ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

স্মরণীয় দুর্ঘটনা

শিমুল শাহিন
🕐 ৮:৪৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৯

বছরটা শেষ হতে আর কয়েকটা ঘণ্টা বাকি। এ বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানানো উপলক্ষেই সবাই মিলে চড়ুইভাতির আয়োজন করেছি। বাসার বাইরে খোলা জায়গাটায় ছোটখাটো সামিয়ানা টানিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে ছোটরা। তুমুল শব্দে সাউন্ড বক্সে বাজছে নানান ধরনের হিন্দি আর বাংলা গান। ছোটদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বড়রাও মেতে উঠেছে আনন্দে!

সবাই বেশ আনন্দ করছে, কিন্তু সিরাজ ভাইকে দেখলাম মুখটা চিমসে করে এককোণে চাদর মুড়ি দিয়ে চেয়ারে বসে আছেন। সিরাজ ভাই চাচাত বড় ভাই, বেশ আনন্দপ্রিয় ও আমুদে মানুষ। তাই এমন পরিবেশে তাকে চুপচাপ দেখে বেশ বেমানানই লাগল! চুপচাপ থাকার কারণ জানতে কাছে গেলাম। বললাম, ‘ভাইয়া, চুপচাপ কেন? ঘটনা কী!’
সিরাজ ভাই মিনমিনিয়ে উত্তর দিলেন, ‘এমনি রে!’

উৎসাহ নিয়ে বললাম, ‘নাহ ভাইয়া, কোনো কারণ তো অবশ্যই আছে!’

কিছুটা চেপে ধরতেই ভাই বললেন, ‘বছরটা শেষ হয়ে গেল কিন্তু মনে রাখার মতো কোনো কিছুই ঘটল না!’

শুনে হাসলাম! কিছুক্ষণ ভাবলাম, তারপর একটা দুষ্টু বুদ্ধি বের করলাম। টেবিলের ওপরে রাখা সিরাজ ভাইয়ের ফোনটা তার অগোচরে নিলাম! মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখলাম ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার মুটকি!’ তারপর মেসেজটা এদিক ওদিক তাকিয়ে দ্রুত সিরাজ ভাইয়ের বউ সোহানা ভাবির নম্বরে পাঠিয়ে দিলাম। মেসেজ পাঠানো শেষে ফোনটা জায়গামতো রেখে লক্ষ রাখতে লাগলাম সিরাজ ভাইয়ের দিকে।

কিছুক্ষণ পর দেখলাম সিরাজ ভাইয়ের ফোনটা বেজে উঠল! ফোনটা কানের কাছে ধরলেন, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মুখাবয়ব পাল্টে গেল! চিন্তিত দেখাল তাকে। ফোনটা কান থেকে নামিয়ে উদ্বিগ্ন চিত্তে বাসার দিকে রওনা দিলেন! তারপর আধা ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে, ভাইয়ের ফেরার কোনো খবর নেই। সোহানা ভাবির বোন রেহানা এসেছে কয়েকদিন হলো। ওকেই সামনে পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তোমার দুলাভাই আসছে না যে!’
সে হাসতে হাসতে বলল, ‘দুলাভাই দৌড়ের ওপর আছে!’
‘কেন?’

‘আপুকে মেসেজে মুটকি লিখে উইশ করেছে। আপু ভীষণ রেগে গেছে!’
কিছু না জানার ভান করে বললাম, ‘তারপর!’
‘রাগে আপু শক্ত কিছু একটা ছুড়ে মেরেছেন দুলাভাইয়ের দিকে, তাতে উনার কপালের কিছুটা কেটে গেছে!’
‘বলো কী!’

‘হু, আর দুলাভাই এখন খুঁজে বেড়াচ্ছে মেসেজটা যে শয়তানি করে আপুকে পাঠিয়েছে- তাকে!’
রেহানার কথা শুনে মানে মানে কেটে পড়লাম কথা না বাড়িয়ে! সিরাজ ভাই যদি জানতে পারে ঘটনার মূলে আমি, তবে ভাই-ভাবি উল্টো আমাকে দৌড়ানি দেবে!

ঘণ্টাখানেক পর দেখলাম সিরাজ ভাই বাসা থেকে বের হলেন! মাথায় ছোটখাটো একটা ব্যান্ডেজ। সামনে পড়তেই জিজ্ঞেস করলাম, ‘কী হইছে মাথায়?’
‘তেমন কিছু না রে! পা পিছলে বাথরুমে পড়ে গেছিলাম।’

মুখটা বিমর্ষ করে বললাম, ‘আহারে! তা এ বছরে শেষমেশ মনে রাখার মতো কিছু হলো?’ ভাই হাসলেন। ব্যান্ডেজ করা কাটা জায়গাটার দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে বললেন, ‘দেখসিস না? এই যে এইটা!’

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper