ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ফসলের মাঠ, ছোট যমুনা নদী

পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
🕐 ৮:৪০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৮, ২০২০

জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনার নদীর বুকে সুবজের সমারোহ। শোভা পাচ্ছে নানান ফসলি আবাদ। দমদমার কোল ঘেঁষে বয়ে চলা এক সময়ের প্রবাহমান নদীটি এখন মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। ভরা যৌবন আর নেই। ফলে প্রভাব পড়েছে উপজেলা কৃষি জমিসহ মানুষের জীবনযাত্রায়। হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ। দীর্ঘদিন থেকে এই নদীতে খনন কাজ হয়নি। চলমান ভাঙনের ফলে পরিবর্তন হয়েছে নদীর গতিপথ। বসতভিটা আবাদি জমি গেছে নদীর গর্ভে। শত শত কৃষক হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত। গৃহহীন হয়েছে অসংখ্য পরিবার।

জানা যায়, নদীটি দু’পাশ ভেঙে প্রশস্ত হয়েছে। পরিধি বেড়েছে ৩ গুন। উঁচু নিচু নদীর বুক। কোথাও ভরাট হয়েছে। আবার কোথাও হাটুজল পানি। নদীর বিশাল চরে দখলের মাধ্যমে চলছে ধান, আখ, ভূট্টা, লতিরাজ, শাক-সবজির আবাদ। মাছ চাষ আর বালু কেনাবেচা।

এখন একটু বৃষ্টিতে ভরে যায় নদীর বুক। পানি বাড়ার ফলে প্লাবিত হয় উপজেলার চারিপাশ। নদীর উপচে পড়া পানিতে প্রতি বছর সৃষ্টি হচ্ছে কৃত্রিম বন্যা। সেসময় হাজার হাজার জমির ফসল যায় পানির নিচে। প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষককুল। দুর্ভোগ বাড়ছে জনজীবনেও। এ সমস্যা দীর্ঘদিনে হলেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই। প্রতি বছরই বন্যা ও অতি বৃষ্টিতে উপজেলার অনেক গ্রাম বন্যা কবলিত হয়। ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হলেও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের।

উত্তরে উৎপত্তি ও দক্ষিণে প্রবাহিত প্রধান এ নদীটি পাঁচবিবিতে দু’ভাগে বিভক্ত করে বয়ে চলেছে। একটা সময় ছিল, যখন বাংলাদেশকে বলা হতো নদী মাতৃক দেশ। এখন সব কিছু বদলে গেছে। সেই নদীও নেই, পানি নেই। নদী শুকিয়ে মাঠ হয়েছে। সেই মাঠে ধূ-ধূ বালুচর। আবার কোথাও চোখ জোড়ানো ফসলের মাঠ। নদীর চিত্রই এখন ভায়াবহ। এক সময় নদীর উপর নির্ভর করে নৌযোগাযোগের মাধ্যমে ব্যবসা বাণিজ্যসহ নানান রকম কাজ চলতো। প্রাচীন এই নদীটি আজ নিস্প্রাণ হয়ে পড়েছে। নদীতে দীর্ঘদিন পানি শূন্যতার ফলে ক্রমশঃ পানির স্থর নিচে নেমে যাচ্ছে। প্রভাব পড়েছে আবাদি জমি গাছপালাসহ জনজীবনে।

নদী সংস্কার না হলে অসময়ে নদীর দুই তীর প্লাবিত হবে। পানি সরবে না। অনেকদিন আটকে থাকবে। এতে ফসলি জমি নষ্ট হবে। সরকারি উদ্যোগে পরিকল্পিতভাবে এই নদী শাসন আর খনন না করলে এক সময় মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে এই নদী। আগাম বন্যা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন উপজেলাবাসী।

 

 
Electronic Paper