ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মিরসরাইয়ে জমজমাট ফলের বেচাকেনা

ইকবাল হোসেন জীবন, মিরসরাই, চট্টগ্রাম
🕐 ১২:২৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২১

মিরসরাইয়ে জমজমাট ফলের বেচাকেনা

মৌসুমি ফলের জমজমাট বেচাকেনা চলছে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী করেরহাট বাজারে। ভৌগোলিকভাবে পাহাড়ি জনপদে সমৃদ্ধতার কারণে মৌসুমি ফল আম, কাঁঠাল, জাম, আনারস, লেবু, পেয়ারার জন্য এই বাজারের সুখ্যাতি ব্যাপক। এবারও সকল ফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। মিরসরাইয়ের সর্ব উত্তরে অবস্থিত এই বাজারে সপ্তাহে দুইদিন রবি ও বুধবার বসে আম-কাঁঠালের বড় হাট।

প্রতি হাটবারে এ বাজারে কয়েক লাখ টাকার ফলের কেনাবেচা হয়। ফেনী, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা আসে ফল ক্রয়ের উদ্দেশ্যে। সড়কপথে যোগাযোগ ও তুলনামূলক কম দামে পাইকারি ক্রয় বিক্রয় হয় বলে করেরহাটে মৌসুমি ফলের হাট জমজমাট থাকে।

উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের বড় একটি অংশ উঁচু-নিচু টিলা আর পাহাড়বেষ্টিত বলে এসব ফল সহজে হয় এ এলাকায়। এর মধ্যে গ্রীষ্মকালীন নানা জাতের ফল চাষা, বাজারজাত ও বিক্রয়ের অন্যতম স্থান হলো এই বাজার। একসময় সীমিত আকারে করেরহাট ও এর আশপাশের এলাকায় আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, জাম্বুরাসহ নানা জাতের মৌসুমি ফল উৎপাদন করা হতো। এখন এসব এলাকার সর্বত্রই অর্থ উপার্জনের কথা ভেবেই বসতবাড়ির আঙিনা, খোলা পতিত জমি, এমনকি বন্দোবস্ত নেওয়া জমিতে গ্রীষ্মকালীন ফল চাষ করা হচ্ছে।

এভাবে করেরহাট এলাকায় বেশ কয়েকটি ব্যক্তি মালিকানাধীন ফলের বাগান গড়ে উঠেছে। এসব বাগানে বাণিজ্যিকভাবে প্রচুর পরিমাণে আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচু, পেয়ারা, পেঁপে, ইত্যাদি চাষাবাদ করে বছরে প্রচুর পরিমাণে আয় করা হয়। করেরহাট ইউনিয়নের ফরেস্ট অফিস, সাইবেনী খিল, ঘেড়ামারা, কালাপানি, বদ্ধ, কয়লাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ফলের চাষ হয়। এসব এলাকায় কয়েকশ’ আম, কাঁঠাল, লেবুসহ বিভিন্ন ফলের বাগান রয়েছে।

সরেজমিনে করেরহাট বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, মধু ফলের মৌসুমে করেরহাট বাজারের চেহারাই বদলে যায়। বাজারের প্রধান সড়কের দুই পাশে চলে আম, জাম, কাঁঠাল, আনারস, জামরুল ও লিচুর খুচরা-পাইকারি বিক্রেতাদের বিকিকিনি। এলাকাটি তখন একটি মিষ্টিমধুর গন্ধে ভরে যায়।

অধিকাংশ সময় বাজারের নির্দিষ্ট স্থানে সংকুলান না হওয়ায় বিক্রেতারা সড়কের ওপরেই ফলে পসরা সাজিয়ে বসে পড়ে। হাটবারের আগের রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে আম, কাঁঠাল, আনারস নিয়ে বিক্রেতারা বাজারে আসতে থাকে। মূলত পাইকারি বিক্রয় বেশি হলেও খুচরা বিক্রয় পরিমাণও কম নয়। পাইকাররা হাটবার ভোর থেকেই স্থানীয় চাষি ও বিক্রেতাদের কাছ থেকেই ফল সংগ্রহ শুরু করে।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাইকাররা তাদের সংগ্রহ করা ফল নিজস্ব পরিবহনে করে বোঝাই করে নিয়ে যায়। এখানকার কাঁঠাল ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে পাইকাররা। এ বাজারে কাঁঠালের বিকিকিনি বেশি হলেও আনারস, লেবুর বিক্রয় উল্লেখ করার মতো।

বাজার পরিচালনা কমিটির সদস্য জাবেদ আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, পুরো উপজেলার মধ্যে মৌসুমি ফলের জন্য বিখ্যাত এ বাজার। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হওয়ায় এ বাজারের প্রায় সব ফলই ফরমালিন তথা বিষমুক্ত।

করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, স্থানীয় ও পাহাড়ি অঞ্চল থেকে কৃষকরা যেন তাদের উৎপাদিত মৌসুমি ফল নির্বিগ্নে বেচা-কেনা করতে পারে এ জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। বাইরের পাইকাররা এখান থেকে বিভিন্ন ফল ক্রয় করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লাসহ অনেক জেলায় নিয়ে যায়।

 
Electronic Paper