ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

খেতেই নতুন আলু কেজিপ্রতি ৭০ টাকায়

মোশাররফ হোসেন, নীলফামারী
🕐 ৬:০৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৮, ২০২০

চড়া আলুর বাজারে আগাম নতুন আলুর সুখবর এনেছেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষক। ইতোমধ্যে আলু তারা বাজারজাত শুরু করেছেন। চড়া বাজারে আলুর দাম পেয়ে খুশি তারা।

গত শুক্রবার ওই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে আলু খেত। এরই মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কৃষক তাদের আগাম আলু তুলতে শুরু করেছেন।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ওই আলু ৬৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে তাদের খেত থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকে অধিক লাভের আশায় তাদের আলু ট্রাকযোগে নিয়ে যাচ্ছেন সরাসরি ঢাকার কারওয়ান বাজারে।

এসময় কথা বললে উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের দুরাকুটি গ্রামের কৃষক আলম হোসেন বলেন, আমি এবছর তিন বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। এর মধ্যে দেড় বিঘায় লাগানো ছিল আগাম জাতের আলু। ৩০ সেপ্টেম্বর আলু লাগানোর পর প্রায় ৫৬ দিনের মাথায় আলু তুললাম। আলু হয়েছে ১৮ বস্তা। ফলন কিছুটা কম হলেও দাম ভালো পাওয়ার আশায় তুলেছি। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা খেত থেকে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে আলু কিনছেন। তিনি আরও বলেন, ওই দামে বিক্রি হওয়ায় সব খরচ বাদে আমার লাভ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা।

একই গ্রামের আলুচাষি শামিম হোসেন বলেন, আমি ১৮ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। এর মধ্যে আগাম জাতের আলু আছে ৬ বিঘা জমিতে। ওই ৬ বিঘার মধ্যে ২ বিঘায় আলু তুলে ২৬ বস্তা আলু পেয়েছি। এই আলু স্থানীয় বাজারে দাম কম হওয়ায় ট্রাকযোগে আজই ঢাকায় নিয়ে গিয়ে গত শুক্রবার আমরা তিনজন কৃষকের ৬৪ বস্তা আলু একত্রিত করে ঢাকার কারওয়ান বাজারের আড়তে নিয়ে আসি। সেখানে ৮০ টাকা কেজি দরে আমার ২৬ বস্তা আলু এক লাখ ৩২ হাজার টাকায় বিক্রি করি। একই ট্রাকে আসা প্রতিবেশি মেহেরুল হকের (৩০) ২০ বস্তা আলু এক লাখ ২০ হাজার টাকা এবং আলম হোসেনের ১৮ বস্তা আলু এক লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। ট্রাক ভাড়া দিতে হয়েছে ১২ হাজার টাকা।

আলু ব্যবসায়ী আবু সুফিয়ান বলেন, ‘আমরা প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এলাকার কৃষকদের কাছে আলু কিনে ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠাচ্ছি। আমাদের ট্রাক যাচ্ছে ঢাকার কারওয়ান বাজার, মাদারীপুর ও কুমিল্লার নিমসা বাজারে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র মতে, জেলায় কার্ডিনাল, ডায়মন্ড, এক্সটাটিক্স, পেট্রনিক, রোমান, বারী ১, বারী ১০, গ্রানোলা, সাগিটা ৭ এবং স্থানীয় জাতের সাইটা, লাল পাটনাই, লাল পাখরি, শিল বিলাতি, ঝাউ বিলাতিসহ বিভিন্ন জাতের আলু চাষ হয়। এখন সাগিটা ৭ জাতের আলু উঠতে শুরু করেছে। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আলু রোপণের কাজ চলবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, এ বছর জেলায় প্রায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ১৬ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলু রোপণ হয়েছে সাত হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে। প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে আগাম আলু ওঠা শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, বাজারে দাম বেশি থাকায় লাভের আশায় অনেকে আলুর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই আলু তুলছেন। ওই জমিতে তারা আবারও আলু লাগাচ্ছেন। বর্তমান বাজার দরে আলু বিক্রি করে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন।

 

 
Electronic Paper