ভালো ফলনেও কপালে চিন্তার ভাজ টমেটো চাষিদের
সিরাজুল ইসলাম, গোয়ালন্দ রাজবাড়ী
🕐 ৯:৩৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০২২
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা পারের এলাকাগুলোতে বিশেষ করে চর ও নিচু অঞ্চলে শীতকালীন প্রতিবছরের ন্যায় এবারো শীতকালীন সবজি টমেটোর ব্যাপক আবাদ হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল ও চাষিদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ও সাম্প্রতিক সময়ের বৃষ্টির প্রভাব কাটিয়ে উঠেছেন গোয়ালন্দের টমেটো চাষিরা। এত কিছুর পরও এই অঞ্চলে টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। এখানকার উৎপাদিত এই টমেটো ব্যাপারীদের মাধ্যমে রাজবাড়ী, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হচ্ছে।
শীতকালীন সবজির মধ্যে জনপ্রিয় সবজির একটি হলো টমেটো। টমেটো রান্নার বহুল ব্যবহৃত একটি অতি প্রয়োজনীয় সবজি। টমেটো অনেক রান্নায় ব্যবহারের পাশাপাশি সব রকমের খাবারে সালাত হিসাবেও ব্যবহার হয়। টমেটোর চাটনি মুখরোচক খাবার হিসাবে অতুলনীয়।
গোয়ালন্দ উপজলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাউয়াজানি গ্রামের বর্গা চাষী আব্দুর রহমান খোলা কাগজ কে বলেন, গতবছর পদ্মা নদীতে নিজের বসতভিটাসহ ফসলী জমি নদীভাঙ্গনের কবলে হারিয়ে অন্যের কাছ থেকে ২৬ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে বসতভিটা গড়ে বসবাস করছি কাউয়াজানি গ্রামে। এ এলাকায় প্রতি বিঘা জমি ২৫ হাজার টাকা দরে মোট ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে ৩ বিঘা জমিতে অনেক আশা নিয়ে টমেটো রোপণ করি। এবারের শীতে অতিরিক্ত কুয়াশা, অসময়ে অতিবৃষ্টিতে টমেটোতে পঁচন ধরায় খরচের টাকাও উঠাতে পারছি না। এবারের টমেটো চাষে লাভ তো দূরের কথা চাষ করতে যে টাকা খরচ করেছি তা উঠানো কষ্টকর।
তিনি হতাশা নিয়ে বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করতে বীজ, সার, শ্রমিকের মজুরি দিয়ে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ২০০ মন টমেটো হওয়ার কথা থাকলেও অতিবৃষ্টি, কুয়াশার কারণে বিঘা প্রতি টমেটো ধরেছে ১০০ মনের মতো। মন প্রতি টমেটোর দাম যাওয়ার কথা ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা বিক্রির কথা থাকলেও এখন দাম যাচ্ছে ৪৫০ টাকা হতে ৫০০ টাকা মন।
কাউয়াজানি চরের টমেটো চাষী বাবু সরদার, রাজ্জাক সরদার, মোসলেম সরদার, কাশেম শেখ বলেন, এবারের কুয়াশা ও বৃষ্টিতে অনেক টমেটোতে পঁচন ধরায় বাজারে তেমন দাম পাচ্ছি না। স্থানীয় বাজারে টমেটোর দাম কমে যাওয়ায় আমরা একটু বেশি দামের আশায় মিরপুরের পাইকারি বাজারে নিয়ে বিক্রি করছি তাতেও তেমন লাভবান হচ্ছি না।
নাসির সরদারের পাড়া আরেক চাষী জমিরউদ্দীন বলেন, এবছর এই এলাকায় ২ বিঘা জমি নিয়ে টমেটো চাষ করেছি। দুই বিঘা জমিতে ৬০ হাজার টাকা ব্যয় করেছি। ২০০ মন টমেটো ধরার কথা থাকলেও ফলন কম হয়েছে। তবে সমানে সমান হবে।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মন্জুরুল আলম খোলা কাগজকে জানান প্রতিবছরের ন্যায় এবারো ফলন ভালো হয়েছে এবং দামও ভালো। তবে অসময়ে বৃষ্টির কারণে আশানুরূপ ফসল ঘরে উঠছে না। তবে উপজেলা পরিষদ থেকে সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করা হয়।