ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বালিশ নাকি বালীশ

আলম তালুকদার
🕐 ৪:১৫ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০১৯

তিন অক্ষরে নাম যার সর্বজনে চায়, মাঝের অক্ষর কাইটা দিলে ব্যথা পায়! তাও ভালো চন্দ্রবিন্দু ছাড়া! চন্দ্রবিন্দু থাকলে আরও বেশি মালুম হতো! বালিশ মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় পদার্থ! ইহা কিছুতেই অপদার্থ নহে! ব্যবহারকারী হতে পারে! ইদানীং বালিশ আলোচনার শীর্ষে দেশে অবস্থান করছে। যদিও এর সব সময়ের অবস্থান শিয়রে বা দু’পায়ের চিপায় চাপায়! বালিশ নিয়ে নানা রকম নালিশ এবং কাউকে কাউকে পালিশ করার নানা আয়োজনে সালিশ মামলা মোকাদ্দমা রুজু হওয়ার পথে বলে জানা যাচ্ছে। ভেতরে যাওয়ার আগে বালিশের কতগুলো প্রতিশব্দ আছে সেই তথ্য তালাশটা করে আসি।

উপাধান, উপধান উপবর্হ, উচ্ছীশক, মস্তকাধান, গণ্ডু, উপাধানীয়, শিথান, তাকিয়া, গ্রিদা, গির্দা; কুশন, পিলো, এয়ারপিলো, হাওয়া বালিশ, পাশ বালিশ, কোলবালিশ, অসিগণ্ড, গালবালিশ ও গণ্ডোপধান। বালিশের যে এত প্রতিশব্দ আছে তা আগে জানতামই না! বিভিন্ন শব্দের নামে বালিশকে ডাকলে আরামের হেরফের না থাকলেও অন্য কোনো বিশেষ কারণ থাকতে পারে।

আর বালীশ? মূত্রনিরোধ, মূত্রবন্ধ, পাথুরি, মূত্রাঘাত ইত্যাদি। তো বালিশ বেশি দামি হলে বালীশের ধকল পোহাতে হতে পারে! সব জানার দরকারটা কী? একটা বালিশের দাম ৫৭৫৬ টাকা! এ খবরে সব কাঁপিয়া উঠিয়াছে! এত দিনে বোঝা গেল বাঙালির পরিবর্তন সব জায়গায় ঠিকমতোন হতে পারেনি! কোটি কোটি টাকা দিয়ে বাড়ি গাড়ি ও ভ্রমণ কত কী? পুত্রকন্যার বিয়েতে কোটি টাকার অপচয় কোনো কথা নাই! মাত্র কয়েক হাজার টাকার বালিশ নিয়ে কত ছিঁড়াছিঁড়ি শুরু হইয়া গেল? বিস্ময়কর ভয়াবহ ব্যাপার!

অভিধানে বালিশের অর্থ হলো তুলাভরা যে নরম আঁধারে মাথা রেখে শোয়া হয়। আজকাল তুলা বাদে বাতাসও ভরা হয়। এই মারছে হে, আমাকে যে ১৯৭১ টান মেরে দিল! সেই মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহ যুদ্ধদিনের কথা! বালিশ ছাড়াও যে ঘুমানো যায়। ঘুমাতে আবার বালিশ লাগে? তিন দিন তিন রাত খাওয়া-দাওয়ার খবর নাই, ঘুমের হদিস নাই, গোসলের খবর নাই। তারপর চার দিনের পর একটু গোসল, একটু খাওয়া, কয়েক ঘণ্টা ঘুমানোর সুযোগ! উ! কী আরাম আর আনন্দ! আহা বালিশ ছাড়া ঘুমে এত আরাম! হাতের ওপর কারও মাথা। ইটের ওপরে কারও মাথা রাইফেলের বাঁটের ওপর বা ম্যাগাজিনের ওপরে কারও মাথা কোনোভাবে ঠাঁই নিয়ে ঘুমাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারা ওই সময় এত বালিশ পাবে কই? তাই তো কই ঘুমাতে আবার বালিশ লাগেনি?

আরে লাগে হে তালুকদার লাগে। টাকা থাকলে তালইর মেজবানি করাও যায়। তো বালিশ নিয়ে প্রথম যে জোকসটা প্রসব করব খেয়ালে পড়বেন। বালিশ কত জায়গায় দরকার হতে পারে! এক স্বামীর প্রধান কাজ হলো, বউয়ের রান্নায় ত্রুটি বের করা। দৈনিক দু’একটি দোষ বের করে আর বউকে কোণঠাসা করে। বউও এটাকে একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে দোষমুক্ত রান্নার চেষ্টা করতে থাকে।

একপর্যায়ে সফল হয়েছে। ঐদিন স্বামীপ্রবর রান্নার কোনো ত্রুটি বের করতে পারছে না, পারছেই না! বউ একটু গর্ব করে বলে কই, আজকে বল? কী দোষ আছে? নাই। হে হে আজকে কোনোই ত্রুটি নাই। আমাকে নোবেল পুরস্কার দিতেই হবে। স্বামী তো সহজেই হারতে রাজি নয়। ঘরের এদিক-ওদিক তাকিয়ে একটা বিড়াল দেখে খুশি হয়ে বলল, ওই দেখো বিড়ালটা ঘুমাচ্ছে। গিন্নি বলে, হুঁ, ঘুমাচ্ছে। দেখছি তো। সমস্যা কী?

স্বামী বলছে, না সব ঠিক আছে। তুমি বিড়ালটার আরামে ঘুমানোর জন্য একটা বালিশ দিতে পারতে। এটাই আজকে রান্নার প্রধান ত্রুটি। আরেক লোক স্বপ্নে দেখে খুব পোলাও কোরমা খাচ্ছে। যত খায় তত মজা পায়, আরও খায়। খাইতে খাইতে তুনাধুনা করার পর ঘুম থেকে চেতন পেয়ে দেখে তার বালিশের বারোটা বাইজা গেছে। ফাটাফাই অবস্থা! সব বালিশ পোষ মানে না!

 

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper