ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শ্রীমঙ্গলে বেগুনি পাতার ধান

তোফায়েল পাপ্পু, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
🕐 ৮:৫৫ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক কৃষক প্রথমবারের মতো চাষ করেছেন বেগুনি পাতার ধান। এতে করে ব্যাপক সাড়া পড়েছে স্থানীয়দের মাঝে। কৃষক জানান, যদি ফলন ভালো হয় তবে আগামীতে আরো বেশি জমিতে এই ধানের চাষ করবেন তিনি।

আর কৃষি বিভাগ বলছে, এই ধানের আয়ুষ্কাল একটু কম। যদি ফলন আশানুরূপ হয় তবে সৌখিন কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হবে এই জাতের ধান। 

চারপাশে সবুজ ধানের সমারোহ। মাঝখানে বেগুনি রঙ্গের পাতার ধানখেত। যে কারো প্রথম দর্শনে ধান ভাবতে অবাক লাগবে। চারদিকে বিস্তৃত সবুজ ধানখেতের মধ্যে বেগুনি রঙের ধান গাছ দেখে অনেকে অবাক হচ্ছেন। এমনই বেগুনি পাতার ধান চাষ করেছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোণ ইউনিয়নের তিতপুর গ্রামের কৃষক মো. ছালেহ আহমদ।

তিনি জানালেন, মৌলভীবাজারে মামাতো ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তিনি মামাতো ভাইকে বেগুনি রঙের পাতার এই ধান চাষ করতে দেখেন। এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তিনি এ জাতের ধান চাষের প্রতি আগ্রহী হন। পরে মামাতো ভাইয়ের মাধ্যমে তিনি এ জাতের বীজ সংগ্রহ করে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতা নিয়ে এই ধান চাষ করেছেন। এ জাতের ধানের নাম দিয়েছেন সুবর্ণা এরি ধান। তিনি জানান, জমিতে বীজ রোপণের পর খুব বেশি পরিচর্যা করতে হয়নি। সারও লেগেছে কম।

আশপাশের অনেক মানুষ আসছেন তাদের ধানখেত দেখতে। ফলন বেশি পাওয়ার আশা করছেন তিনি। দ্রুত ফলন দেওয়ায় এই জাতের ধানে রোগ বা পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়। গাছ শক্ত হওয়ায় ঝড়-বৃষ্টিতেও হেলে পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে। শৌখিন কৃষকরা এই জাতের ধান চাষ করতে পারেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, নতুন চাষ শুরু হওয়া এ ধানের নাম পার্পল লিফ রাইস। দেশে সর্বপ্রথম এ জাতের ধানের আবাদ শুরু হয়েছিল গাইবান্ধায়। সৌন্দর্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ধান। ধানের গায়ের রং সোনালি ও চালের রং বেগুনি। উফশী জাতের এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেকটাই কম হয়। রোপণ থেকে ধান পাকতে সময় লাগে ১৪৫-১৫৫ দিন।

অন্য জাতের ধানের চেয়ে এ ধানের গোছা প্রতি কুশির পরিমাণ বেশি থাকায় একর প্রতি ফলনও বেশ ভালো। একর প্রতি ফলন ৫৫ থেকে ৬০ মণ হয়ে থাকে। অন্য সব ধানের তুলনায় এ ধান মোটা, তবে পুষ্টিগুণ অনেক। এ চালের ভাত খেতেও সুস্বাদু।

আশিদ্রোণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রনেন্দ্র প্রসাদ বর্ধন জহর বলেন, ছালেহ আহমদ প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক এ ধান চাষ করেছেন। ধানখেতটি নিজে পর্যবেক্ষণ করছি। গাছের আকার-আকৃতি বেশ ভালো দেখা যাচ্ছে। আশা করছি, ফলন ভালো হবে। সেই সঙ্গে আগামীতে আশপাশ এলাকায় এই ধানের চাষ বৃদ্ধি পাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন সুইটি বলেন, বেগুনি রঙের পাতার এই ধান বিদেশি নয়। এটা আমাদের দেশি জাতের ধান। আগে অন্যান্য জেলায় চাষ হয়েছে, এবার প্রথমবারের মতো শ্রীমঙ্গলে চাষ হচ্ছে। একজন চাষি পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছেন। ফলন ভালো হলে উৎপাদিত ধানগুলো বীজ আকারে রাখা হবে।

ধানখেতটি নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এখন এর ফলন কী রকম হবে, তা জানতে ধান কাটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে এই ধান বোরো মৌসুমের জাত।

 
Electronic Paper