মেগা ক্যাচাল
মো. গোলাম মোর্তুজা
🕐 ১২:২০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
রাত নেই, দিন নেই, বেবুঝের মান নেই শুধু জীবন খোঁজা হন্যে হয়ে। মনোহারিণী, আশা ছাড়িনি এ সংসারে স্থানের অভাব থাকলেও শয়তানের বাক্স, জ্ঞানের টক শো (টিভি) ছাড়া আমাদের এক দিনও চলে না।
সুজা পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি। বাড়ির বউ ও মেয়েরা যখন অন্যের বাড়িতে যায় টিভিতে জীবন মানে ভারতের নাটক বাংলা দেখতে। তখন লজ্জা লাগে। শরম এসে ধাক্কা দেয় মরমে। কয়েক মাস থেকেই তিনি অর্থ জোগানে ব্যস্ত কিন্তু জোগান চাহিদা বিব্রত। তবুও পণ, হেব্বি টিভি কিনবেন তিনি। চব্বিশ ইঞ্চি রঙিন, দাম চৌদ্দ হাজার, প্রথম জমা যা পারবেন তাই, আর বাকি টাকা তিন মাসে বিনা লাভে কিস্তি- দারুণ ফিরিস্তি। সুজা একদিন সোজা টিভি নিয়ে হাজির হলেন। সবাই হাসলেন- মনের জলে ভাসলেন। প্রতিদিন রাতে বাড়ি ফিরলেও টিভি বন্ধ হয় না- চলে ভিনদেশি সিরিয়ালের ধামাকা। সুজাও বসিয়ে দেয় রাম ধমক। কত আর সহ্য করা। ধৈর্যের দাঁত ভেঙে যাওয়া। সিরিয়ালের ঠেলায়, বিতৃষ্ণার চেলায় কে যেন আগুন ধরিয়ে দেয়। সুজা সাহেব হাত কচলাতে কচলাতে কথা ছুড়ে দিলেন, ‘বুধ থেকে দেখছি তোমরা একই চ্যানেলে কিসে যেন বুঁদ হয়ে আছো, জানে ঘেন্না ধরে যায়। ও সময় মেয়েদের পড়াতে পারো না? এগুলো বাদ দাও নইলে...।’
সুজা সাহেবের কথার তুবড়িতে মালেহা রেগে-মেগে বসা থেকে দাঁড়িয়ে, মনটাকে হাঁকিয়ে বললেন, ‘মেয়েরা একটু নাটক দেখছে তো কী হয়েছে? পড়াশোনা তো পরেও পড়ে নেওয়া যাবে কিন্তু এ নাটক শেষ হলে তো আর পাওয়া যাবে না। তুমি ঘরে যাও।’ স্ত্রীর কথা শুনে সুজা সাহেবের পিলে চমকে যায়, মন ভড়কে যায়। ভালোর বাচ্চা গাধা, সাদা করে কী বলে রে! সে রাতে মা ও মেয়েরা সিরিয়ালকে সিরিয়াসভাবে বিদায় দেয়। সবাই সবার কাজে ন্যস্ত। সুজা সাহেব সোজা হয়ে ঘরেই পরিব্যাপ্ত। মালেহা মেয়েদের সঙ্গে রাত্রিযাপন করেছেন। আর কিছু না গোস্সা, মনে পড়েছে ফোসকা, ‘স্বামী কেন মেয়েদের সামনে সমানে এভাবে বললো?’
সকাল হলে, কাজের ঢলে সুজা সাহেব চলেন তালে। ছোট মেয়ে ফুঁক করে দেখে নিলো বাবা নেই। সবাইকে খবর দিলো। টিভি চালু হলো। রাতের টিভি মেগা সিরিয়াল দিনের বেলাতেও রিপিট হচ্ছে। কেউ তো করেনি পিটিশন, তবে কেনইবা এমন সল্যুশন!
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228