আশা জাগাচ্ছে ‘বিউটি টমেটো’
এইচএম আলমগীর কবির, সিরাজগঞ্জ
🕐 ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০২, ২০২০
সিরাজগঞ্জে এবারই প্রথম হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে বিউটি টমেটো চাষ শুরু হয়েছে। ২ হাজার স্কয়ার ফিট গ্রিন রুমের ভেতরে সারি সারি লাগানো হয়েছে এই বিউটি টমেটোর চারা। ইতোমধ্যে ফুলও এসেছে। কয়দিন পর ফল ধরবে। দু’জন কর্মী দিয়ে গাছগুলো পরিচর্যা করা হচ্ছে। কিন্তু কোনো মাটির চিহ্ন নেই! মাটি ছাড়া কেবল কোকোপিট ও পানিতে জন্মাচ্ছে এ সবজির গাছ। পানির পাশাপাশি সারিতে নারিকেলের ছোবড়ার গুঁড়োতে হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে কোকোপিট দিয়ে চাষ হচ্ছে বিউটি টমেটো।
সরেজমিনে গিয়ে সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের শাহানগাছা এলাকায় ফার্মডেক্স এগ্রোতে উন্নত জাতের বিউটি টমেটো চাষের দৃশ্য চোখে পড়ে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে জাহিদুল ইসলাম মিলন (৩৫) নামের এক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে ১ একর জমিতে গড়ে তোলেন এই ফার্মডেক্স এগ্রো।
দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় চলতি মৌসুমে ২ হাজার স্কয়ারফিট গ্রিন হাউসের মধ্যে হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে থাইল্যান্ডের হানিডিউ তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় প্রচেষ্টা চলছে বিউটি টমেটোর চাষ। এবারও সফল হবেন বলে আশা করছেন তিনি।
মাটিবিহীন এ চাষ পদ্ধতি এখন এলাকার মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তাই প্রতিদিনই মিলনের কাছে মানুষ পরামর্শ নিতে আসে। এ পদ্ধতিতে বাড়ির বারান্দা, ছাদ এমনকি উঠানে প্লাস্টিকের পট বা পলির টানেলে অধিক শস্য চাষ করে পারিবারিক চাহিদার অনেকাংশই পূরণ করা সম্ভব হবে।
সিরাজগঞ্জে ফার্মডেক্স এগ্রোর স্বত্বাধিকারী তরুণ উদ্যোক্তা জাহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, শিক্ষাজীবন থেকেই কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছি। মেরিন ইনস্টিটিউট থেকে ২০০১ সালে আইএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পাস করে চাকরি না করে নিজেই উদ্যোক্তা হয়েছি। ২ হাজার স্কয়ার ফিট গ্রিন হাউসে ৬৪০টি বিউটি টমেটোর চারা লাগানো হয়েছে। এতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ৬৪০টি গাছ থেকে সপ্তাহে ৩০০ কেজি টমেটো পাওয়া যেতে পারে। তাতে খরচ শেষে প্রায় আড়াই লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছি।
দেড় মাস হলো টমেটোর চারা লাগানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ফুল ধরেছে। আর ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যেই ফল আসতে শুরু করবে। বিউটি টমেটো ছাড়াও ফার্মডেক্স এগ্রো থেকে আগামীতে লাউ, কাঁচামরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা, খিরা, ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি, গাঁদা, গোলাপ, অর্কিড উৎপাদনে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন জাহিদুল ইসলাম মিলন।
তিনি আরও জানান, আমাকে দেখে এলাকার অনেকেই এমন প্রকল্প করতে আগ্রহী হচ্ছেন। আর এ ধরনের উদ্যোক্তাদের আগ্রহী করতে সরকার ইতোধ্যেই চার শতাংশ হারে ঋণের ঘোষণা দিয়েছে। তবে ঋণ ছাড়াও ফসল উৎপাদনে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ কৃষির আওতায় আনাসহ আমদানি করা পণ্যের ভ্যাট কমানোর জন্য সরকারের সহযোগিতা চান এই তরুণ উদ্যোক্তা।