৩০ ডিসেম্বর
বিশ্বজিৎ দাস
🕐 ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১১, ২০১৮
অফিসে কাজ করছি।
ফোন বেজে উঠল।
শরীফ ভাইয়ের ফোন। এ দলের স্থানীয় নেতা। বেশ পরিচিত মুখ। হাসিমুখ।
কেউ তদবির নিয়ে গেলে খুশি হন। টাকার কথা বললে তার মুখের হাসি চওড়া হয়। টাকা অফার করলে হাসি আরও চওড়া হয়। টাকা হাতে পেলে গম্ভীর হয়ে যান। বলেন, দেখি কী করতে পারি। না পারলে টাকা ফেরত পাবেন। তারপরের ইতিহাস অবশ্য কেউ জানে না বা বলে না।
ভয়ে ভয়ে ফোন ধরলাম-‘ভাই, আসসালামু আলাইকুম।’
সালামের জবাব দিয়ে বললাম, ‘শরীফ ভাই খবর কী?’
‘ভাই, এ দলের মনোনয়ন এবার পাচ্ছিই। একটু হেল্প করিয়েন।’
মনে মনে শঙ্কিত হলাম। মাত্র মাস দুয়েক আগেই তাকে হাজার দশেক দিয়েছিলাম। উপলক্ষ ছিল কয়েকজন এতিম মেয়ের বিয়ে। পরে ফেসবুক পড়ে জেনেছিলাম, স্থানীয় এমপি নাকি নিজ খরচে বিয়েগুলো দিয়েছেন। তখন শরীফ ভাই ছিলেন এমপির কাছের লোক।
‘কেমন হেল্প?’
‘সবাই তো দুই লাখ করে দিচ্ছে। আপনি না হয় এক লাখ দিয়েন।’
‘এক লাখ! এক লাখ তো বেতনই পাই না।’
‘আমি টাকার কথা বলছি না।’
‘তবে?’
‘আপনি আমার এক লাখ হ্যান্ডবিলের টাকা দিয়েন।’
এক লাখ হ্যান্ডবিলের বিল কত টাকা আসবে-চিন্তা করলাম।
‘শরীফ ভাই, একটু কি কমানো যায় না?’ ভয়ে ভয়ে বললাম।
জবাবে শরীফ ভাই ফোন রেখে দিলেন।
দুই.
‘শরীফ ভাই কী খবর?’ ফোন ধরে বললাম।
‘ভাই, এ দলে তো মনোনয়ন পেলাম না। তাই ডি দলে যোগ দিলাম।’
‘বি আর সি দল কী দোষ করল?’ হালকা রসিকতার সুরে বললাম।
‘বি দলের নিজেদের মধ্যেই তো মনোনয়ন নিয়ে মারামারি। আর সি দল তো এ দলের সঙ্গেই মিলেমিশে আছে। আমার জন্য ডি দলই ভালো। নির্ঝঞ্ঝাট।’
‘নতুন দল। অসুবিধা হচ্ছে না তো?’
‘না। ওরাও তো একসময় এ দল করত।’
‘আচ্ছা শরীফ ভাই, রাখি তাহলে। ভালো থাকবেন।’
‘এক লাখ লিফলেটের খরচের কথা বলেছিলাম।’
‘শরীফ ভাই আপনি কোনো কিছু চাইলে আমি তো না করি না। কিন্তু আমি নিজেই এখন খুব সমস্যায় আছি। আপনি কি কয়েক দিনের জন্য আমাকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়ে দিতে পারবেন? বেশি না, এ ৩০ ডিসেম্বরের পরেই ফিরিয়ে দেবো। পারবেন।’
শরীফ ভাই ‘শরীফ’ মানুষ। তাই দল পাল্টেছেন।
আমি সুর পাল্টালাম।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228