ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সাগর কলা চাষে ভাগ্য বদল

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
🕐 ৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০

সংসারের অভাব-অনাটন থেকে রেহাই পেতে সাগর কলা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার চাষি রফিক। গত পাঁচ বছর আগে ৫০ শতাংশ জমি ভাড়া নিয়ে সাগর কলার চাষ শুরু করেন তিনি। এ সময়ের মধ্যে কঠোর পরিশ্রম, সততা আর মেধা কাজে লাগিয়ে স্বাবলম্বী হন তিনি।

 

রফিকের আর্থিক সচ্ছলতা দেখে তাকে অনুসরণ করে উপজেলার আশে-পাশের আরও বেশ কয়েকজন কলাচাষে ঝুঁকেছেন। অন্য যে কোনো ফসলের চেয়ে কলাচাষে দ্রুত লাভবান হওয়ায় সাটুরিয়া উপজেলায় কলার চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

কলা চাষিরা বলছেন, দুই থেকে তিন ফুট লম্বা কলা গাছের চারা লাগানোর অল্প দিনেই ফল পাওয়া যায়। সাগর কলার চারা একবার রোপণ করলে পুনরায় তা আর রোপণ করতে হয় না। গাছের কলা এক বার পূর্ণাঙ্গ বয়স হলে কেটে ফেলার কিছুদিন পর ওই গাছের গোড়া থেকে নতুন চারা জন্মায়।কলার বাগান।

কলাচাষি রফিক মিয়া বলেন, যে জমিতে বৃষ্টি বা বন্যার পানি আটকে থাকে না এমন জমি কলা চাষের জন্য উপযোগী। এক বিঘা জমিতে প্রায় ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ কলার চারা রোপণ করা যায়। প্রতি বিঘায় কলা চাষে খরচ হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। এক বিঘায় চারা রোপণের কয়েক মাস পর প্রায় ৮০ থেকে এক লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছি।

তিনি বলেন, সাগর কলা বিক্রি করে যা আয় হয় তা আমার সংসারের ব্যয় ও ছেলে-মেয়ের পড়ালেখার পেছনে খরচ করি। আমার কলা চাষ করা দেখে আশে পাশের অনেকেই সাগর কলা চাষে ঝুঁকেছেন বলেও জানান চাষি রফিক।

অপর কলা চাষি নকুল সরকার বলেন, রফিক ভাইকে অনুসরণ করে আমি পাঁচ বিঘা জমিতে সাগর কলাসহ কয়েকটি জাতের কলার চাষ করেছি। অন্য ফসল বিক্রিতে কিছু ঝামেলা থাকে। কিন্তু কলা বিক্রিতে কোনো ঝামেলা নেই। খুচরা পাইকাররা জমি থেকেই কলা কেটে নিয়ে যান। কলার বাগান। এক কাঁদি চাপা কলা (স্থানীয় নাম ঘাউর) ১৫০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। সবরি কলার কাঁদি ৪০০-৫০০ টাকা, সাগর ও রঙ্গিন মেহের সাগর কলা কাঁদি পাইকারি বিক্রি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা বিক্রি হয়।

স্থানীয় পাইকার রজ্জব আলী বলেন, আমাদের জেলার মাটি কলা উৎপাদনের জন্য ভালো। সারাদেশে মানিকগঞ্জের সাগর কলা, সবরি কলা, চাপা কলার কদর রয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় মানিকগঞ্জের কলা বিক্রি হয়ে থাকে। মানিকগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রতি দিন ট্রাক যোগে দেশের বিভিন্ন জেলায় কাঁচা কলা পাঠানো হয়।

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খলিলুর রহমান বলেন, কলার আবাদ করে কামতা এলাকার চাষি রফিকের স্বাবলম্বী হওয়া দেখে স্থানীয় অনেকেই কলা চাষে এগিয়ে আসছে। আমরা মাঝে-মধ্যে কলা চাষিদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি।

এছাড়া প্রতিনিয়ত কলা চাষিদের খোঁজ-খবর রাখছি ও তাদের সব সময় প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি বলেও জানান কৃষি কর্মকর্তা খলিলুর।

 
Electronic Paper