ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

এআইপি নীতিমালা চালু হচ্ছে কৃষিতে

ধান কেনায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল হব না: কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১২:০০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৩, ২০১৯

সঠিক প্রক্রিয়ায় ধান কেনা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে কৃষকের তালিকা সংগ্রহ করা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, কৃষক যাতে সামনের মৌসুমে ধানের ন্যায্যমূল্য পায় আমরা তা নিশ্চিত করব। ইতোমধ্যে যে ধান কেনা হয়েছে, কৃষকের সেই তালিকা আমরা সংগ্রহ করব। সেই তালিকা আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখব তারা প্রকৃত কৃষক কিনা। এ লক্ষ্যে চিঠি দেওয়া হবে। ধান কেনার ক্ষেত্রে আমরা শুধু খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল হব না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর খামারবাড়ীতে কৃষি তথ্য সার্ভিস মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সংবর্ধনা প্রদান এবং গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি কৃষি তথ্য সার্ভিসের প্রেস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, কৃষি যোগাযোগ ও তথ্য সেবা কেন্দ্র ও এআইএস টিউিব (ডিজিটাল আর্কাইভ), জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি উদ্বোধন ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, শিগগিরই ফিলিপিনে এক লাখ টন চাল রপ্তানি করা হবে। এজন্য একজন ব্যবসায়ী এলসি খুলেছে বলেও জেনেছি। তিনি বলেন, কয়েক বছরের মধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এবার কৃষিতে প্রবৃদ্ধি ৩৪ শতাংশ। কৃষি বিপণন ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, কৃষি বিপণন সংস্থাকে আরও সংস্কার করা হবে। তারা শুধু কাওরান বাজার গিয়ে বাজারদর লিখবে আর তা প্রচার করবে তা হবে না। আন্তর্জাতিক বাজার ও মাঠপর্যায়ে কৃষকের সঙ্গেও তাদের কথা বলতে হবে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, এলিট শ্রেণির মানুষ আগে কৃষিতে আসত না। কৃষি অনেকটা গালিই ছিল। চাষা বলে অবজ্ঞা করা হতো। কৃষির অবস্থা এখন আর আগের মতো নেই। এখন এলিট শ্রেণির মানুষও এই পেশায় নিয়োজিত হচ্ছেন। দেশ খাদ্য উৎপাদনে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধান ও চাল উৎপাদনে আমরা এখন উদ্বৃত্তের তালিকায় আছি। কিন্তু ধানের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। আলু উৎপাদনও বেশি হয়েছে। এ বছর ৩৩ লাখ টন আলু উৎপাদন বেশি হয়েছে। এখন এক বিগা জমিতে ৩০ মন ধানও উৎপাদন হচ্ছে। দানাদার খাদ্য উৎপাদনে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

মন্ত্রী আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় কাজু বাদাম ও কফি চাষ সম্প্রসারণ করা হবে। আমরা ভিয়েতনাম থেকে কফি ও কাজু বাদামের চারা নিয়ে আসব। সেগুলো চাষ করতে সারা দেশে বিতরণ করা হবে। কাজু বাদাম ও কফি চাষের বাস্তব অভিজ্ঞতা নিতে আমরা কয়েকজন কৃষককে ভিয়েতনাম পাঠাব।

বিদেশে বিভিন্ন কৃষি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে দেশে আধুনিক অ্যাক্রিডেটেড ল্যাব স্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে অ্যাক্রিডেটেড ল্যাব নেই। শিগগিরই পূর্বাচলে একটি আধুনিক অ্যাক্রিডেটেড ল্যাব স্থাপন করা হবে। মন্ত্রী বলেন, আগামী বোরোতে বা আমনে কোনোভাবেই যেন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা লক্ষ্য রাখব। যান্ত্রিকীকরণে কৃষকে আরও বেশি প্রণোদনা দেওয়া হবে।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষক পদকপ্রাপ্তদের এআইপি (এগ্রিকালচার ইমপর্টেন্ট পার্সন) কার্ড দেওয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, এই কার্ড ব্যবহার করে সিআইপি কার্ডের মতো বিশেষ কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে। কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক ড. মো নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক হামিদুর রহমান।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার স্বর্ণপদক প্রাপ্ত ৪৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে প্রথমবারের মতো এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার তাগিদ দেন কৃষিমন্ত্রী।

 
Electronic Paper