সিরিয়াল মানেই কি সিরিয়াস!
আলম তালুকদার
🕐 ১২:৩৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
সিরিয়াল শব্দটি ইংরেজি হলেও টেবিল, চেয়ারের মতো এ শব্দও বাংলিশ হয়ে গেছে। এখন আর এমন কেউ নেই যে ইংরেজি শব্দটির অর্থ বোঝেন না। অনেকে হয়তো এর বাংলা সঠিকভাবে বলতে পারবে না। তবে সিরিয়াল জিনিসটা কী এটা সবাই মালুম করতে পারে। দৈনন্দিন জীবনে আমরা ডাক্তারের সিরিয়াল, টিকিট কাটার সিরিয়াল, ইন্টারভিউ সিরিয়াল এসবের সঙ্গে কমবেশি সংশ্লিষ্ট। আমি সব সিরিয়ালের কথা নিয়ে লিখছি না। কেবল ওই ভারতীয় সিরিয়ালের কথাই সিরিয়াসলি আপনাদের কাছে নিবেদন করব।
ইতোমধ্যে কেউ কেউ এটাকে সামাজিক ব্যাধি হিসেবে অবহিত করে যাচ্ছে। কেউ কেউ বলে, নির্দোষ বিনোদন।
বিশেষত গৃহবধূরা এ সিরিয়ালে মত্ত হয়ে সংসারের প্রতি উদাসীন হয়ে যাচ্ছে। অনেক গৃহকর্তাও তার পরিবারের প্রতি যথেষ্ট দায়িত্ববান নয় বলে বাজারে রটনা আছে। এসব ভারতীয় ছবি দেখে অনেকের মনে সন্দেহ নামক বিষবৃক্ষ রোপিত হয়েছে। যাক আমি তো সিরিয়াস কথা বলার লোক না। আমি আনন্দে থাকতে চাই আর অন্যকে আনন্দ বিতরণ করতে চাই। তো হয়ে যাক দু’একটি জোকস।
বিয়ের আগে মেয়ে-ছেলের মাঝে যৌতুক নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। মেয়েটি ছেলেটির কাছে জানতে চাচ্ছে সে শ্বশুরবাড়ি থেকে কী কী যৌতুক প্রত্যাশা করে।
মেয়ে : বিয়ের সময় তুমি কী কী পেতে চাও?
ছেলে : তেমন কিছু না। শুধু একটা জিনিস চাইব।
মেয়ে : কী? ৩২ ইঞ্চি এলইডি?
ছেলে : না।
মেয়ে : তাহলে ডিএসএলআর?
ছেলে : ধুর! এসব না।
মেয়ে : তাহলে ফ্রিজ? বড় নাকি মিডিয়াম? আমার অবশ্য মিডিয়ামেই আরাম লাগে। বেশি বড় হলে আমার অস্বস্তি লাগে বুঝলে?
ছেলে : না, না ফ্রিজ ট্রিজ না।
মেয়ে : তাহলে নিশ্চয়ই এসি চাই?
ছেলে : আরে না! এসি টেসি নয়। এসব কিছু না!
মেয়ে : ও বুঝেছি। বিয়ের পরে আমাকে নিয়ে বিদেশে হানিমুনে যাবে এই তো? এটা বাবার জন্য কোনো ব্যাপারই নয়।
ছেলে : আরে কী যে বলো না! হানিমুন টানিমুন এসব কিচ্ছু না!
মেয়ে : (অধিকতর বিস্মিত হয়ে) তাহলে তুমি কী চাও? একটু ঝেড়ে কেশে খোলাসা করে প্লিজ বলো।
ছেলে : আমার খুবই সামান্য দাবি, বিয়ের পরে তুমি কোনো দিন ভারতীয় সিরিয়াল দেখিতে পারিবে না! এমনকি রাতেও দেখিতে পারিবে না!
পাঠক, কেমন জমছে নাটিকা? তো আরেকটা সিরিয়াল জোকস আছে যে! বলব? আচ্ছা বলি। মানে লেখি। কষ্ট করে শুধু চোখ বোলাবেন।
এক গৃহবধূ নিয়মিত ভারতীয় সিরিয়াল দেখেন। তার স্বামী অফিস শেষে রাতে বাসায় ফেরেন। তো সিরিয়াল দেখতে দেখতে পাত্র-পাত্রীর চরিত্র বিশ্লেষণ করে ধারণা হলো তার চালাক চতুর স্মার্ট স্বামীটি পরকীয়া প্রেমে মজেছে কি না তা একটু পরীক্ষা করা দরকার। তো নেমে গেলেন অভিযানে। রাতে বাসায় ফিরলে সে তার কোট তালাশ করে একদিন লম্বা একটা চুল আবিষ্কার করতে সমর্থ হলেন। চার্জ করলে স্বামী বলল, চুলটা তো তোমারও হতে পারে!
তো জমল না। আবার দু’একদিন পরে কোট থেকে ছোট একটা চুল খুঁজে পেলেন। এবার বলল, ‘ও তুমি আজকাল ববকাটিং মেয়েদের সঙ্গে মেলামেশা করছো? জবাবে স্বামী বলল, ‘আরে এটা তো আমার চুলও হতে পারে, নাকি? এরপর স্বামী সচেতন হয়ে গেল। বাসায় ঢোকার আগে কোট শার্ট বেশ ভালোভাবে চেক-রিচেক করে বাসায় প্রবেশ করে। কয়েকদিন চুল না পেয়ে বধূটি হতাশ হয়ে কান্না শুরু করে দিল। তো স্বামী বেচারা জিজ্ঞেস করল, এবার কি পেলে?
কান্নাজড়িত কণ্ঠে বধূটি বলল, ‘ছি! ছি! এই তোমার রুচি? তুমি আজকাল টাকু মেয়েদের সঙ্গে...!
লে হালুয়া। সিরিয়াল দিচ্ছে কেমুন কালুয়া?
এবার অন্যরকম একটা সিরিয়ালের কথা বলে বিদায় নিতে চাই। সিরিয়ালে এতক্ষণ থাকা ঠিক হবে না।
যারা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তাদের কাছে রোগী দেখাতে হলে দু’এক মাস আগে সিরিয়াল দিতে হয়। তো একবার এক মাতার ছেলের জন্য ডাক্তারের কাছে ফোন করে সিরিয়াল চেয়েছেন। জানা গেল, এক মাসের আগে তিনি দেখতে পারবেন না। তো মহিলা বলল, এক মাস আসার আগেই যদি আমার ছেলের কিছু হয়ে যায়? তখন কী হবে?
ডাক্তার খুব নির্লিপ্তভাবে বললেন, ‘কোনো সমস্যা নেই, এ ক্ষেত্রে আপনি টেনশন নেবেন না, এক কথায় আপনি সিরিয়াল ক্যানসেল করতে পারবেন’!
অলংকরণ : মানিক বর্মন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228