নকলায় বিএডিসির বীজআলুর ন্যায্যমূল্য দাবি
নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
🕐 ৮:২৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০২১
শেরপুরের নকলা উপজেলায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) বীজআলুর ন্যায্যমূল্যের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করার পাশাপাশি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বিএডিসির চুক্তি ভিত্তিক বীজআলু চাষীরা।
১০ এপ্রিল, শনিবার দুপুরে নকলা উপজেলায় বিএডিসির চুক্তি ভিত্তিক চাষীরা সংবাদ সম্মেলনে উৎপাদন খরচ অনুপাতে ন্যায্যমূল্যের দাবি করেন। এছাড়া কৌশলে আলুচাষীদের নিরুৎসাহী করতে গত বছরের চেয়ে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার পরেও আলুর সরকারিভাবে ক্রয়মূল্য বৃদ্ধি না করে, উল্টো মূল্য কমানোর জন্য দায়ী নীতিনির্ধারকদের পদত্যাগের দাবি করেন তারা।
তারা বলেন, বিগত বছরের উৎপাদন খরচের তুলনায় এ বছর একরপ্রতি বীজআলু উৎপাদন খরচ ৩৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা বেশি হলেও সরকার নির্ধারিত মূল্য কমানো হয়। সরকার নির্ধারিত দামে প্রতি একরে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে আলুচাষীদের।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষক লীগের আহবায়ক আলমগীর আজাদ, যুগ্ম আহবায়ক মন্নাফ খান, বিএডিসি আলুচাষীদের নেতা কামরুজ্জামান, জয়েন উদ্দিন, নূর ইসলম প্রমুখ।
বক্তাদের মধ্যে কামরুজ্জামান জানান, এ বছর প্রতি একরে তাদের ব্যয় হয়েছে এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা থেকে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা। আর প্রতি একর আলু উৎপাদন হয়েছে ৮ হাজার ৫০০ কেজি থেকে ৯ হাজার ৫০০ কেজি। এর মধ্যে বীজআলু উৎপাদন হয়েছে ৬ হাজার কেজি থেকে ৬ হাজার ৫০০ কেজি। এসব বীজআলু সরকারি দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘এ’ গ্রেডের আলু প্রতি কেজি ১৯ টাকা এবং ‘বি’ গ্রেডের প্রতি কেজি ১৬ টাকা। যেখানে গত বছর উৎপাদন ব্যয় এবারের তুলনায় কম থাকলেও দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ‘এ’ গ্রেডের আলু প্রতি কেজি ২৩ টাকা এবং ‘বি’ গ্রেডের প্রতি কেজি ২২ টাকা। এ বছর প্রতি একরে ৩৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা বেশি উৎপাদন ব্যয় হওয়ায় কৃষকরা ‘এ’ গ্রেডের আলু প্রতি কেজি কমপক্ষে ২৮ টাকা এবং ‘বি’ গ্রেডের প্রতি কেজি ২৬ টাকা করার দাবি জানান। তা না হলে কৃষকদের অপূরণীয় লোকসান গুনতে হবে। এতে করে অনেক কৃষক রাস্তায় বসার উপক্রম হবে বলে তারা জানান।
এ সময় আলুচাষী শামীম আহম্মেদ, ছাইদুল হক, জুয়েল মিয়াসহ উপজেলার বিভিন্ন ব্লকের আলুচাষীরা উপস্থিত ছিলেন। চাষীরা জানান, গত বছর প্রতি একরে বীজ আলু রোপন করতে হয়েছিল ১৬ মণ থেকে ১৮ মণ। কিন্তু এ বছর একরপ্রতি বীজ আলু রোপন করতে হয়েছে ৩০ মণ। গতবছর চাষীদের কাছে বীজ আলুর দাম নেওয়া হয়েছিল ভিত্তি বীজ ৩৪ টাকা থেকে ৩৬ টাকা এবং প্রত্যায়িত বীজের দাম নেওয়া হয়েছিল ২৭ টাকা থেকে ২৮ টাকা প্রতি কেজি। আর এ বছর অন্যান্য ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতি কেজি ভিত্তি বীজ ৪০ টাকা থেকে ৪১ টাকা এবং প্রত্যায়িত বীজের দাম ধরা হয়েছে ৩৯ টাকা থেকে ৪০ টাকা। এতে বীজ আলু বাবদ বাড়তি ব্যয়ের পাশাপাশি শ্রমিক মজুরি বেড়েছে প্রতি জনে ৪০ টাকা থেকে ৬০ টাকা করে এবং জমি বন্ধকে ব্যয় বেড়েছে প্রতি একরে ২ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা। এ হিসাবে প্রতি একর জমিতে বিএডিসির বীজআলু চাষ করতে চাষীদের ব্যয় বেড়েছে প্রতি একরে ৩৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা। তাই আলুর সরকারিভাবে ক্রয়মূল্য পুনর্নির্ধারণ না করলে আগামীতে আলুচাষী খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে তার মন্তব্য করেন। এমতাবস্থায় সরকারের নীতিনির্ধারকসহ বিএডিসি কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন আলুচাষীসহ সংশ্লিষ্টরা।