ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ফেনীতে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে

আবদুল্লাহ আল-মামুন, ফেনী
🕐 ৩:৪৮ অপরাহ্ণ, মে ০৮, ২০১৮

ফেনীতে সম্প্রতি কালবৈশাখী ঝড়সহ ভারী বৃষ্টিপাত হয়ে গেছে। তবে আশার কথা এতে জেলায় চলতি মৌসুমের বোরো আবাদে তেমন কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। কৃষক ও কৃষিসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ বছর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। ইতোমধ্যে বোরো ঘরে তুলতে শুরু করেছেন কৃষক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মৌসুমের শুরুতে জেলায় ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি বিভাগ। তবে কৃষি কর্মকর্তাদের উৎসাহে স্থানীয় কৃষকরা ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করেন। একইসঙ্গে অনুকূল আবহাওয়া ও সময়মতো কীটনাশক ব্যবহার করতে পারায় ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকরা। এদিকে চলতি বোরো মৌসুমে অনেক অনাবাদি ও পতিত জমিতে চাষাবাদ করতে পারায় জেলার ছয়টি উপজেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। এমনটাই মনে করছে কৃষি বিভাগ। এ ছাড়া বাজারে ধান ও চালের দাম ভালো থাকায় চাষাবাদে কৃষকের আগ্রহও বেড়েছে।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলায় আট হাজার ২৭০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার স্থলে ৯ হাজার ৪৫ হেক্টর আবাদ হয়েছে। ছাগলনাইয়া উপজেলায় পাঁচ হাজার ১৭৫ হেক্টরের স্থলে পাঁচ হাজার ৩৭০ হেক্টর, ফুলগাজীতে চার হাজার ৪৭৫ হেক্টরের স্থলে চার হাজার ৫৭০ হেক্টর, দাগনভূঞায় ছয় হাজার ২৫৬ হেক্টরের স্থলে ছয় হাজার ৬২৫ হেক্টর, পরশুরামে তিন হাজার ২২০ হেক্টরের স্থলে তিন হাজার ৩২০ হেক্টর এবং সোনাগাজীতে ৭৭৫ হেক্টরের স্থলে এক হাজার ১০৫ হেক্টরে আবাদ হয়েছে।
তথ্যমতে, জেলায় এবার ২৮ হাজার ১৪৪ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, যা পরে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ৩০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
পরশুরাম উপজেলার কৃষক জহিরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন আমার সাত বিঘা জমি অনাবাদি ছিল। কিছুদিন আগে কৃষি কর্মকর্তারা এসে আমাকে পরামর্শ দিলে আমি ওই জমিতে ধান চাষ শুরু করি। এখন আমার ক্ষেত সবুজে ভরে গেছে। আশা করি ফলনও ভালো হবে। আমি খুশি। বাকিটা ওপরওয়ালার ইচ্ছা।
ফেনী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু নঈম মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন জানান, বছরের পর বছর অনাবাদি পড়ে থাকা অনেক জমিও এবার বোরো আবাদের আওতায় এসেছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকা এবং প্রয়োজনীয় কীটনাশক সরবরাহে কোনো জটিলতা না থাকায় কৃষকরা আবাদে মনোযোগী হয়েছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। আশা করি বোরোর বাম্পার ফলন অতীতের অনেক রেকর্ড ভঙ্গ করবে।
ফেনী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেদ কামাল বলেন, বোরো মৌসুমের শুরু থেকেই ফেনীতে মাঠপর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তৎপরতায় জেলার অনেক পতিত জমিতে চাষাবাদ করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ফেনীতে ভারী বৃষ্টি হলেও পুরো জেলার চলতি মৌসুমে বোরো আবাদে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। এ বছর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পারলে জেলার উৎপাদন পরিসংখ্যান আরও সমৃদ্ধ হবে। এদিকে কৃষকরা বলছেন, আগামীর সময়টায় যদি সবকিছু পূর্বের মতো সহায়ক থাকে তবে এবারের বোরো ফলন সবার মুখে হাসি ফুটাবে। তারা অনেকটা সচ্ছল জীবনে যাবে। এমনকি জেলায় বহুদিনের কৃষকের অভাব অনেকটা কমে আসবে। এর মাঝেই অনেক কৃষক প্রকৃতির রুদ্রমূর্তিকে ভয় করছেন। তারা চলতি বৈশাখের ঝড়কে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। আরও এগিয়ে ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে তাদের ভয় বেশি। তবুও তারা স্বপ্ন ও সম্ভাবনা দেখছেন নিরাপদে বোরোর ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। সুখের সময় বইবে তাদের। এমনটাই যেন হয়।

 
Electronic Paper