ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শরম আলির গরম কাহন

গোলাম মোর্তুজা
🕐 ২:৪১ অপরাহ্ণ, মে ১৪, ২০১৯

গরমে শরম লাগে নাকে নয়, শরীরে। তাই গা থেকে পোশাক খুলে গাঁ ঘোরে গরম আলি। ছোটবেলায় বাবা-মা দুটি খাসি কেটে নাম রেখেছিলেন শরম আলি। সে সময়ে অনেক শরম ছিল। বিয়ের পর থেকে শরম আলির খাসিকাটা নাম পরিবর্তন হয়ে গেছে। সে সময়ে অনেক কষ্টে-সৃষ্টে বাবা জবের আলি ধরিমারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিয়নের পদে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন। আজ তিনি নেই। চলে গেছেন জীবনের শেষে মরণের দেশে।

কী শীত, কী গ্রীষ্ম সব সময়ই গরম লাগে গরম আলিকে। রাতের বেলায় মশারি টাঙাতে দেন না। এতে নাকি তার দম বন্ধ হয়ে আসে। কবর কবর ভয় লাগে জবর।

আবার যতই শীত আসুক, শীত বেচারাই জবুথবু হয়ে কাবু ঢঙে পালায়। শীতের সময় এক দিন গরম আলি রাতে বিছানায় যাওয়ার প্রাক্কালে বেক্কলের মতো ফ্যান দিলেন। স্ত্রী তিরিক্ষি মেজাজে বললেন, ‘কী যে মরণের গরম লাগে। জানে-মনে ঘেন্না ধরে গেল। কাঁথা-কম্বল শরীরে না জড়ালে ঘুম আসে না আর উনার ফ্যান না হলে চলে না।’

গরম আলির অবস্থা যত ততই বোল, কান করেছি ঢোল। স্ত্রী ভাবে স্বামী বুঝি পটোল তুলতে যাবে। মনের আশপাশ তাই হাঁসফাঁস। এক দিন ছেলে তদবিরকে মা বিলকন্যা বললেন, ‘বাবা তোমার বাবারে ডাক্তারের কাছে লহনের দরকার। আজি লইয়া চলদিনি।’ গরম আলিকে ডাক্তারের কাছে নেওয়া হলো। ডাক্তার শিবপ্রসাদ প্রেসার মাপলেন। চোখের পাতা টেনে তুলে দেখলেন। প্রসাদ সাহেব জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী সমস্যা বলেন?’

ঠিক তখনই গরম আলি গরমে, চিৎকার দেয় মরমে, কেউ এমন শোনেনি জনমে। এ অবস্থা দেখে ডাক্তার খেপে, কথা বললেন ধমকে, ‘কী হয়েছে চিক্কুর কেন? কথা বলুন হেসে।’ গরম আলির ছেলে তদবির, বাবাকে দুই হাত ধরে চেপে-কথা বললেন মেপে ‘স্যার, বাবার সবসময় গরম লাগে।

গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরতে, বাবার চলে পাখাতে। আর রাতে ঘুমালে শুনতে পান না...।’ ডাক্তার সাহেব তদবিরকেও একটা দিল রামধমক এটা এ সময়ের চমক। ‘বের হও, বেকুবের দল, বাবা-ছেলে দুজনেরই মাথার স্ক্রু ঢিল হয়ে গেছে।’

গরম আলি বাড়িতে এসে আরও ঘামছে। মনে হয় এইমাত্র হাঁপর চালিয়ে গরমে পাঁপর হয়ে গেছে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper