পেঁয়াজের দামে খুশি কৃষক
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
🕐 ৬:৪০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৪, ২০২০
কুয়াশা ভেদ করে শীতের সকালে রাজশাহীর বাঘার পদ্মার চরাঞ্চলের জমিতে পেঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত বেশ কিছু নারী-পুরুষ শ্রমিক। কেউ উঠাচ্ছেন- আবার কেউ বা ছাঁটাই-বাছাই করছেন। উদ্দেশ্য ভালো দাবি বাজারে বিক্রি। এবার হচ্ছেও তাই, ফলে পেঁয়াজের ন্যায্য দাম পেয়ে খুশি চরাঞ্চলের পেঁয়াজ চাষিরা।
সরেজমিনে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টায় বাঘা উপজেলার দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চলে প্রবেশ করলে এ দৃশ্য চোখে পড়ে। কৃষকরা এ বছর পেঁয়াজের বাজারমূল্য ভালো পেয়ে বেজায় খুশি হয়েছেন বলে জানান। গত বছর বন্যার পানি নামতে দেরি হওয়ায় বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসতে সময় লাগে। তারপরেও পেঁয়াজের বাজারমূল্য স্থিতিশীল ছিল। এ কারণে এবার প্রায় সব কৃষকই কম-বেশি পেয়াজ চাষাবাদ করেছেন। এ দিক থেকে এখন পর্যন্ত বাজারমূল্য ভালো পাওয়ায় চাষিরা খোশ আমেজে রয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বাঘা উপজেলায় পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় তিন হাজার হেক্টর। যা অতিক্রম করে চাষাবাদ হয়েছে সাড়ে তিন হাজার হেক্টর। এর মধ্যে অর্ধেক এর বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল উপজেলার দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চলে। সে মোতাবেক চরবাসীদের অনেকেই আগাম পেঁয়াজের চাষ করেছেন। তাদের দেওয়া তথ্য মতে, বাঘার চরাঞ্চলের পেঁয়াজের গুণগতমান ভালো। এ কারণে এখান থেকে প্রতি মৌসুমে বাস এবং ট্রাকযোগে পেঁয়াজ চালন দেওয়া হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
চরাঞ্চলের কৃষক বাবলু দেওয়ান ও আকছেন শিকদার জানান, তারা গত বছর ইচ্ছে থাকার পরেও বন্যার পানি নামতে দেরি হওয়ায় উপযুক্ত জমি না পাওয়ায় খুব বেশি পেঁয়াজ চাষ করতে পারেননি। এ দিক থেকে এবার চরাঞ্চলের অসংখ্য কৃষক অনুকূল আবহাওয়া ও উপযুক্ত মাটি পেয়ে পেঁয়াজ চাষ করেছেন।
তাদের দাবি, গত বছর ভারত থেকে (এলসি) পেঁয়াজ আসায় দেশি পেঁয়াজের দাম পড়ে গিয়েছিল। এবার এখন পর্যন্ত পেঁয়াজের বাজার সন্তোষজনক রয়েছে। এটি যেন চলমান থাকে।
চরাঞ্চলের চকরাজাপুর ইউনিয়নের পেঁয়াজচাষি গোলাম মোস্তফা জানান, তিনি গত বছর অত্র মৌসুমে ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে বাজারমূল্য পেয়েছিলেন ৩৫-৪০ টাকা কেজি। কিন্তু এবার জমি থেকে ৪২ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছেন। এ থেকে তিনিসহ প্রায় সব কৃষকই লাভের মুখ দেখার স¦প্ন দেখছেন।
কৃষক মালেক ও আড়ানীর মুক্তার আলী জানান, তারা প্রতি বছর কম-বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষাবাদ করে থাকেন। বর্তমানে পেঁয়াজের বাজারমূল্য ভালো দেখে তাদের ভালো লাগছে। তাদের মতে, সরকার যদি এখন থেকে পেঁয়াজের বাজার ধরে রাখতে পারে তাহলে সামনের মৌসুমে উৎপাদন বাড়বে।
উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লা সুলতান জানান, এ বছর দেশের সর্বত্রই কম-বেশি পেঁয়াজের চাষ আবাদ হওয়ায় উৎপাদন বেড়ে গেছে। ফলে বাজারমূল্য স্থিতিশীল রয়েছে।