ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সুদিন ফিরছে আউশে

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
🕐 ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২১

সুদিন ফিরছে আউশে

আউশ ধানের সুদিন আবার ফিরে এসেছে টাঙ্গাইলে। জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৫৬ ভাগ বেশি জমিতে হয়েছে আউশের আবাদ। এই ধানের হারানো দিন ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে জেলার কৃষি বিভাগ। বন্যা না থাকায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলনও ভালো হয়েছে বলে দাবি করছেন কৃষকরা।

৭০ দশকের আগে সারা দেশসহ টাঙ্গাইলেও আউশ ছিল ধানের মধ্যে প্রধান। আমন ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে। এ সময় ধারিয়াল, হাসিকলমি, পঙ্খিরাজ, কটকতারাসহ স্থানীয় নানা জাতের আউশ ধান কাটার পর গ্রামের নারীরা বিভিন্ন খাবার তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। ওই ধানের পিঠা, চিঁড়া, মুড়ি, খৈ, পায়েসের স্বাদ ছিল ভিন্ন। তবে ৭০ দশকের পর সেচনির্ভর বোরো আবাদের প্রচলন শুরু হয়।

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বাড়তি মানুষের খাদ্যের জোগান দিতে গিয়ে অধিক উৎপাদনশীল সেচ নির্ভর বোরো ধান চাষে মানুষ ঝুঁকে পড়ে। ফলে পরিবেশবান্ধব ও বৃষ্টি নির্ভর ফসল আউশ ধানের চাষ একেবারেই কমে যায়। কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের নির্দেশনায় ও টাঙ্গাইল কৃষি বিভাগের উদ্যোগে আবারো আউশ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। আউশ ধান আবাদের জন্য কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। সেই হারানো আউশ ধানের সুদিন আবার ফিরে আসছে টাঙ্গাইলে। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের সহায়তায় আধুনিক কলাকৌশল ব্যবহার করে সঠিক নিয়মে জমির পরিচর্যা করে আর বন্যা না থাকায় ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। আউশ ধান নতুন করে আবাদ করে বাড়তি লাভবান হওয়ার আশায় খুশি কৃষকরা।

জেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় আউশ ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৫২ হেক্টর জমিতে। এর বিপরীতে আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪৫২ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে শতকরা ২৫৬ ভাগ বেশি। এ মৌসুমে জেলায় প্রায় ৭ হাজার কৃষকের মধ্যে আউশ ধানের বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চারাবাড়ী এলাকার কৃষক আব্দুল করিম বলেন, আমরা কয়েকজন মিলে এখানে ৪০০-৫০০ শতাংশ জমিতে আউশ ধান আবাদ করেছি। ধান খুব ভালো হয়েছে। পোকা মাকড় খুব কম আক্রমণ করছে। জমি পতিত না রেখে আউশ আবাদে যদি বিঘায় ১০-১৫ মণ ধান পাওয়া যায়, তবে তো সোনায় সোহাগা। এ কারণেই সামনের বছর আউশ আবাদ বেশি করে করব।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) আরিফুর রহমান বলেন, এ বছর আমাদের জেলায় আউশ ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৫২ হেক্টর। তবে আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪৫২ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে। ৩ দশমিক ৮৭ মেট্রিক টন ধান প্রতি হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছে। চালের হিসাবে প্রতি হেক্টরে ২ দশমিক ৫৮ মেট্রিক টন। ফলন খুব ভালো হয়েছে বলে মনে করি আমি।

 
Electronic Paper