বাজেট হেভিওয়েট!
গোলাম মোর্তুজা
🕐 ২:০৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০১৯
সময়ের আলাপনে, এ দেশ চলে বাজেট নিয়ে সংশ্লেষণ আর বিশ্লেষণে। হাসি হাসি মুখে, বাজেটের সুখে বাজেটকর্তা হন ধন্য। দেশবাসীও হন বাজেটে সম্পন্ন।
হয়ে গেল বাজেট, দুদিন পর গেজেট। বিপুল দুর্বল শাহ একজন সরকারি কর্মকর্তা। কর্মকর্তা থাকাকালে সরকারি অর্থকড়ি সরিয়েছেন নিজের মনে করে, সকাল, দুপুর, বিকালে এমনকি রাত-বিরাতেও। তিনি সবাইকে শুধু বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাননি, দেখিয়েছেন হাতের সর্বাঙ্গুলিই।
আজ সংসারে থাকেন হাত জড়িয়ে, ধার্মিকতায় মুখিয়ে। দেশের অখ্যাত ব্যাংক দুটিতে সুখ্যাতি সৃষ্টি করে রেখেছেন। কিছু টাকা তাও আবার স্ত্রী আর ছেলেপুলের নামে।
এতেই তিনি সরকারকে ভাবিয়ে তুলেছেন, ‘এত বড় কর্মের কর্তা হয়েও কি সাদা আর সিধা, মন ধাঁধা জীবন সে যেন এক উদাহরণ।’ বিপুল দুর্বল শাহ টাকার বালিশে শুয়ে, তোষকে টাকার বান্ডিল রেখে রাখেন তা দেখে দেখে। উনি বাসায় থাকলে ঘর থাকে উন্মুক্ত, না থাকলে থাকে ঘর সুপ্ত। স্ত্রীকেও নেই বিশ্বাস, যতই পান আশ্বাস।
ঘরে যে টাকা আছে তা দিয়ে চলবেই তিন পুরুষ-টাকার হিসাব। সরকারকে দেবেন এমন নন তিনি কাপুরুষ। এক দিন স্ত্রী স্বামীকে বললেন, ‘শোনো একটা কথা, বাড়িতে রেখো না এত টাকা। দিনও খারাপ, রাতও খারাপ, কখন কী হয়ে যায়, সময় বয়ে যায়। তা ছাড়া সরকারের ভাব ও মতি খারাপ বড় বড় কর্তাদের পেছনে লেগেই আছেন। শেষ বয়সে কি না, নিচু করে শিনা, চৌদ্দ শিকের মাঝেই বুঝি না। এবার বলি শোনো, করো না দুনোমনো, টাকা বের করো দুমড়ানো। ব্যাংকে রাখো। তোমার ভাবনাই নয়, তোমার টাকার ভাবনাই ঘুম আসে না কো রাতে, লোভ পারি না সামলাতে।’
স্ত্রীর কথায় বিপুল দুর্বল শাহের পিলে যায় চমকে, নিঃশ্বাস যায় থমকে। মাথা হয় হ্যাং যেন কুনোব্যাঙ। স্ত্রীর দিকে তাকায় যেন ভাবখানি ভোদাই, ‘কে বলেছে তোমায়? টাকা আছে আমার। আর শোনো টাকা যদি ব্যাংকে রাখি, সরকার যাবে ভড়কে, আমার টাকা খাওয়াবে অন্যকে। পারব না তা সহ্য করতে এর চেয়ে মরব হাসতে হাসতে।’
কালবিলম্ব না করে, বাজেটের পর পরে, ব্যবস্থা নিলেন ধীরে ধীরে। সরকারের ‘মুনেধ’ (কাল্পনিক) মুরোদ নেই ধরবার সংস্থটি এত দিন কিছুই করতে পারেনি, আজও পারবে না। তবুও কোন সরকার ক্ষমতার দাপটে, সাঁড়াশি অভিযানে নামেন তাহলে ইজ্জত থাকবে না। সব বের হয়ে যাবে। দাম হড়হড় করে কমে যাবে ডেইরি, পোলট্রি পণ্য, রুটি-বিস্কুট, কৃষিযন্ত্র, স্বর্ণ, ক্যান্সারের ওষুধ ইত্যাদির।
বিপুল দুর্বল শাহ খবর দেখে হাসলেন দেশটাকে হাস্যকর করে মনে মনে ভাবলেন, ‘হায়রে দেশ! এ দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ে আর যা না হলেও মানুষের চলে তার দাম কমে এমনিভাবে ঢুকে যায় জীবন যমে। দেশ এগুবে কী করে ভরে গেল লোকাচারে। বিপুল দুর্বল শাহ এক দিন গেলেন বাজারে সাদা টাকা হাতে করে। যা বাড়ার বেড়ে গেছে, ঘোষণার পাছে পাছে। কিন্তু কোনো পণ্যের দাম কমেনি যে ভুলে ভরা, মনকাড়া, ছন্নছাড়া এ দেশে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228