ক্যাসি? নো! তাহলে ক্যাসি হো!
আলম তালুকদার
🕐 ২:২৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০১, ২০১৯
এটা মেইড ইন ইতালি। কাজেই করতে চায় মিতালি। ক্যাসিনো সোজা বাংলা হলো গিয়ে জুয়াখেলার আসর। সাধারণত নামিদামি হোটেলে, রেস্টুরেন্টে, শপিংমলে বা দর্শনীয় স্থানের আশপাশে এর অবস্থান থাকে। জুয়াড়িদের আকৃষ্ট করার জন্য সুন্দরী মডেলরাও প্রদর্শিত হয়ে থাকে।
জুয়াখেলা সব দেশেই কমবেশি প্রচলন আছে। বিভিন্ন ফর্মে এর চাহিদা ব্যাপক। ১৬৩৮ সালে ইতালির ভ্যানিসে রিডেট্র নামে এক ব্যক্তি প্রথমে এই ক্যাসিনো তৈরি করেছিল বলে ইতিহাসে বলে। সামাজিক অবক্ষয়ের কথা চিন্তা করে কর্তৃপক্ষ ১৭৭৪ সালে এটা বন্ধ করে দেয়। বিশ শতকে এই ক্যাসিনো জুয়া যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র ছড়িয়ে যায়। আচ্ছা ইতিহাস বাদ। জুয়ার নেশা মানে আপনি বরবাদ! এটা সবাই কমবেশি জানে। বাংলাদেশে ক্যাসিনো খেলা আইনত নিষিদ্ধ। কিন্তু নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের আসক্তি তার রক্তের মধ্যে মিশে আছে।
নেশায় যারা মত্ত হয়ে যায় তারা একসময় পথের ফকির হয়ে যায়। এই কারণে রাষ্ট্র তার নাগরিকদের জন্য এটা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে থাকে। অনেকে তাস দিয়ে, ক্যারাম দিয়ে বা দাবা দিয়েও জুয়া খেলে থাকে। কিছু কিছু লোক আছে যেখানে সেখানে বাজি ধরে। আগামী যখন মানুষ জানতে পারে না, তখন তাকে জানার জন্য রিস্ক নিতেই হয়। অনেকের মতে নরনারীর বিবাহটাও একটা জুয়া! কী হবে না জেনেই ঝাঁপিয়ে পড়ে! এই রে জোকস এসেছে!
এক অফিসের পিয়ন খুবই চাল্লু। কথায় কথায় বাজি ধরে আর জিতে যায়। যেমন আজকে বসের মেজাজ খারাপ থাকবে না ভালো থাকবে এটার ওপর দশ টাকা বাজি। তো সহকর্মীরা মজার খেলায় আসে। বেশ মজা হয়। তো একবার হেড অফিস থেকে বদমেজাজি এক বস তাদের অফিসে বদলি হয়ে এসেছেন। তো হেড অফিসের এক পিয়ন তাকে বলেছে, ওই বসের পশ্চাদ্দেশে যদি আঙুল দিতে পারে তাহলে তাকে বিশ হাজার টাকা দেওয়া হবে। ব্যাটা আমার জীবনটা বরবাদ করে দিছে! ব্যস দুজনের মধ্যে বাজি হয়ে গেল।
নতুন বসকে বুঝতে একমাস গেল। যেহেতু সে বসের ব্যক্তিগত পিয়ন সেহেতু তার প্রবেশ যখন তখন। বাসাতেও তার অবাধ প্রবেশ। তো কয়েকদিন সে তার বসের দিকে মাঝে মাঝে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। একদিন বস বলে, ‘এই ব্যাটা, তুই আমার দিকে এইভাবে ভ্যাবলা হয়ে তাকাস কেন? সমস্যা কী?’
‘না স্যার, এমনি এমনি আপনাকে দেখি।’
‘আমারে এইভাবে দেখবি কেন? দেখার মতো কী আছে!’ আরেক দিন তাকানোর জন্য তার খাস কামরায় পাকড়াও করে ধরেছে। বস বলেন, ‘আজ বলতেই হবে তুই কেন আমার দিকে অবাক তাকিয়ে থাকিস?’
সে মাথা চুলকায় আর কয়, ‘আপনি যদি বেয়াদবি না নেন, তাহলে কইতে পারি।’
‘আচ্ছা ক, কিছু মনে করব না।’
‘স্যার কইছিলাম কি, আপনি একজন বড় ডাক্তার দেখান।’
‘কেন? আমার তো কোনো অসুখ নাই।’
‘আছে স্যার আছে। এই জন্যই তো স্যার আমি আপনার দিকে লক্ষ রাখছি।’
‘আমি জানি আমার অসুখ নাই, তুই ডাক্তার না কবিরাজ না! তুই কস আমার অসুখ আছে! এই ব্যাটা ফাজিল ভাগ। এরপরে তোরে খাগড়াছড়ি পাঠাইয়া দিব।’
‘স্যার তা দিতে পারেন। সমস্যা নাই। তবে আমার মনে হয় আপনার পাইলস আছে। আপনি ডাক্তার দেখান।’
‘আরে বেটা আমি জানি আমার পাইলস নাই। ডাক্তার দেখাব কেন?’
‘আমার মনে হয় আছে স্যার। পাইলসের লক্ষণ আপনার ভেতরে পুরামাত্রায় আছে। পরীক্ষা করে আসেন। যদি না থাকে আমি গরিব পিয়ন হিসেবে দশ হাজার টাকা আপনাকে দিয়া দিমু। চ্যালেঞ্জ স্যার।’
ওই দিন এই পর্যন্তই। তবে বসের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। আবার মনের মধ্যে খচখচানিও শুরু হলো। বেটা পিয়ন সে কনফার্ম। দশ হাজার টাকা বাজি! তো সে ভাবল, আগে পরীক্ষা করে আসি। একদিন ডাক্তারের কাছে গিয়ে দেখিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে আসে। অফিসে এসেই তাকে বলে, ‘কনফার্ম, আমার পাইলস নাই। এই যে সার্টিফিকেট।’
চাল্লুবাজ বলে, ‘স্যার, সার্টিফিকেটে হবে না। আমি নিজে না দেখলে হবে না।’
‘কী? নিজে দেখবি মানে? শালার পুত কয় কী?’
‘স্যার দশ হাজার টাকা কিন্তু এই বাজারে কম টাকা নয়। আমার দুই মাসের বেতন! আপনি বাথরুমে যান, আমি পট করে আপনার ওই জায়গায় এই আঙুল দিয়া চেক করমু পাইলস আছে কি নাই।’
যাক শেষ পর্যন্ত বেটাকে সাইজ করার জন্য ওর অনুমান মিথ্যা বলে প্রমাণিত করার জন্য সে বাথরুমে গেল এবং পিয়ন আগলা পাছায় আঙুল দিয়ে দেখল পাইলস নাই! সে সঙ্গে সঙ্গে বসকে দশ হাজার টাকা দিয়া দিল। এই ঘটনার পরে পিয়ন ওই পিয়নের কাছ থেকে বিশ হাজার পেল। তার নিট দশ হাজার টাকা লাভ। হাঁ হাঁ হাঁ।
এইডাও কিন্তু জুয়া! জুয়ার আসল দর্শনটা কী? লাভ। নগদ কিছু হাতে পাওয়া। পরিশ্রম না করে বিনোদনের মধ্যে ফটকা লাভ। যেখানে লাভ আছে সেখানে ক্ষতিও আছে। আশায় আশায় নানারকমভাবে কিছু পাওয়ার তীব্র আকাক্সক্ষায় থাকা। এই হিসেবে বেঁচে থাকা একপ্রকার জুয়াই বটে। কিন্তু ক্যাসিনোতে নানারকম আইনগত সমস্যা আছে। এই কারণে এটা অপরাধ। দেশের নাগরিক ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
পাঠকরা নিশ্চয়ই কেউ জুয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন! তো এই যে এইসব অন্যায় অপকর্ম হচ্ছে, তা কীভাবে জানলেন? একজন বলল, নিজের কানে শুনেছি। খবরের কাগজে পড়েছি। আচ্ছা ছাপা অক্ষরে যা পড়বেন সব কি সত্যি? মনে হয় না। আর শোনা কথায় কেন বিশ্বাস করবেন? আমি এই জন্যই আজকের মতো লেখা দিলাম বাদ, সবাইকে দশ দরিয়া ধন্যবাদ।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228