ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মাঠজুড়ে হলুদের মেলা

সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, দিনাজপুর
🕐 ১০:১৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২০

সরিষার হলুদ ফুলে ভাসছে দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন মাঠ। দৃষ্টিজুড়ে শুধু হলুদ ফুলের মাঠ। জেলার ১৩টি উপজেলায় বিভিন্ন মাঠে এখন চোখজুড়ানো হলুদ রঙের সমারোহ। আর মৌমাছিও এ ফুল থেকে ও ফুলে ব্যস্ত। মৌমাছির গুনগুন শব্দ মাতিয়ে রাখছে প্রকৃতি।

এদিকে শীতের সকালে অথবা পড়ন্ত বিকালে সরিষা মাঠে নিজেকে রাঙিয়ে তুলতে ছবিও তুলছেন অনেকে। হলুদ রঙের মাঝে তোলা ছবিগুলো যেন প্রাণে দোলা দেওয়ার মতো।

চলতি বছর জেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষি। বিভিন্ন গ্রামের সরিষা চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬ থেকে ৭ মণ সরিষা উৎপাদন হবে। চাষে উদ্বুদ্ধ করার কারণে এ বছর জেলায় সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। জেলায় বারি ১৪, বারি ১৫ জাতের সরিষা বেশি আবাদ হয়েছে। শীতের সরিষার তেমন ক্ষতি হয় না।

এ ছাড়াও সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি চাষ করলে ১৫ থেকে ২০ ভাগ ফলন বেড়ে যাবে। আমন ধান কাটার পর জমি চাষ করে এ সরিষার চাষ করা হয়। আবার সরিষা কাটার পর সেই জমিতেই ইরি বোরো আবাদ করা হবে। দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলাতেই সরিষার আবাদ করা হয়। দিনাজপুর জেলায় এ বছর ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ১২ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে এ বছর সরিষা চাষ করা হয়েছে।

সদরের সরিষা চাষি হরিদাস রায় জানান, প্রতিবিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা। প্রতি মণ সরিষা বিক্রি করা যায় দেড় হাজার টাকা করে। প্রতি বিঘাতে ৭ মণ সরিষা উৎপাদন হলে বিঘাপ্রতি সাত হাজার টাকা লাভ করা যায়। এ ছাড়া সরিষা আবাদে তেমন সেচের প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া মাত্র দুই মাস সময়ে সরিষা আবাদ করা যায়। সরিষার বড় শত্রু জাব পোকা।

এবার জাব পোকার আক্রমণ না থাকার কারণে সরিষার ফলন ভালো হয়েছে। খামারপাড়া ইউনিয়নের ভাণ্ডারদহ গ্রামের সরিষাচাষি আফসার আলী বলেন, নিজের প্রয়োজন মেটাতে প্রতি বছর এক বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। এবার দুই বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। আশা করছি অন্য বছরের তুলনায় এবার সরিষার ফলন ভালো হবে।

নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার সরিষা বিক্রি করতে পারব। সরিষার তেলের রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। আর সরিষার খৈল জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি করে এবং সরিষার গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া সরিষার আবাদ করলে ওই জমিতে সরিষার পাতা পড়ে। ফলে জমির উর্বরতা বাড়ে।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক মো. তৌহিদুল ইকবাল জানান, কৃষি বিভাগ থেকে এ বছর সরিষা চাষিদের উদ্বুদ্ধ করার কারণে জেলায় সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। শীতের সরিষার তেমন ক্ষতি হয় না। এ ছাড়াও সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি চাষ করলে ১৫ থেকে ২০ ভাগ ফলন বেড়ে যায়। রবিশস্য চাষের এবার অনুকূল পরিবেশ ছিল। এমন প্রাকৃতিক পরিবেশ পেলে মানুষ সরিষা আরও বেশি করে আবাদ করবে।

 
Electronic Paper