ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

তিস্তার চরে মরিচের সমারোহ

মোস্তাক আহমেদ, কাউনিয়া (রংপুর)
🕐 ৭:২৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২১

তিস্তার চরে মরিচের সমারোহ

রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তার চরে এখন মরিচের সমারোহ। ফলন ভালো, দামও বেশি। তাই কৃষক-কৃষাণীর ঘরে হাসির ঝিলিক। ওরা বলছে মরিচ চাষ হামার ভাগ্য বদলে দিছে। এখন হামরা ভাগ্যজয়ী মানুষ। এলা আর হামার খাওয়া পরার অভাব নেই, হাতে কোঁচেও থাকে টাকার তোড়া। কাঁচা পাকা আর শুকনা মরিচ, হামরা সারা বছরেই মরিচ বেচাই, মরিচেই হামরা এলা ধনী।

 

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার তিস্তা নদীবেষ্টিত ২৯টি চর এখন মরিচ খেতের ঘন সবুজে ঘেরা। চারিদিকে জমিগুলোতে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের কাঁচা পাকা মরিচ। গত তিন বছর ধরে কাঁচা মরিচের ভালো দাম পেয়েছে কৃষকরা। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে কাউনিয়ার মরিচ যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মরিচের ভালো ফলন হয়েছে বলে জানায় কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, গত বছরের চেয়ে এ বছর ৮৫ হেক্টর বেশি জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪১০ হেক্টর কিন্তু চাষ হয়েছে ৪৪৫ হেক্টর জমিতে। অধিকাংশ মরিচ খেতই হলো তিস্তা নদীর জেগে ওঠা চরে।

সরেজমিনে উপজেলার তিস্তা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, চরনাজির দহ, পল্লীমারী, চর চতুরা, প্রাণনাথ চর, চর আরাজী, বল্লভবিষু, চরসাব্দী, গোপীডাঙ্গা, চর পাঞ্জরভাঙ্গা, চরগদাই, চর ঢুষমারা, পূর্ব নিজপাড়া, চরগনাই, চর হযরতখাঁ, চর আজমখাঁ, চর রাজীবসহ তিস্তা নদীর কোল ঘেঁষা চরে মরিচের ভালো ফলন হয়েছে। তিস্তার চরাঞ্চলে পলি ও উর্বর দোআঁশ মাটিতে ফলন ভালো ও অধিক দাম পাওয়ায় চাষিরা বেজায় খুশি।

কৃষক সোহরাব হোসেন জানান, বর্তমানে প্রতি কেজি মরিচের দাম একশ টাকা থেকে ১৫০ টাকা হওয়ায় ভালো লাভ হচ্ছে।
তিনি জানান, মুই দেড় দোন (৩৬ শতক) জমিত মরিচ আবাদ করি খরচ হইছে ১৬ হাজার টাকা আর মচির বেচানু ৪৬ হাজার টাকা।

একই কথা জানালেন, বল্লববিষু চরের কৃষক আ. মালেক ও জগদীশ।

কৃষক কোরবান আলী জানান, তাদের খেতের উৎপাদিত মরিচ স্থানীয় হাট-বাজারের চাহিদা মিটিয়ে জেলা শহর থেকে শুরু করে রাজধানী পর্যন্ত রপ্তানি হচ্ছে। উপজেলার ভায়ের হাট, খানসামা হাট, শহীদ বাগ হাট, টেপামধুপুর হাট এবং তপিকল হাট ঘুরে দেখা গেছে অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি দেদারছে কেনাবেচা হচ্ছে মরিচ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল আলম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষকদের সার্বক্ষণিক টেকনিক্যাল পরামর্শ দেওয়ায় চলতি মৌসুমে মরিচের ভালো ফলন হয়েছে। এ ছাড়াও তিস্তার জেগে ওঠা চরের জমিতে প্রচুর পলি পড়ায় এলাকার মাটির প্রকৃতি ও আবহাওয়া মরিচ চাষের জন্য উপযোগী।

 
Electronic Paper