নাগেশ্বরীর সম্ভাবনাময় কাউন
নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
🕐 ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ, মে ১৭, ২০২১
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার দুধকুমার এবং গঙ্গাধর নদীর চরাঞ্চলে চাষ হচ্ছে কাউন। এক সময়ের কমদামি এবং কদরহীন ফসলটির বর্তমানে কদর বেড়ে যাওয়ায় দুই তিন বছর থেকে আবার চাষ হচ্ছে উপজেলার বেশ কিছু ইউনিয়নের চরাঞ্চলে। এ মৌসুমে উপজেলার দুধকুমার নদীর চরাঞ্চল বামনডাঙ্গা, বল্লভের খাষ ইউনিয়ন এবং গঙ্গাধর নদীর চরাঞ্চল কচাকাটা ইউনিয়নের কিছু এলাকায় কাউন চাষ হয়েছে। এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে বল্লভের খাষ ইউনিয়নের ফান্দের চর, বেইল্টা পাড়া, কচাকাটা ইউনিয়নের শৈলমারী, ধনিরামপুর, কাইয়ের চর উল্লেখযোগ্য।
কাউন চাষিরা জানান, এই ফসল একসময় গবাদী পশুর খাবার হিসেবে চাষ হলেও এখন শিশু এবং পাখির খাদ্য তৈরিতে এর চাহিদা বেড়েছে। ফলে চরাঞ্চলের পতিত এবং বালুময় জমিতে আবার এর চাষ বেড়েছে। শুকনো মৌসুমের এই ফসল চাষে বিঘে প্রতি ২ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ হয়। পক্ষান্তরে বিঘে প্রতি ৭ থেকে ৮ মণ কাউন উৎপাদন হয়। মণ প্রতি কাউন বিক্রি হয় ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকা। অপরদিকে বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করলে এর দাম বেড়ে যায় দ্বিগুণ। তখন কেজি প্রতি দাম আসে ১শ টাকা।
এদিকে কাউনের চালের পায়েশ সুস্বাদু হওয়ায় চালের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। কেজি প্রতি কাউনের চাল বিক্রি হয় ১ থেকে দেড়শ টাকায়। চাহিদা সম্পন্ন এই ফসল চাষ সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে চরাঞ্চলের জনপদে। কচাকাটা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল মালেক জানান, এবার দুই বিঘা অনাবাদি জমিতে স্বল্প খরচে কাউন বুনেছেন।
আবাদ ভালো হয়েছে, আশানারূপ ফলন পাওয়ার প্রত্যাশা করেন তিনি। বল্লভেরখাষ ইউনিয়নের বেইল্টা পাড়ার কৃষক মাছুম বিল্লাহ জানান, জমিতে একবার হাল চাষ করে কাউনের বীজ ছিটিয়ে দেওয়ার পর একবার নিড়ানি দিয়েছি। এতে আমার খরচ হয়েছে দুই হাজার টাকা। ফলন ভালো পেলে খরচের তুলনায় কয়েক গুণ লাভ পাওয়া যাবে।
নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন জানান, এবার নাগেশ্বরী উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে ১৮ হেক্টর জমিতে দেশি জাতের কাউন আবাদ হয়েছে। খড়া মৌসুমের আবাদযোগ্য এই ফসল চাষ করে চরাঞ্চলের কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।