন্ধুটির মনমেজাজ কী হতে পারে একবার চিন্তা করে দেখেন। বন্ধুটি সব অফ করল ঠিকই কিন্তু যাওয়ার সময় বেডরুমের ফ্যানের সুইচটা অন করে বিনা রাগে চলে গেল! মনে মনে বলল, এখন বুঝবি শালা!

আরেকটা আইছে! দশ বছর পর দুই বন্ধুর সঙ্গে দেখা। দুজনের স্বাস্থ্য বেশ মোটাসোটা। একজন আরেকজনকে বলছে, কী রে এত মোটাতাজা কেমনে? দুজনেই হাসে। পরে জানা গেল রহস্য। দুজনের গায় পাঁচ কেজি ওজনের সোয়েটার জাম্পার, জুতা মোজা, কোট টোটে ভরা!

এক ছাত্র আরেকজনকে বলছে, শীতের মধ্যেই স্কুল ভালো। কেন? আরে শীতের কাপড়ের ওপর দিয়ে বেতের আঘাত খুব ডাবতে পারে না!
যারা মাটি কাটে কাঠ চেরাই করে তাদের কাছে জোয়ান শীত ভিড়তে পারে না। জোয়ান শীতের কামড় বড়ই শক্ত। তাদের কাছে জোয়ান শীত বুড়া শীতে রূপান্তরিত হয়ে যায়। শীত হলো পশুপাখি সুন্দর হওয়ার ঋতু। গাছপালা ন্যাড়া হওয়ার ঋতু। শীত হলো শিয়ালের হুক্কাহুয়ার ঋতু। এই রে আবার একটা আইছে।

রাজা তার মন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করছে- রাতের বেলা শিয়াল কেন ডাকে মন্ত্রীমশাই?
-হুজুর আলমপনা ওদের ভীষণ শীত লাগছে তাই।
-তাহলে শিয়ালদের কেন একটা করে কম্বল দেওয়া হচ্ছে না?
-হুজুর কালকেই দেওয়া হবে।

কিন্তু তারপরও হুক্কাহুয়ার ডাক শুনে রাজা বলল, কী ব্যাপার, আজও কেন ডাকে?
-হুজুর সবাই কম্বল পেয়ে আজকে শোকরগুজার মানে আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছে।

কিন্তু তারপরও শিয়াল ডেকে যাচ্ছে! রাজা খুব রেগে গেলেন। তখন মন্ত্রীমশাই বললেন, ওরা যতদিন বাঁচবে ততদিন আপনার জন্য শোকর গুজার করে যাবে, করেই যাবে। এ নিয়ে হুজুর আপনি ভাববেন না। যদি তখন থেকেই রাজারা একটু ভাবতেন তাহলে শীতের সময় এ কম্বল বিতরণে কোনো রকমের সমস্যা হতো না।

যাক শেষ জোকসটা দিয়ে শেষ করি। জোয়ান শীতে কামড়াচ্ছে! শীত কতটা ভয়াবহ ঠাণ্ডা বরফ হতে পারে এই নিয়ে জোকস। এক বিখ্যাত গায়ক হিমালয়ে গিয়ে একটা গান গেয়েছিল। কিন্তু মুখ থেকে কথা বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জমে বরফ হয়ে গেল।

তিনদিন পরে হাওড়া স্টেশনে ট্রেন থেকে নামলে গানটি শুনতে পেলেন! প্রথমে বুঝতে পারেননি। পরে ঘটনা মনে হলো। তাই তো তিনদিন আগে গাওয়া গানের কলি! তাও আবার কলকাতায়? এখন বোঝেন কেমন মহা জোয়ান শীতে গানের কলি জমিয়ে দিয়েছিল!

 

 

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper