সাম্মাম এখন আত্রাইয়ে
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই, নওগাঁ
🕐 ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ, জুন ২২, ২০২০
‘সাম্মাম’ সৌদি জাতের নতুন ফল। আর এই ফল প্রথমবারের মতো উৎপাদন করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মিরাপুর গ্রামের সফল কৃষক রেজাউল ইসলাম। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে উৎপাদিত ফলটি চাষাবাদ হচ্ছে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মিরাপুর এলাকায়।
সৌদি থেকে বীজ সংগ্রহ করে দেড় বিঘা পতিত জমিতে দুই জাতের সাম্মাম চাষ করে প্রায় এক টন ফল উৎপাদন করেছেন তিনি। এক জাতের সাম্মামের বাহিরের অংশ সবুজ আর ভেতরে লাল এবং আরেক জাতের সাম্মামের বাহিরের অংশ হলুদ আর ভেতরের অংশ লাল। তবে দুটি ফলই খেতে মিষ্টি, সুস্বাদু ও সুগন্ধযুক্ত।
রেজাউল ইসলামের রহস্য ঘেরা এই নতুন জাতের রসালো ফল উৎপাদনের খবরে প্রতিদিন তার ক্ষেত দেখতে আসছেন আশপাশের কৃষকরা। কেউ কেউ আগামীতে নতুন জাতের এই রসালো ফল উৎপাদনের জন্য পরামর্শও নিচ্ছেন রেজাউল ইসলামের কাছ থেকে।
সৌদি আরব থেকে বীজ সংগ্রহ করে আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের মিরাপুর এলাকায় পতিত দেড় বিঘা জমিতে তরমুজ জাতীয় দুই ধরনের সাম্মাম বীজ বপন করেন রেজাউল ইসলাম। দেড় মাসের মধ্যেই ফল আসতে শুরু করে। তিন মাসের মধ্যেই পরিপক্ক হয় সাম্মাম ফল। এ ফলটি এলাকায় নতুন, খেতে খুবই মিষ্টি এবং রসালো হওয়ায় অনেকেই কিনছেন শখের বশবর্তী হয়ে।
এ ব্যাপারে সফল ও সৌখিন কৃষক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘সাম্মাম’ ফলের তেমন একটা রোগবালাই নেই, গাছে খুব সামান্য সার ও কীটনাশক দিতে হয়। পতিত দেড় বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো সাম্মাম চাষ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছেন। প্রায় এক টন ফল উৎপাদন হয়েছে। একেকটি সাম্মাম ফল ২ থেকে আড়াই কেজি ওজন হয়। প্রতি কেজি সাম্মাম পাইকারি দেড়শ’ এবং খুচরা ২ থেকে আড়াইশ’ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি।
এ ব্যাপারে রেজাউল ইসলামের ছেলে সোহানুর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, পড়াশোনার ফাঁকে বাবার কৃষিকাজে সহায়তা করছেন তিনি। তরমুজ জাতের সাম্মাম ফল উৎপাদনে তেমন কোন বেগ পেতে হয়নি। বীজ রোপণ থেকে পরিচর্যার ওপর গুরুত্ব দিতে হয়েছে। এছাড়া সময় মতো জৈব সার দেওয়া হয়। এভাবে তিন মাস যেতে না যেতেই সাম্মাম পরিপক্ক ফলে রূপ নেয়। এই ফলের বেশ চাহিদা রয়েছে। নতুন জাতের এই ফল চাষ করলে সবাই লাভবান হবে বলে তিনি মনে করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কে এম কাউছার হোসেন বলেন, রেজাউল ইসলাম একজন আদর্শ কৃষক। সে সবসময় নতুন নতুন কৃষিতে আগ্রহী। ‘সাম্মাম’ তরমুজের মতো অনেকটা সংকর জাতের, এই ফল গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। ফলনও বেশ ভালো।
খেতে সুস্বাদু এই ফলের বেশ চাহিদা রয়েছে। এগুলো বিক্রি করে সে লাভবান হবে। তার দেখাদেখি আশপাশের অনেকেই আগামীতে সাম্মাম চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা কাউছার হোসেন।